আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এসি নাকি গ্যাস

সাবিত আল হাসান:

নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লায় বায়তুস সালাহ জামে মসজিদে ঘটা ভয়াবহ বিস্ফোরণের জন্য কোনটি বেশী দায়ী তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। কেউ কেউ বলছেন গ্যাসের লিকেজের কারনেই বিস্ফোরণ ঘটেছে, আবার কেউ বলছেন এসি থেকে সংগঠিত বিস্ফোরণ গ্যাসের সাথে মিলে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা বাড়িয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিস্ফোরণের সূত্রপাত হলো কিভাবে?

সরজমিনে দেখা যায়, গ্যাস পাইপের লিকেজ সবচেয়ে বেশী পরিমান রয়েছে মসজিদের প্রবেশ পথের কলাপসিবল গেটের নিচে। সেখানে বেশ বড় লিকেজ থেকে গ্যাস বুদবুদ আকারে বের হচ্ছিলো। কিন্তু বিস্ফোরণের ভয়াবহতা ছিল ভেতরে। যদি গ্যাস থেকেই বিষ্ফোরনের সূত্রপাত হতো তাহলে প্রধান গেট সংলগ্ন স্থানটিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষয়ক্ষতি হবার কথা।

মসজিদের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, এসি, লাইট, এডজাস্ট ফ্যান, চেয়ার, তার, ঘড়ির বিভিন্ন প্লাস্টিক ও বাহিরের অংশ গলে লেপ্টে রয়েছে। বিস্ফোরণের সুবাদে মসজিদের ভেতরে থাকা গ্লাসের পার্টিশন বাহিরের দিকে বেঁকে রয়েছে। সেসব গ্লাশ ভেঙ্গেও মসজিদের বারান্দায় টুকরো টুকরো হয়ে রয়েছে। বারান্দায় অবস্থিত একটি প্লাস্টিকের সেলফ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি তেমনটা। সেখানে থাকা ৪টি ফ্যানে রয়েছে কেবল পোড়া দাগ।

তবে ভেতরে থাকা প্লাস্টিকের চেয়ার গলে গেছে প্রচন্ড তাপে। ভেতরের জুতার শেলফও তাপে গলে গেছে। ঘড়ির ভেতরে থাকা কাটা গলে থমকে গেছে চিরতরে। মসজিদের মাইক্রোফোন, তার, কিছু খুচরা টাকা গলে আষ্টেপৃষ্টে লেপ্টে রয়েছে। মেঝেতে পড়ে আছে পোড়া লুঙ্গী, জায়নামাজ, টুপি সহ মানুষের চামড়া আর কাপড়ের টুকরো। সিলিং এ ঝুলন্ত লাইট, ফ্যান ভেঙ্গে রয়েছে। বিস্ফোরণের বিভীষিকা যে কতটা ভয়াবহ ছিল তা এক নজর দেখলেই শিউরে উঠে শরীর।

তবে ঠিক কি কারনে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ তা এখনো আন্দাজ করতে পারছেন না কেউই। মূলত গ্যাস জমে বাসা বাড়িতে বিস্ফোরণের অন্যতম কারন চুলায় আগুন ধরাতে গিয়ে দেয়াশলাই জ্বালানো। সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন, যদি গ্যাস থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকে তাহলে আগুনের উৎপত্তি কিভাবে এলো? গ্যাস পাইপের সবচেয়ে বড় লিকেজ মসজিদের প্রধান কলাপসিবল গেইটে। সেখানকার ক্ষয়ক্ষতি ভেতরের তুলনায় কেন কম হলো? একই ভাবে যদি এসি থেকেই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয় তাহলে একসাথে ৬টি এসি বিস্ফোরণের কারন কি? বৈদ্যুতিক গোলযোগ শুধুমাত্র একটি মসজিদের উপর প্রভাব ফেলে দিল?

তবে এটি নিশ্চিত যে, মসজিদের ভেতর এয়ারটাইট অংশ থেকেই বিস্ফোরণের সুত্রপাত ঘটেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধির জন্য গ্যাস যে সবচেয়ে বেশী দায়ী তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু বিস্ফোরণের প্রধান কারন এসি নাকি বৈদ্যুতিক গোলযোগ তা হয়তো তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ