আজ শুক্রবার, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জে কোন্দলে বিপর্যস্ত বিএনপি। দুইভাগে বিভক্ত হয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করছে তারা । অপরদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে সম্প্রতি কোন্দল বিরাজমান থাকলেও বর্তমানে তাদের একাট্টা হতে দেখা গেছে। পবিত্র মাহে রমজান মাস উপলক্ষে বিভিন্ন দল ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে যেখানে নিজেদের দল গোছাতে ব্যস্ত সেখানে নিজেরাই নিজেদের বিভক্ত করে রেখেছেন বিএনপি বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচিত হন। তবে তারা দীর্ঘ ৬ বছরেও তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি। পরবর্তিতে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে সভাপতি, অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ট করে কমিটি ঘোষণা হবার ৫মাসের মাথায় পূনাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়। অপরদিকে মহানগর কমিটিতে সাবেক এমপি আবুল কালাম সভাপতি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান সহ-সভাপতি, এটিএম কামাল সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করে কমিটি দেওয়া হলেও নিজেদের দ্বন্দ্বে দূরুত্ব বাড়ছে অনেক।
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে যেখানে বিভিন্ন দল, সংগঠন নিজেদের কর্মী নিয়ে একাট্টা হবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সেখানে বিএনপি নিজেদের দ্বন্দ্বের কারনে এখনো এক টেবিলে বসতে পারেন নি। সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ইফতারেও বিভক্ত ছিলো বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা।
সর্বশেষ গত ২৫ মে জেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হয়েছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। কিন্তু এখনো পর্যন্ত মহানগর বিএনপি সকল নেতাকর্মী এক টেবিলে বসতে পারে নাই। সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান নিজে বলয় শক্ত করতে আলাদা ইফতার মাহফিল করলেও মহানগর বিএনপি এখনো পর্যন্ত কোন রূপ কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।
অপর দিকে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতায় নেতায় কোন্দল থাকলেও দুদিন পূবে একাট্টাভাবেই দলীয় কার্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা গেছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। আওয়ামী লীগকে একটি বড় পরিবার বলে সকল অনৈক্য ও ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় আহবান জানিয়েছেন বর্ষীয়ান এ দুই নেতা।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের দ্বিতীয় নির্বাচনের পর থেকে এই দুই নেতা মধ্যে মত বিরোধ সৃষ্টি হয় । তাদের মধ্যে প্রকাশ্যে কথা না বললেও একে অপরের চেহারা দেখতে পারেনি সরাসরি। এমন কি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচীতে এক মঞ্চে বসেনি। সব দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি মন্ত্রী সভা স্থান পাওয়ার পর হাই আনোয়ার কে এক টেবিলে নিয়ে এসেছেন। হাই আনোয়ার গোলাম দস্তগীর গাজীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে ।
সর্বশেষ, সোমবার ২৭ মে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ইফতার ও দোয়া মাহফিলে এক মঞ্চে উপস্থিত হন তারা। হাই আনোয়ারের মধ্যে আনন্দের ঘাটতি ছিলো না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির এখন দু:সময় চলছে। আওয়ামী লীগের মতো এখনই একাট্টা হয়ে এক টেবিলে বসতে না পারলে বিএনপির ধ্বংস অনিবার্য ।
