আজ বুধবার, ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘আসামীদের অন্য মামলায় ফাঁসাতে চায়’

অ.শুভঃ

শহরের দেওভোগের চাঞ্চল্যকর কিশোরী জিসা মনি ধর্ষন ও হত্যার পর লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া, তিন আসামীর আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি, তদন্ত কর্মকর্তার ঘুষ নেয়ার অভিযোগের ঘটনায় পুলিশ দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আসামীর আইনজীবি অভিযোগ, পুলিশ আসামীদের অন্য মামলায় ফাসাঁতে চাইছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অতিদ্রুতই এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হবে।

মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ জায়েদুল আলম জানান, আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া তিন আসামীর পরিবারের কাছ থেকে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহনের ঘটনায় নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩ দিন কার্য দিবসের মধ্যে এই কমিটি প্রতিবেদন জমা দিবেন। পাশপাশি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শামীমকে পরিবর্তন করা হয়েছে। এর আগে জিসা মনি ধর্ষন ও হত্যার পর লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার ঘটনা ও ৫১ দিন পর ফিরে আসা ব্যাপারে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, শহরের দেওভোগ পাক্কারোড এলাকার গার্মেন্ট শ্রমিক জাহাঙ্গীরের ছোট মেয়ে ও পঞ্চম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী জিশা মনি। গত ৪ জুলাই সে নিখোঁজ হয়। ৬ আগস্ট জিসা মনির বাবা জাহাঙ্গীর আলম নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। ৭ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয় কথিত প্রেমিক আব্দুল্লাহ, ও অটো চালক রকিব। ৮ জুলাই রিমান্ডের পর নৌকার মাঝি খলিল কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৯ জুলাই আব্দুল্লাহ, নৌকার মাঝি খলিল ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন। ২৩ আগষ্ট রোববার দুপুরে বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকায় থেকে নিখোঁজ জিসাকে ৫১ দিন পর উদ্ধার করে পুলিশসহ তার পরিবার। জিসা গত দেড় ধরে তার পুরনো প্রেমিক ইকবালের সাথে বন্দরের কুশিয়ারা এলাকার বিয়ে করে ভাড়া বাসায় অববস্থান করছিলো বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, জিসা মনি ৫১ দিন কোথায় ছিলো, কার সাথে ছিলো, কে তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গেছে তা ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের বিচারক আফতাবুজ্জামান জিসামনির জবানবন্দি রেকড করে তার বাবার জিন্মায় মেয়েকে প্রদান করেছেন। কথিত প্রেমিক ইকবালকে হোসনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাচঁদিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরন করলে আদালত আগামী ২৭ আগষ্ট রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্যকরেন।

জিসা মনির বাবার দায়ের করা আসামী আব্দুল্লাহ আইনজীবি রোকন উদ্দিন জানান, পুলিশ তাদের নিজেরদের অপকর্ম ঢাকতে জিসা মনি উদ্ধারের পরও আদালতে এফআরটি প্রদান না করে উল্টো তিন আসামীর ১৬৪ ধারা আদালতে দেয়া জবানবন্দি প্রদানের সুত্র ধরে অন্য মামলায় আসামীদের ফাসাঁনোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এডভোকেট রোকন উদ্দিন বলেন, মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আসামীদের শারিরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করেছেন। পুলিশ আদালতে এফআরটি প্রদান না করলে আমরা ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

রাষ্টপক্ষের আইনজীবি এ্যাভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, মামলা প্রত্যাহারের কোন সুযোগ নেই। ভিকটিম উদ্ধার হয়েছে। বাদি যে মামলা করেছে এবং নতুন যে মামলা হবে এই দুটি মামলা এক সাথে তদন্ত চলবে। তদন্ত শেষ হলেই প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, তিন আসামির স্বজনদের অভিযোগ, তিন আসামীর পরিবারের কাছ থেকে ৪৭ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপ পরির্দশক শামীম আল মামুন। তাদের আরও অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে আসামীদের মারধরের ভয় দেখিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার জন্য বাধ্য করা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ