নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিদ্ধিরগঞ্জের সিএনজি চালক আজিজ হত্যা মামলায় সিআইডির দাখিলকৃত অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী কল্পনার নারাজী আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। এছাড়া মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যূরো ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার (১১ জুন) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট অশোক কুমার দত্তের আদালত নারাজী শুনানী শেষে এ আদেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৩ জুন রবিবার ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৭৩ (৩বি) এবং ১৯০ (সি) ধারার বিধান মোতাবেক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিলকৃত অভিযোগপত্র মতিউর রহমান মতুকে আসামী করায় আপত্তি এবং বাদীর আপন বড়ভাই দেলোয়ার হাসানসহ অন্যান্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরকে আসামী করার আবেদন জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলি আদালতে (্ক’ অঞ্চল) বাদী এ নারাজী আবদেনটি দাখিল করছিলেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে ১১ জুন সোমবার শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেছিলো।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারী অত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ জেলা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ কুমার সরকার দীর্ঘ তদন্ত শেষে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৩ আসামীর নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগ পত্র নং-১৪) দাখিল করেন। অভিযুক্তরা হলো, মিজমিজি টিসি রোডস্থ কালু হাজী রোডের নুরু মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া মিছির আলীর ছেলে মো: মতিউর রহমান ওরফে মতু, মিজিমিজির আবু জাহেরের ছেলে মাহবুব হাসান ওরফে মজনু ও আনোয়ার হোসেন ওরফে আনা। এদের মধ্যে এ হত্যাকান্ডের ৫ মাস পর আনোয়ার হোসেন নামে এক আসামী আত্মহত্যা করে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবি এড. পারভেজ আহমদ জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ কুমার সরকারের দাখিলকৃত অভিযোগ পত্রের ২নং কলামে বর্ণিত আসামী (১) মো: হাবুল মিয়া, (২) জজ মিয়া, (৩) মো: ইমাম হোসেন ওরফে ইমনগনকে অত্র মামলার দায় হইতে অব্যাহতি প্রার্থনার বিরুদ্ধে এবং পরবর্তীতে আবেদনকারীনি কর্তৃক দাখিলকৃত পিটিশন-১৪/১৪ নালিশী আবেদনে বর্ণিত আসামী (১) মিজমিজি নতুন মহল্লা এলাকার মৃত আলী আকবরের ছেলে জজ মিয়া (৪০), (২) মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত কাদির ফকিরের ছেলে ইদু মিয়া (৫৫), (৩) মিজমিজি আব্দুল আলীর পুল এলাকার আমান মিয়ার ছেলে মো: হৃদয় মিয়া (২৫), (৪) মোশারফের মেয়ে সীমা বেগম (৩২), (৫) তার ছেলে বশির মিয়া (৩৫), (৬) মামুন মিয়া (৪০), মিজমিজি কালু হাজী রোডের (৭) মো: জাহাঙ্গীরের ছেলে মো: ইমন (৩৫), মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে হাবুল (৩৫), মো: ফালু মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৫০), নালিশ বর্ণিত দানশ মাদবরের ছেলে এবং বাদীর আপন বড়ভাই ১নং সাক্ষী দেলোয়ার হোসেনকে অত্র মামলায় আসামী শ্রেনীভূক্ত না করায় এবং এজাহারকারীনির আসামী নহে এমন ব্যক্তি মতিউর রহমান মতুকে আসামী করায় এবং অভিযোগ পত্রের ৬নং কলাম স্বাক্ষীর ঘর ১০ এবং ১৪ নং স্বাক্ষীগন অব্যাহতি প্রাপ্ত আসামীর ভাই হওয়ায় তাদের বাদ দেওয়ার জন্য অত্র নারাজী আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরো জানায়, অত্র মামলার তদন্তকালে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সরকার নট সট আপ ইন সিএস এ উল্লেখিত আসামীদর ক্ষেত্রে এবং নালিশী আবেদনের বর্ণিত অত্র আবেদন উল্লেখিত আসামীদের ক্ষেত্রে কোন সুষ্ঠ তদন্ত ব্যতিরেকে মনগড়া বক্তব্য উল্লেখিত আসামীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বেআইনী ভাবে উক্তরুপ অভিযোগপত্র দাখিল করায় এবং এজাহারকারীনির সন্দেহভুক্ত আসামী নহে এমন আসামী মতিউর রহমান মতুকে আসামী শ্রেনীভুক্ত করায় এবং আসামীগনের নিজস্ব লোকজনকে স্বাক্ষী করায় উক্তরূপ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে এজাহারকারী ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত হয়ে এই নারাজি আবেদনটি দাখিল করে। আদালত নারাজী আবেদনটি মঞ্জুর করে মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যূরো ইনভেষ্টিগশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালর ১১ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কালুহাজী রোড এলাকায় আজিজকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আজিজের স্ত্রী কল্পনা বাদি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ, জেলা গোয়দা পুলিশ ( ডিবি) এবং সর্বশেষ সিআইডি তদন্ত করে মামলার চার্জশীট দাখিল করে।