আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ওরা এখনও অধরা

৩২ জন মাদক বিক্রেতা ও গডফাদারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করেছিলো নারায়ণগঞ্জ পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কে সহযোগিতা করলে ১০ ও ৫ হাজার টাকা পুরস্কার দিবে বলে ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আরও ১৪ মাদক বিক্রেতার তালিকা প্রকাশ করে। এরপর কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও অধিকাংশই রয়ে গেছে অধরা। পুরস্কার ঘোষিত মাদক বিক্রেতারা এখনও মাদক বিক্রির সাথে জড়িত রয়েছে। এদের মধ্যে কারও কারও বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে।

২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে কমিউনিটি পুলিশিং এর সমাবেশে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। সদর থানার ১৬ জন আর ফতুল্লা থানার ১৬ জন মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারের তালিকা প্রকাশ করে পুলিশ প্রশাসন। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আরও ১৪ মাদক বিক্রেতার তালিকা। পুলিশ প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিলো, শুধু এরা নয় আরও মাদক বিক্রেতা ও মাদকের গডফাদার রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের তালিকাও প্রকাশ করা হবে।

সদর থানার ১৬ জনের তালিকায় রয়েছে, ২নং বাবুরাইল এলাকার কালাচান মিয়ার ছেলে বাদশা (৪০), পাইকপাড়া এলাকার মৃত মুরাদ মিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে রুমান (৪৮), ১৯২ নম্বর দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে বাদল ওরফে বাদলা ওরফে মকবুল হোসেন (৫১), সৈয়দপুর আল-আমিন নগরের মৃত খালেক বেপারীর ছেলে জাবেদ বেপারী (৪০),সৈয়দপুর এলাকার শামসুদ্দিনের ছেলে কালা মিয়া ওরফে হামিদ ওরফে কালাই (৩৮), বেপারীপাড়া এলাকার মৃত মনু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রানা (৩৫) র‌্যালি বাগানের মৃত অর্জুন চন্দ্র পালের ছেলে কার্তিক চন্দ্র পাল (২৮), দেওভোগ আখড়া এলাকার মৃত কালাচাঁন মিয়ার ছেলে দিপু (৩৬), ২ নম্বর রেল গেট এলাকার হারুন রশিদের ছেলে সোয়াদ হোসেন ওরফে বান্টি (২৫), পাইকপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদিনের ছেলে মহিউদ্দিন (৩৫), দেওভোগ পানির ট্যাংকি এলাকার মৃত এনায়েত আলির ছেলে আওলাদ (৩২), পাইকপাড়া এলাকার সালাউদ্দিনের ছেলে রাজু আহমেদ (৩৫), দক্ষিণ র‌্যালী বাগানের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ বাদল (৩৭), একই এলাকার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ শেখ ফরিদ (২৭), র‌্যালী বাগানের ওয়াজউদ্দিনের ছেলে সালাউদ্দীন (৩১) এবং শহরের মেট্রো হল সংলগ্ন কুমুদিনী বাগানের মৃত বাবুল মিয়ার ছেলে মাসুদ ওরফে সিআডি মাসুদ।

ফতুল্লা থানা এলাকার ১৬ জন হচ্ছে, দাপা মসজিদ এলাকার মৃত মতলব কাজীর ছেলে রিপন কাজী, দাপা ইদ্রাকপুরের হাবিবুর রহমানের ছেলে মন্টু মিয়া (৪২), একই এলাকার শাহ আলমের স্ত্রী পারভীন ওরফে নাইট পারভীন, খোচপাড়ার মৃত ফজলুল হকের ছেলে টিকি মরা লিটন (৪৫), মাসদাইর গুদারাঘাট এলাকার রফিকুল ইসলাম ভেন্ডারের ছেলে নাদিম (৩০), নাদিমের বোন গোলাম মোস্তফা রনির স্ত্রী পারুল ওরফে পারুলী, মাসদাইরের ফজলুল হকের ছেলে হান্ড্রেড নাসির, মাসদাইরের মজিবরের ছেলে হিটলার (৪৮) , দাপা ইদ্রাকপুরের সাইফুল ইসলামের ছেলে লিটন ওরফে সাইকেল লিটন (৪৮), আব্দুল রশিদ মিস্ত্রির ছেলে মানিক রতন, ফাজিলপুরের সামসুল হকের ছেলে সানি, দাপা মসজিদের ছেলে মতলব কাজির ছেলে সেন্টু কাজি (৩৪), দাপা মসজিদ এলাকার আলী নূর বেপারীর ছেলে উজ্জল, দাপা মসজিদ এলাকার মৃত সেকান্দারের লতিফ (৩৪) এবং দাপা ইদ্রাকপুরের মৃত সামসুল হকের ছেলে লিপু ওরফে ডাকাত লিপু (৩২), রাম নগরের মৃত সাবেদ আলির ছেলে রহিম বাদশা (৪৮)। এরমধ্যে মাসদাইরের হিটলার মারা গেছে বলে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আরও ১৪ মাদক বিক্রেতার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

সূত্রে জানা গেছে, ৩২ জন মাদক বিক্রেতা ও মাদকের গডফাদারের তালিকা প্রকাশের পর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ জানিয়েছিলেন, মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারের সংখ্যা আরও বেশী। এই তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকবে। তবে পুরস্কার ঘোষিত সব মাদক বিক্রেতাকে ধরতেও পারেনি প্রশাসন। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হলেও অধিকাংশই অধরা রয়ে গেছে। কেউ আবার জামিনে মুক্ত হয়ে ফের মাদক ব্যবসার মতো ঘৃণ্য কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম হোসেন বলেছেন, মাদক বিক্রেতাদের তালিকা নিয়মিত আপডেট হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার হয়েছে। মাদক বিক্রেতা ও গডফাদারদের বিষয়ে কোন রকম ছাড় দিবে না পুলিশ।

জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাদকের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সব সময়ে জিরো ট্রলারেন্স। মাদক বিক্রেতাদের ধরতে প্রতিনিয়ম অভিযান করা হয়। মাদক বিক্রেতা ও গডফাদারদের তালিকা হালনাগাদ করা হয়। যারা মাদক বিক্রি করে তাদের ছাড় দিবে না পুলিশ।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ