সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যাদের এত বড় বড় অট্টালিকা ,বাড়ি ঘর -ফ্লাট সবই আছে তাদের আরও লাগবে কেনো? মরলে সবাইকেই যেতে হবে কবরে সাড়ে ৩ হাত জায়গায়। ধন সম্পদ কেউ সাথে নিয়ে যেতে পারবে না। এই কথাটা মানুষ কেনো ভুলে যায়, আমি জানি না। আজ আপনাদের ( আদিবাসীদের) হাতে তুলে দিতে পারলাম এটা বড় কথা। আপনারা কিন্তু বঞ্চিত ছিলেন। আমার সব সময় একটা প্রচেষ্টা ছিলো যে কীভাবে আপনাদের বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি দেবো। আপনারা জমি দিয়েছেন অথচ আপনারা প্লট পাবেন না এটা হতে পারে না।
রবিবার ( ৯ মে) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অবশিষ্ট মূল আদিবাসী এবং সাধারণ ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্লট বরাদ্দপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উপকারভোগীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি জানি অনেকে এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে। আমার কাছে অনেক মেসেজ পাঠাতেন, খবর পাঠাতেন। আমার টেলিফোনে ম্যাসেজ আসতো, আমি পড়তাম। তখন থেকে আমি চেষ্টা করেছি। যেখানে বড় লোকদের একটু দৌড়াত্ব বেশি থাকে সেখানে কাজ করা আবার বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। তার পরেও অনেক বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে আমরা প্লটগুলো তৈরী করে দিতে পেরেছি। আমি চাই বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন ,জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একটা প্রস্তাব আমার কাছে আসে যে পূর্বাচলে জাতির পিতার একটা স্মৃতি স্তম্ভ করা হবে বা টাওয়ার করা হবে। যেটা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি টাওয়ার । আমি কিন্তু সেটা অনুমোদন দেই নাই। আমি সেই ফাইলেই লিখে দিয়েছিলাম আগে এখানকার ( পূর্বাচল) যারা অধিবাসী তারা তাদের প্লট পাবে। এরপর আমি এ প্রকল্প অনুমোদন দেবো। তার আগে আমি কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেবো না। এবং কিভাবে প্লট বের করবে সেটা যেনো মন্ত্রণালয় খুজে বের করে। এই নির্দেশনাটাই আমি দিয়েছি। আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের প্রতিমন্ত্রী , সাবেক মন্ত্রী ,সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে। আমি সত্যিই আনন্দিত এই প্লটগুলো বুঝে দিতে পেরে। যারা এই প্লটগুলো খুজে বের করেছে, বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে, জমির কাগজ বুঝিয়ে দিতে সহযোগিতা করেছে, আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ- ১( রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ,বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট এসেছে, যেটা আরও বেশি মারাত্মক। এতে যারা সংক্রমিত হয় তারা আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। যে কারণে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা পার্শ্ববর্তী দেশে এ ভাইরাস আক্রমণ করেছে। আর প্রতিবেশী আক্রান্ত হলে তা থেকে দূরে থাকা কঠিন হয়ে যায়। তাই সবাইকে বলব, নিজ নিজ অবস্থানে থেকে ঈদ করুন। কেননা বাড়ি যাওয়ার পথে কে ভাইরাস বহন করছেন, কে করছেন না, তা আমরা কেউ জানি না। কাজেই বাড়ি যাওয়ার পথে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বলব, বাড়ি যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা যাওয়ার পথে আপনি ভাইরাস বহন করে নিয়ে যেতে পারেন আপনার পরিবারের কাছে। যাতে করে আপনার মা-বাবা ভাই-বোনসহ পরিবারের সদস্যরা আক্রান্ত হতে পারে। তাই আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। নিজে সুরক্ষিত থেকে অন্যদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে। মাস্ক পরতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রমজান মাস, আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, যেন এই করোনাভাইরাস থেকে আমাদের দেশ মুক্তি পায়, দেশের মানুষ যেন মুক্তি পায় আর যেন প্রাণহানি না হয়। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এই করোনার জন্য কত মানুষ মারা যাচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশে রোজ কত লোক মারা যাচ্ছে এবং এই প্রতিবেশী দেশে যখন হয় স্বাভাবিকভাবে তখন আমাদের দেশে আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য আগে থেকেই আমাদের সুরক্ষিত থাকতে হবে। নিজেদের সেভাবে চলতে হবে, যেন আপনারা সবাই করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।