আজ শনিবার, ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

‘শ্রমিকরা ঈদ করতে না পারলে আপনাদের ঈদ করতে দেব না’

শ্রমিকরা ঈদ করতে না পারলে

শ্রমিকরা ঈদ করতে না পারলে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
শ্রমিকরা যদি ঈদ করতে না পারে তাহলে মালিকদেরকেও ঈদ করতে না দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। ২০ রমজানের মধ্যে সকল শ্রমিকদের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ ও অবিলম্বে নূন্যতম মজুরী ১৬ হাজার টাকার দাবিতে নারায়নগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি নারায়নগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ এমন ঘোষনা দেন।
শুক্রবার (১ জুন) সকালে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কাউসার হামিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নারায়নগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক অঞ্জন দাস।
উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক জুলহাস নাঈম বাবু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আহ্বায়ক জাহিদুল আলম আল জাহিদ, ছাত্র ফেডারেশন নারায়নগঞ্জ জেলার সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস জামান, নারী সংহতির অন্যতম নারী নেত্রী আফরীন আহমেদ হিয়াসহ আরো অনেকে।
জাহিদুল আলম আল জাহিদ বলেন, নানান ধরনের অপমান সহ্য করে একজন শ্রমিক তার কর্মঘন্টা পালন করে।সামনে ঈদ-উল-ফিতর পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে কাজ করছে তারা।সকালে তারা না খেয়েই রোজা রাখে। এমনকি সেহেরি ও খেতে পারে না তারা।বাসায় গেলে সন্তানরা যখন বলে জামা কই তখন তারা কিছ বলতে পারে না। কিছুদিন আগে আমরা আন্দোলন করে ভয়ভীতি পেরিয়ে আমরা শ্রমিকদের এক মাসের বকেয়া বেতন আদায় করে দিয়েছি কিন্তু বাকি বেতন এখনো দেয়নি মালিকরা। আগামী ২০ রমজানের মধ্যে আপনারা বোনাস ও বেতন দেওয়ার কথা বললেও এখন কিছুই করছেন না।আমাদের সামনে মূলা ঝুলিয়ে দিচ্ছেন। ঈদের জামা কিনতে পারছে না তার সন্তান, বাবা-মায়ের জন্য। পোশাক কিনতে না পারলেও ঈদের সেমাই জাতে সে খেতে পারে। আমরা আপনাদের ও ঈদ করতে দিব না যদি আপনারা আমাদের ঈদকে নষ্ট করেন। ১৬ হাজার টাকা নূন্যতম মজুরী দিতে হবে এর এক টাকা কম দিলেও শ্রমিকরা মানবে না।
জুলহাস নাঈম বাবু বলেন, ঢাকা শহরে যারা বস্তি ঘরে থাকে সেখানেও তার থাকার উপায় নেই।ঈদের বেতন ও বোনাস ২০ রমজানের মধ্যে দিতে হবে। ছুটির মধ্যে বোনাস দিলে কি হবে তারা তো তখন বাড়িতে চলে যায়।ছুটির দিন বোনাস দেওয়ার মানে হলো শ্রমিকদের বিপদে ফেলা। ঈদের আগে টিকিটের দাম বেড়ে যায় অথচ একজন শ্রমিক বোনাস পায় কত, ফলে তারা বাসের ছাদে,ট্রেনের ছাদে বসে বাড়িতে যায়। ফলে ধূর্ঘটনায় শ্রমিকদের প্রান যাবে না তো কাদের প্রান যাবে। বেসিকের বেতনের পরিমান বোনাস দিতে হবে। শ্রমিকদের মালিকরা ছুটি দিলে সেই ছুটি তারা পুসিয়ে নেয় কিন্তু বেতন আর বোনাস দেওয়ার নাম নাই। কিন্তু শ্রমিকরা তাদেও ন্যায্য দাবি চাইতে গেলেই তারা খারাপ। শ্রমিকদেও নূন্যতম ১৬০০০ হাজার টাকা মজুরী দিতে হবে আর না দিলে আমরাও আমাদের আন্দোলন থামাবো না।

শ্রমিকরা ঈদ করতে না পারলে

নারী নেত্রী আফরীন আহমেদ হিয়া, আজকে যেইভাবে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদেও দেশ যেই সমৃদ্ধশালী দেশ আর সভ্যতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেদিক থেকে বলবো তার অবদান বেশি উন্নয়নের অবদান সবচেয়ে বেশি শ্রমিকের।আজকে আমরা যে পোশাক পরে আছি সেটা তৈরি করেছে শ্রমিক কাজ না করলে আজকে আমরা যে রাস্তা দিয়ে হাটছি সেটা তৈরি হবে না। আমরা যে অবকাঠামোর মধ্যে দারিয়ে আছি সে অবকাঠামোর পরিবর্তন আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স¦প্ন দেখেন একটি উন্নত বাংলাদেশের। তার উন্নয়ন হয় পোশাকে তার উন্নয়ন হয় রাস্তাঘাটে। কিন্তু এই পোশাকের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের সব থেকে অবদান বেশি শ্রমিকের। শ্রমিকরা কাজ না করলে আমরা এই উন্নয়ন ভেদ করতে পারতাম না। ফলে শ্রমিকের অধিকার আদায় সবচেয়ে জরুরি। আমি যেহেতু নারী সংহতির পক্ষ থেকে যারা কাজ করে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যদি সচল রাখে সেই শ্রমিকদের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হচ্ছে নারী। বেশিরভাগ দেখা যায় তারা বিভিন্ন কারখানায়, গার্মেন্টস এ কাজ করে তারা কোন ধরনের ছুটি পায়না। তাদেরকে মাঠে-ঘাটে কল-কারখানায় যৌন হয়রানীর শিকার হতে হয়।এবং সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ থাকতে হয় শ্রমিকদের এবং বেশি অনিরাপদে থাকে নারী শ্রমিকরা। তাই আমরা দাবি জানাই শ্রমিকের বেতন নূন্যতম ১৬ হাজার টাকা করতে হবে। এই রমজান মাসে তাদের বেতন বোনাস দিতে হবে।