নিজস্ব প্রতিবেদক: সময়ের বিবর্তনে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য থেকে মসলিন ও জামদানি তাঁত শিল্প অনেকটা বিলুপ্ত প্রায়। বিখ্যাত মসলিন ও জামদানির তাঁত সোনারগাঁ থেকে অনেকটা বিলুপ্ত হলেও সেই তাঁত সাদৃশ্য চাকায় সুতার রশিতে বাধা পড়েছে কয়েকশত নারী ও পুরুষ শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীদের জীবন। দৈনন্দিন জীবনে পরিবারের চাহিদার বিপরীতে সুতার ব্যবসায় জড়িয়ে এখন স্বাবলম্বী পাঁচ শতাধিক শ্রমিক ও ব্যবসায়ী পরিবার। দেশে বিদেশে সুতায় পাকানো রশির ব্যাপক চাহিদা ও লাভ বেশি হওয়ায় সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা সুতার রশিতে সানন্দে বেধে নিয়েছেন তাদের জীবন। প্রতিদিন চাকায় রশি পাকানো কাজে আপন মনেই জীবিকার তাগিদে রশি পাকিয়ে যাচ্ছেন সোনারগাঁ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ২০ গ্রামের নারী পুরুষসহ পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।
সুতার তৈরি রশির ব্যবসায় চাহিদা ও লাভ বেশি হওয়ায় সোনারগাঁয়ের সর্বত্রই এখন এর পরিধি বাড়ছে। সুতার ব্যবসায় জড়িত নারী পুরুষসহ পাঁচ শতাধিক শ্রমিক রশি পাকিয়েই খেয়ে-পড়ে সংসার জীবনে সচ্ছলতা এনেছে পাশাপাশি স্বাবলম্বী হয়েছেন ব্যবসায়ী পরিবার গুলো।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ও পিরোজপুর ইউনিয়নের ভৈরবদী, কাজিরগাঁও, ছোট সাদিপুর, কালাদর্গা, সাচিলাপুর, দলদার, রহমতপুর, মঙ্গলেরগাঁও, দুধঘাটা ও লেবুছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সুতার রশি পাকিয়ে সচ্ছল হয়েছেন অনেক শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। রশি ব্যবসায় জড়িত ভৈরবদী গ্রামের ব্যবসায়ী কবির হোসেন জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে তারা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কেউ দাদার সুবাদে কেউ বাবার, আবার অনেকে সেচ্ছায় এ ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। তিনি আরো জানান সুতার ব্যবসা করতে গেলে অনেক পুজি ও লোকবলের দরকার কিন্তু লোকসানের ঝুঁকি নেই লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে। সুতায় রশি তৈরির কাজে জড়িত শ্রমিক আবুল হাসেম, যুবক সোহেল মিয়া, আমীর আলী, সালমা আক্তার, রাবেয়া খাতুন বলেন, বেশ কয়েক বছর যাবত চাকায় রশি পাকানোর কারিগর হিসেবে কাজ করছেন তারা।
প্রতিদিন সর্বনি¤œ ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত কারিগর মজুরি পায় তারা। সপ্তাহে একজন শ্রমিক মজুরি হিসেবে পেয়ে থাকেন চার থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত।
সুতার রশি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় বলে দেশের ঢাকা, নরসিংদী, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা সোনারগাঁ থেকে সুতার রশি কিনে নিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করছে। সুতার ব্যবসায় জড়িয়ে সোনারগাঁয়ের ৫ শতাধিক শ্রমিক ও ব্যবসায়ী সচ্ছল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রহমতপুর গ্রামের জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, যদি সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পাওয়া যেত তাহলে সোনারগাঁয়ে পরিবেশ বান্ধব এ ব্যবসায় বিপ্লব ঘটানো সম্ভব ।