আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কষ্টে আছে আইনজীবীরা

সংবাদচর্চা অনলাইনঃ

মামলার চাপ নেই, নেই মক্কেলের আনাগোনা, বন্ধ হয়ে রয়েছে উপার্জনের পথ। ফলে সংসার, কর্মচারী বেতন, চেম্বার ভাড়া দিতে বিপাকে পরেছেন আইনজীবীরা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে কনিষ্ঠ আইনজীবীরা। তাদের অভিযোগ, সীমিত পরিসরে ভার্চুয়াল কোর্ট চললেও বঞ্চিত রয়েছে ৯০ শতাংশ আইনজীবী। এ অবস্থায় ভোগান্তিতে পরেছে বিচারপ্রার্থীরাও।

তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ আদালত খুলে দিতে আন্দোলনে নেমেছে সাধারণ আইনজীবীরা। গত সাপ্তাহে নারায়ণগঞ্জের আদালত পাড়ায় বেশ কয়েকবার সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে তারা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, করোনা পরিস্থিতি ঠেকাতে ভার্চুয়াল কোর্ট তৈরী হয়েছিলো। এই ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার জন্য সাধারণ মানুষ, যারা বিচার প্রার্থী তাদের অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। তিনি বলেন, নিয়মিত কোর্টের ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্ট আইনমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে । প্রস্তাবনা পাশ হলে আইনজীবীদের সমস্যা সমাধান হবে আশা করি।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, সারা বাংলাদেশের সকল অফিস, প্রতিষ্ঠান চলছে শুধুমাত্র কোর্ট ছাড়া। শুধু সীমিত আকারে ভার্চুয়াল কোর্ট চললেও ট্রয়াল মামলাগুলোর প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টি হচ্ছে। নিয়মিত আদালত বন্ধ থাকায় চেক, ফৌজধারী সহ নানা মামলা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ আইনের আশ্রয় গ্রহনের সুযোগ পাচ্ছে না। অপরাধ কিন্তু থেমে নাই । বিচারপ্রার্থীরা বিচার পাচ্ছে না, অপরাধীর প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট নূরুল হুদা বলেন, সবকিছু চলছে তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনো কোর্ট চলবে না? এটা বর্তমানে সকল আইনজীবীদের দাবী, ভার্চুয়াল কোর্ট নয় নিয়মিত কোর্ট পরিচালনা করা।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ পলু বলেন, একজন আইনজীবীর পরিবারের খরচ চালানোর পাশাপাশি নিজের চেম্বার ভাড়া, জুনিয়র আইনজীবী, আইনজীবী সহকারী, সন্তানের লেখাপড়া সহ নানা খরচ রয়েছে। কিন্তু এই ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনায় তারা সেই খরচ মিটাতে হিমশিম খাচ্ছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাকির হোসেন বলেন, ভার্চুয়াল কোর্ট আসলে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরাও বুঝে না, আর বেশিরভাগ আইনজীবীও বুঝে না। তিনি জানান, আইনজীবীরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। আইনজীবী সমিতির বর্তমান কমিটির কোন খোজ নেয় কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান কমিটির কোন খবরই নাই।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট আলী আহম্মদ ভূইয়া বলেন, আইনজীবীরা সরকারি বেতন পায় না। আদালতই তাদের একমাত্র আয়ের পথ। কিন্তু মার্চ মাসের ২৬ তারিখ থেকে কোর্ট বন্ধ থাকায় আমরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কষ্টের মধ্যে আছি। তাদের এই কষ্টের অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে নিয়মিত কোর্ট পরিচালনা প্রয়োজন।

সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাষানী বলেন, বাংলাদেশের মতো এই গরীব দেশে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা করা কষ্টকর। দ্রুত ভার্চুয়াল কোর্ট বন্ধ করে নিয়মিত কোর্ট খোলার দাবী জানান তিনি।

আইনজীবী সমিতির সাবেক আইন ও মানবধিকার বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু বলেন, দীর্ঘদিন আদলত বন্ধ থাকায় সাধারণ আইনজীবীরা মারাত্মক অর্থ কষ্টে আছে। দেওয়ানি আদালত সীমিত থাকায় ভূমি দস্যুরা বহু মানুষকে সম্পত্তি থেকে বেদখল করছে। আত্মসমর্পণ করতে না পেরে ফেরারি জীবন কাটাচ্ছে অনেকে।

এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরে সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করলেও তা সম্ভব হয়নি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ