আজ বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুনাম ধরে রেখেছে আড়াইহাজারের বেনারশী পল্লী

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার দুটি গ্রাম। একটি হলো ফতেপুর ইউনিয়নের লতব্দী। অপরটি হাইজাদী ইউনিয়নের নারান্দী। এ দুটি গ্রাম আড়াইহাজারের বেনারশী পল্লী নামে পরিচিত শত বছর ধরে। এখানে তৈরী তাঁত কলে বোনা বেনারশী ও কাতান শাড়ীর সুনাম ও চাহিদা রয়েছে সাড়া দেশে সমান তালে।

এখানে তৈরী বেনারশী ও কাতান শাড়ী যায় ঢাকার মীরপুরে। মীরপুরের ১০, ১১, ১২, পল্লবী ও কালসীতে বিক্রি হয় শাড়ী গুলো। বাংলাদেশের বৃহত্তর বেনারশী পল্লী রয়েছে মীরপুরের কালসীতে। তার উপর আড়াইহাজারের লতব্দী ও নারান্দী বেনারশী পল্লীর তাঁতে বোনা বেনারশী ও কাতান শাড়ী গুলো যুক্ত হয় মীরপুরে তৈরী শাড়ী গুলোর সাথে। সেখান থেকে শাড়ী গুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন কি দেশের বাইরে বিদেশেও রপ্তানী করা হয়ে থাকে।

সব মিলিয়ে লতব্দীতে ৫০-৬০টি বেনারশী কারখানা রয়েছে। নারান্দীতে রয়েছে ১০-১৫ টি। দুটি পল্লীতে প্রায় ৭০-৭৫ টি কারখানায় গড়ে ২০-২৫ টি করে তাঁত কল রয়েছে। প্রতিটি তাঁত কলে দু জন করে কারিগর কাজ করে থাকে। একজন মূল কারিগর যিনি শাড়ী বুনন করেন। আরেক জন চড়কায় সুতা কাটেন। চড়কায় সুতা কাটার কাজ টি সাধারণত মেয়েরা করে থাকে। শাড়ী বুনন করে পুরুষ কারিগর।

একেকজন কারিগর দিনে গড়ে ৩-৪ টি করে শাড়ী বুনন করতে পারেন। প্রতিটি শাড়ী বুননের মজুরী দেওয়া হয় দু শ টাকা করে। একজন কারিগর দিনে ৬ শ থেকে ৮ শ টাকার কাজ করতে পারে।

প্রতিটি শাড়ী বাজারজাত করা পর্যন্ত পরতা পরে ৮ শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। বাজারে তা ১২ শ টাকা থেকে ১৮ শ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিটি শাড়ী বাজারজাত করা পর্যন্ত শাড়ী প্রতি ৫-৬ শ টাকা করে লাভ আসে। এতে করে বেনারশী পল্লী গুলো এলাকার অর্থনৈতিক উত্তরণে এবং বেকার সমস্যা ঘুচানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক ভুমিকা রাখছে।

লতব্দী গ্রামের বেনারশী কারখানার মালিক নজরুল ইসলাম জানান, ক্বোরবানীর ঈদের পর থেকে বাজার একটু মন্দা। তাই তার ২-৩ টি তাঁত বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে বাজার মন্দা হলেও খুব একটা লোকসান গুণতে হয় না।

তা ছ্ড়াা আরো অন্যান্য মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,এ ব্যবসা করতে তারা কোন প্রকার সরকারী অনুদান অথবা কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করেননি। হিসেব করতে গেলে তারা স্বয়ং সম্পূর্ণ ভাবেই ব্যবসাটি করে যাচ্ছেন।

অনোয়ার হোসেন নামে একজন কারিগর জানান, এলাকায় প্রচুর কারিগর রয়েছে। তবে বাজার মন্দার কারণে তারা পাওয়ারলুমের প্রতি ঝূঁকে পড়ায় কিছুটা কারিগর সংকট আছে। তাই বাইরের এলাকার কারিগরেরা এখানে এসে কাজ করছে।

এ ব্যাপারে সঠিক পরিসংখ্যান জানার জন্য আড়াইহাজার উপজেলা তাঁত বোর্ড অফিসে গিয়ে অফিসটি বন্ধ পাওয়া যায়।