আজ বৃহস্পতিবার, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কিপটিমে করিস নে, টাকা দে!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট

‘কিপটিমে করিস নে, টাকা দে তোর মঙ্গল হবি’। ‘১শ টাকা দে, সাপের লাইগা খাবার কিনব’। এমনই নানা ধরনের কথাগুলো বলে, নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের চলাচলরত পথচারীদের পথরোধ করে টাকা চাচ্ছিলেন বেদে তরুণীরা। শুধু বঙ্গবন্ধু সড়কই নয়, ওলি-গলিতেও অকথ্য ভাষায় কথা বলে, পথ আগলে পথচারীদের টাকা দিতে বাধ্য করে তারা।

নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রতিদিন সারাবেলায় ছোট ছোট গ্রুপে তারা সাপের ভয় দেখিয়ে কিংবা পথচারী নারী-পুরুষের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে পথরোধ করে বেদে তরুণীরা। টাকা আদায় না করা পর্যন্ত কিছুতেই তারা ছাড়তে চায় না। অবাক করার মতো বিষয় এই যে, তাদেরকে ২-৫ টাকা দিলে তারা কিছুতেই নিতে রাজি হয় না। তারা চেয়েই বসে ১০ টাকা, কোন কোন ক্ষেত্রে তারা এক লাফে ২০ টাকাও চেয়ে বসে। তারা সবচেয়ে বেশি জোড় দাবি জানিয়ে টাকা চায়, যখনই কোন দম্পত্তিকে একত্রে দেখতে পায় অথবা কোলের ছোট্ট শিশুকে নিয়ে যখন মা হেঁটে যায়।

তাদের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে  বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পথচারীদের অশালীন গালিও দেয় এসব বেদেনি। এমন পরিস্থিতিতে বিব্রতকর এবং মানহানির শিকার হতে হয় ব্যস্ত নগরীর পথচারীদের।

বেদেনির দল দেখলেই অনেকেই আতঙ্কে পড়েন। পাশ কেটে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রথমে বেদেনিরা স্বাভাবিক আচরণ করলেও পরে তারা টাকা নিয়েই পথ ছাড়েন। কখনও গায়ে হাত বুলায় বা সাপ গায়ে তুলে দিয়ে ভয় দেখায়, এতে একরকম বাধ্য হয়েই পথচারীরা টাকা দিয়ে নিজেকে মুক্ত করেন।

বেদেনিদের ভাষ্যমতে, ‘এ কাজ ছাড়া কী করুম, আমগরে কে কাজ দিব। কাজের লাইগা গেলে কেউ কেউ ইজ্জতে হাত দেয়। পথে পথে ঘুরি বইলা আমগরে খারাপ মাইয়া মনে করে। আমগর কী পেট নাই? খাওন লাগে না? কেউ কাজ দেয় না, খালি উল্ডা-পাল্ডা কথা কয়।’

বঙ্গবন্ধু সড়কে ভুক্তভোগী এক পথচারী বলেন, মাঝে মাঝেই তারা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আবার কখনও দেখিও না। হঠাৎই সামনে পড়ে যাই, টাকা না দিয়ে উপায় থাকে না।

আকষ্মিকভাবে হঠাৎই দৌঁড়ে কিছু দূর এসে বেদেনিদের কাছ থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি বলেন, তাদের সামনে যাওয়াই ভুল। ৫-১০ টাকা দিলেও মানবে না। পরিসংখ্যান বলছে- ঢাকার সাভার, মুন্সীগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, গাজীপুর, জয়দেবপুর, চট্রগ্রামের হাটহাজারী, মীরসরাই, কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনা, এনায়েতগঞ্জ, চাঁদপুর, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বেদেনিদের প্রাচীন আবাসস্থল। সুনামগঞ্জের সোনাপুর বাস বেদে সমাজের বৃহত্তর একটি অংশ। যাযাবর বলেই এদের জীবন বৈচিত্রময়।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ