আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হকার ইস্যূতে সংঘর্ষে তিন মাসেও তদন্ত দেখেনি আলোর মুখ

হকার ইস্যূতে

হকার ইস্যূতে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু (বিবি) সড়কের ফুটপাতে হকার বাসনোকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সরকার দলীয় এমপি শামীম ওসমান ও নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনায় ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও তদন্ত কমিটি গঠনের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। এই তদন্ত এখন হিমাগারে রাখা হয়েছে বলেই নারায়ণগঞ্জবাসীর ধারনা। তাই এতোগুলো মানুষ রক্তাক্ত জখম হওয়ার পর যখন একজনকেও গ্রেফতার করা হয় না বা কোন মামলা হয় না, তখন কোথায় আইনের শাসন এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য বলেই অনেকে মনে করেন। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফা সময় বৃদ্ধি করেছেন তদন্ত কমিটি। কিন্তু বার বার সময় নিয়েও অদ্যাবধি প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি তারা। কবে নাগাদ প্রতিবেদন জমা হবে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। ফলে আদৌ তদন্ত প্রতিবেদন জমা হবে না কি তা ডিপ ফ্রিজে চলে যাবে এ নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বলছেন, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে তাদের আরো সময়ের প্রয়োজন।

গত ১৬ জানুয়ারি নগরীর প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভী সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। এতে মেয়র আইভীসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়। সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি অস্ত্র প্রদর্শন করে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসিম উদ্দীন হায়দারকে কমিটির প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান ও র‌্যাব-১১ এর সহকারী পরিচালক এএসপি বাবুল আখতারকে সদস্য করে তিন সদস্যের এই কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা থাকলেও তদন্ত কমিটি অতিরিক্ত ৭দিন সময় নেয়। কিন্তু এরপরেও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করে একাধিকার সময় বৃদ্ধি করা হয়। এভাবে সময় বৃদ্ধি করতে করতে তিন মাস পেরিয়ে যাচ্ছে অথচ তদন্ত সম্পন্ন হচ্ছে না।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জানান, তদন্ত রিপোর্ট হয়নি। অনেক দিন পেরিয়ে গেছে, আরো অনেক দিন লাগবে। কমিটির এসপি সাহেব মোস্তাফিজুর সাহেব ও র‌্যাবের বাবুল সাহেব আছেন, আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি নি। আমরা অনেক কিছু দেখছি, অনেক কিছু খুজতেছি।

১৬ জানুয়ারির সংঘাতের পরদিন ১৭ জানুয়ারি মেয়র আইভীর ছোট ভাই, আত্মীয়, সমর্থকসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অস্ত্র ছিনতাই ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন গণপিটুনীর শিকার সন্ত্রাসী নিয়াজুল।
অপরদিকে, ৫ দিন পর ২২ জানুয়ারি মেয়রকে পরিকল্পিভাবে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নিয়াজুলসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো এক হাজার জনকে আসামী করে নাসিকের আইন কর্মকর্তা জিএমএ সাত্তার সদর মডেল থানায় এজাহার দেন। কিন্তু পুলিশ কোন অভিযোগই মামলা হিসেবে গ্রহন করেনি।তবে সংর্ঘর্ষের ঘটনার ৯ দিন পর ২৫ জানুয়ারি সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অজ্ঞাত ৫ শ’ লোকের বিরুদ্ধে একটা মামলা করে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছেন।