আড়াইহাজার প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভায় ৬নং ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কাউকেই বাইরে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। এলাকাবাসী যারা তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকেও মারধরের হুমকী-ধমকী দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে পুলিশকে জানানো হলেও তারা কোন কোন আইনী সহযোগীতা দিচ্ছে না।
মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার ছেলে থানা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডারের সাংগঠনিক সম্পাদক নবী হোসেন জানান, তার পিতা মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়া আড়াইহাজার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড থেকে উটপাখী প্রতীকে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। ২৫ জুলাই নির্বাচনে বশীর উল্যাহ পাঞ্জাবী প্রতীক জয়লাভ করেন। নবী মুঠোফোনে আরও জানান, দা, কুঁড়াল চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে বুধবার রাতে ৪০০ থেকে ৫০০জন বিজয়ী প্রার্থীর লোকজন তাদের বাড়িতে হামলা চালায়।
এসময় ব্যাপকভাবে ভাংচুর চালানো হয়েছে এবং লুটপাট করে বাড়ির সব কিছু নিয়ে গেছেন। তাদের পরিবারের লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের হতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। কেউ তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে গেলে তাদেরও বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না।
আড়াইহাজার থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক লাল মিয়া মুঠোফোনে অভিযোগ করেন, আমি উটপাখী প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলাম। বিজয়ী প্রার্থী বশীর উল্যাহ লোকজন ভোটারদের ভোট প্রয়োগে ‘ভূঁতে’ যেতে বাঁধা দেওয়ার ২৫ জুলাই দুপুর ১১টায় নির্বাচন বর্জন করেছি। পরে তার দ্বিতীয়তলা বাড়ির গেইট ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিজয়ী প্রার্থী বশীর উল্যাহর লোকজন তান্ডব চালায়। পরে ঘরে থাকার ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও ৫ ভরিস্বর্ণ লুট করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, থানায় অভিযোগ দিতে গেলে আমাদের ওপর আরও তান্ডব নেমে আসবে।
আড়াইহাজার থানার ওসি এম এ হক বলেন, বাড়ি ঘর ভাংচুর ও হামলার কোন ঘটনাই ঘটেনি। আমি নিজেই সেখানে গিয়ে ছিলাম। তবে তার পরও যদি কোন অভিযোগ থাকবে আমার কাছে আসলে ব্যবস্থা নিব।
এদিকে বিজয় মিছিলে পরাজিত প্রার্থীদের হামলায় অন্তত ১০ শিশু আহত হয়েছে। ৬ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে মোঃ বশিরউল্লাহ বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পর রাত ৮টার দিকে উপজেলার মুকুন্দী পান্না বাড়ৈপাড়া এলাকায় স্থানীয় কিছু শিশু জয়ী প্রার্থীর পক্ষে মিছিল বের করে। ঐ সময় পরাজিত প্রার্থী লাল মিয়া ও তার ছেলে নবী হোসেন, নুরুল হক সহ তাদের সমর্থকরা লাঠিসোটা,হকিষ্টিক নিয়ে শিশুদের মিছিলে হামলা চালায়। তারা শিশুদের বেধরক পিটিয়ে মারাত্মক ভাবে আহতকরে। আহতশিশুরাহল-জান্নাতী(৯),সাকিয়া(১২),জাকিয়া (৮),সিয়াম(১০),নাদিলা(৮),সিয়াম(১৩),আশিক(৬) ও জালালউদ্দিন(৩৫)। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজয়ী কাউন্সিলরের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
জয়ী কাউন্সিলর বশিরউল্লাহ জানান, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে লাল মিয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী শিশুদের উপর এ নেক্কারজনক বর্বর হামলা চালানোর নিন্দা জানান ও এ ঘটনায় বিচার দাবী করেন। তবে পরাজিত প্রার্থী লাল মিয়া হামলার কথা অস্বীকার করে জানান, তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। তার কোন লোক বশীর উল্যাহ বাড়িতে হামলা চালায়নি। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন।