আজ বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

একাট্টা মাস্টার ,দলের বাইরে যাবে না মোল্লা

নবকুমার:
জমে ওঠেছে রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। তফসিল ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা লবিং, তদবির শুরু করে দিয়েছেন। হাটে- ঘাটে,অফিসে চায়ের দোকানে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আলোচনা। ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল মনোনয়ন যুদ্ধ। আবার বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সবচেয়ে বেশি। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার, সাবেক চেয়ারম্যান ও রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, দাউদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে গতকাল দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে আপনি কি এবার নির্বাচন করবেন ? উত্তরে নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, আমি রানিং চেয়ারম্যান । আমি নির্বাচন না করে কোথায় যাব। দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন কি? উত্তরে তিনি বলেন হ্যা। দল যদি মনোনয়ন না দেয় তখন কি করবেন? উত্তরে নুরুল ইসলাম বলেন, আমি নির্বাচন করবই এক কথা। আমার সাথে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফাজ খাঁন কাজ করছে। গতবার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হয়েছি। দল মনোনয়ন না দিলে এবারও করব।
দল থেকে প্রার্থী চূড়ান্তের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি ? উত্তরে তিনি বলেন, আগামী শুক্রবার ( ১৮ সেপ্টেম্বর) কালনী আওয়ামী লীগ অফিসে মিটিং ডাকা হয়েছে । মিটিংয়ে ওয়ার্ড এবং দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভোটারা থাকবে। সেখান থেকে তিনজন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠানো হতে পারে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ,গতবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলো তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা। এবার তাঁকে দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবে। তাঁর ব্যাপারে আমার কথা বলা ঠিক না। আপনি ( সাংবাদিক) তাঁর সাথে কথা বলে দেখতে পারেন।
দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জাল হোসেন মোল্লার সাথে গতকাল যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বুধবার ( ১৬ সেপ্টেম্বর) মনোনয়ন ফরম তুলেছি। আমার দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইব। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব। দল মনোনয়ন না দিলে নির্বাচন করব না। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে আমি যাব না।
এদিকে রূপগঞ্জ থানা বিএনপির একটি সুত্রে জানা গেছে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত বিএনপির সিদ্ধান্ত হয়নি। তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে রূপগঞ্জ থানা বিএনপি।
সুত্রটি আরো জানান ,দলীয় প্রতীক ধানের শীর্ষ দিলে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন,রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফ আহমেদ টুটুল,রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. হেলাল উদ্দিন সরকার, রূপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। তবে সাবেক চেয়ারম্যান শরিফ আহমেদ টুটুল একটু কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে। ক্ষমতাসীন এবং বিরোধী দলের ভোট পেতে তার এই চেষ্টা ।
মঙ্গলবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচনে বিএনপির অংশ গ্রহনের ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড.মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদচর্চাকে বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। দলীয় প্রতীক দিলে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেব। আমাদের তিনজন প্রার্থী মাঠে রয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে আলোচনা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর বুধবার । মনোনয়ন পত্র বাছাই ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার । প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩ অক্টোবর শনিবার। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ৪ অক্টোবর। ভোট গ্রহণ ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার। দাউদপুরে প্রায় ৩৩ হাজার ভোটার রয়েছে। এবারের নির্বাচনে নানা সমীকরণ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে বেলদী এলাকায় দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামীলীগ নেতা সৈয়দ মারফত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দাউদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। সভায় বক্তারা দাউদপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দাবি জানান ।
এছাড়া বাগলা গ্রামে (৫ নং ওয়ার্ড) আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির দুই হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশীর বাড়ি। তারা হলেন আওয়ামী লীগের তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, বিএনপির এড. হেলাল উদ্দিন সরকার। এই দুই নেতা দলীয় মনোনয়ন পেলে খেলা জমবে। তবে একই গ্রামে দুই দল প্রার্থী দেবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ