আজ বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ডিসি-তেজগাঁও হলেন বাংলার সিংহাম !

সংবাদচর্চা রিপোর্ট: নারায়ণগঞ্জের সাবেক সফল  পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) কে উপ-পুলিশ-কমিশনার হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) কে গত ১৪ মে পুলিশ সদর দফতর থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশে বদলি করা হয়। পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) ইতিপূর্বে অত্যন্ত সফলতার সাথে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেছেন।এসপি হারুন অর রশীদ বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল ( বিপিএম) ৩ বার ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) ২ বার পেয়েছেন। তিনি একাধিকবার (৫ বার) ঢাকা রেঞ্জে শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার মনোনীত হয়েছেন

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একমাস আগে নারায়ণগঞ্জের তৎকালীন পুলিশ সুপার জনাব আনিসুর রহমানকে প্রত্যাহার করে নেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) সাহেব নারায়ণগঞ্জের এসপি হিসেবে যোগদান করেন এবং ১১ মাস দায়িত্ব পালন করেন। নারায়ণগঞ্জে ১১ মাসের দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ সহ সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ । হকার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ তার সকল জনবান্ধব পদক্ষেপ নিয়ে তিনি জনগণের নিকট ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। যেকোনো সমস্যার সমাধানের জন্য জনসাধারণ তার কার্যালয়ে সরাসরি গিয়ে তার সাথে কথা বলতেন এবং তিনি সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ অথবা দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে আদেশ দিয়ে সমস্যার সমাধান করে দিতেন। যার ফলস্বরুপ নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) সাহেবের ছবিসহ ব্যানার দেখা যায়, যেখানে তাকে বলিউডি সিনেমার নায়কের সঙ্গে তুলনা করে নারায়ণগঞ্জের জনসাধারণ তাকে উপাধী দেন ‘বাংলার সিংহাম’।

কিন্তু গেল বছরের নভেম্বরের শুরুতে হঠাৎ করেই  জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) সাহেবের বদলির আদেশ আসে। নারায়ণগঞ্জ থেকে তাকে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।   ৭ নভেম্বর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিদায় নেন। এদিন তার বিদায় উপলক্ষে পুলিশ লাইনন্সে সংবর্ধনা আয়োজন করা হয় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। বিদায় অনুষ্ঠানে ‘নিজের সাথে যা হয়েছে তা ষড়যন্ত্র’ দাবি করে বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, “অপরাধী যখন ফেঁসে যায়, মামলা হয়, গ্রেফতার হয় অথবা তদবির করে ব্যর্থ হয় তখন তারা একটা কথাই বলে ‘পুলিশ আমার কাছ থেকে টাকা চেয়েছে’। সম্ভবত পুলিশের উপর দোষ চাপানোর জন্য এটাই সহজ কাজ।” তিনি আরও বলেছিলেন, “আমি অপরাধীর বিরুদ্ধে কাজ করেছি। আইনের স্বার্থে কাজ করেছি। এ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। এটা একটা ষড়যন্ত্র। তদন্ত হলেই আসল সত্য বের হয়ে আসবে।” মনে হয় অবশেষে তার এ বক্তব্যের সত্যতা ফুটে উঠল।

পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) সাহেবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও তার বিরুদ্ধে একটি চক্রের ষড়যন্ত্র প্রমাণিত হয়েছে বলেই বোধ হয় সরকার তাকে আবারো ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের মত  গুরুত্বপূর্ণ জোনে  উপ-পুলিশ-কমিশনার হিসেবে পদায়ন করেছেন ।

নারায়ণগঞ্জ থেকে এসপি হারুণ অর রশীদ বদলী হওয়ার পরপর বিভিন্ন মিডিয়া তাকে নিয়ে সরব হয়ে উঠে।পক্ষে বিপক্ষে চলে নানা সমীকরণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একজন কলামিষ্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী গত ১০ই নভেম্বর, ২০১৯ খ্রিঃ তারিখের  প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় তার কলামে লিখেছিলেন “দেশে যখন দুর্নীতিবিরোধী বিশাল শুদ্ধি অভিযান চলছে, তখন তাকে ব্যর্থ করার জন্য নানা ধরনের রঞ্জিত, অতিরঞ্জিত এবং ভুয়া খবর ছড়ানো হতে পারে। এই ব্যাপারে সরকার এবং মিডিয়াকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জের খবরটি অবশ্য মিডিয়ায় এসেছে, কিন্তু এসপি হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ কতোটা সঠিক তা তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের পর জানা যাবে।” “আর যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় এসপি হারুনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো বানানো এবং সত্য নয়, তাহলে বুঝতে হবে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে যারা বহুদিন যাবত দখলদারিত্ব চালাচ্ছেন এবং সর্বপ্রকার দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের গডফাদার, তাদের কায়েমি স্বার্থে হারুন বিঘ্ন সৃষ্টি করাতেই তাকে স্কেপগোট বানানো হয়েছে।

 

তাই সচেতন মহল মনে করছেন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে যারা বহুদিন যাবত দখলদারিত্ব চালাচ্ছেন এবং সর্বপ্রকার দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের গডফাদার, তাদের কায়েমি স্বার্থে এসপি হারুন বিঘ্ন সৃষ্টি করাতেই এসপি হারুনের বিরুদ্ধে সাজানো হয়েছিল এই ষড়যন্ত্র। তাই তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলেই সরকার হয়ত তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি  জোনের উপ-পুলিশ-কমিশনার হিসেবে পদায়ন করেছেন । যে জোনে অবস্থিত রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, জাতীয় সংসদ ভবন, মাননীয় সংসদ সদস্যগণবৃন্দের আবাসস্থল, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা। সচেতন মহলের প্রত্যাশা নারায়ণগঞ্জ মানুষের আস্থা ও ভালবাসা অর্জনকারী বাংলার সিংহাম খ্যাত এসপি হারুণ তেজগাও জোনেও নারায়ণগঞ্জের মতো সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অর্জন করবেন।

 

 

 

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ