আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পঙ্গু হয়ে যাবেন কাউন্সিলর খোরশেদ

খোরশেদের নামে মামলা

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ

করোনার শুরু থেকেই মানবিক কাজে যুক্ত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। স্যানিটাইজার তৈরী করে বিতরণ দিয়ে শুরু করে, খাদ্য বিতরণ, লাশ দাফন, অক্সিজেন বিতরণ এমনকি প্লাজমাও দিতে কার্পণ্য করেননি। করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির ব্যাপারেও সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে এ খোরশেদকে একজন চিকিৎসক বলেছিলেন, ‘এখনি অপারেশন না করলে পঙ্গু হয়ে যাবেন।’

কাউন্সিলর ও করোনা যোদ্ধা খোরশেদ ঢাকার একটি আলোচিত হাসপাতাল নিয়ে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে এমনই এক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। খোরশেদের স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-


শাহাবুদ্দিন হাসপাতাল সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা –
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শহরে নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশন বনাম হকার তান্ডবে মামলা হলে আমি গুলশানে আমার চাচতো ভাইয়ের বাসায় অবস্থান নেই। বাৎসরিক ইভেন্ট হিসাবে বাচ্চাদের বই মেলায় যাওয়া। আমিও ফেরারী অবস্থান থেকে বাচ্চাদের সাথে বই মেলায় মিলিত হই। আমার ছোট মেয়েকে আবেগ বশতঃ কাধে নিয়ে স্টলগুলো ঘুরে দেখি ও পছন্দের বই গুলো কিনতে থাকি। এক পর্যায়ে আমার মেরুদন্ডে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করি।এমন ব্যাথা যে আমি হাটতে পারছিলাম না,গাড়ীতে উঠতে পারছিলাম না। কোন রকম ভাইয়ের বাসায় ফিরে রাতটা কাটাই। সকালে আমার ভাই ও ভাবী আমাকে বাসার কাছে শাহাবুদ্দিন হাসপাতালে অর্থোপেডিক্সের প্রধানের কাছে নিয়ে যান। ডাক্তার সাহেব প্রথমে এক্সরে ও এমআরআই করে বিকালে জানান, আমার স্পন্ডালাইসিস হয়েছে। আমাকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন করতে হবে, নতুবা আমি পঙ্গু হয়ে যাব। তাই পরের দিনই যেন আমি সাড়ে তিন লাখ জমা দিয়ে দেই।


ডাক্তারের কথা শুনে আমি হতাশ হয়ে যাই। এমনিতেই ফেরারী জীবন, তার উপর এমন দুঃসংবাদে আমি ও আমার স্ত্রী চরম হতাশ হয়ে পরি। কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। এ অবস্থায় আমি এক্সরে ও এমআরআই ফ্লিম গুলো আমার বন্ধু অর্থোপেডিক্সের সহকারী অধ্যাপক ডা. আলমগীর জনির কাছে পাঠাই। জনি আস্থা দিয়ে বলেন, স্পন্ডালাইটিস হয়েছে তবে ভয়ের কিছু না, অপারেশন লাগবে না। কিছু ঔষুধ দেয় আর ভিডিও কলে দুই টা ব্যায়াম দেখিয়ে দেয়। আমি জনির কথায় ডিপেন্ড করতে পারি না, কারণ একটা মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধান বলেছেন ২ দিনের মধ্যে অপারেশন না করালে পঙ্গু হয়ে যাবো, সেখানে বন্ধু বলে কিছু হয়নি। এটা কিভাবে সম্ভব? তাই রিকর্ণফার্ম করতে গুলশান ১ নাম্বারে একজন রিটায়ার্ড অধ্যাপককে দেখাই । তিনি জনির মত ব্যায়াম দেখিয়ে দিয়ে বলেন সেরে যাবে।

এবং ১৫ দিন ব্যায়াম ও ঔষধ খাওয়ার পরে আল্লাহর রহমতে আমি সুস্থ হয়ে যাই এবং গত দুই বছরে আর কোন সমস্যা হয়নি।

এখন প্রশ্ন শাহাবুদ্দিন হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান কোন জ্ঞানে আমাকে অপারেশন করতে চাইলেন? আমি যদি বন্ধু জনির সাথে কথা না বলে সেই ডাক্তারের কথা অনুযায়ী অপারেশন করাতাম তাহলে কি হতো? কারন আমরা জানি মেরুদন্ডে একবার অপারেশন হলে পরে তার প্রভাব পরে দু পায়ে। যা থেকে ধীরে ধীরে দু’পা অবশ হয়ে যায়।
যার অর্থোপেডিক্সের ডাক্তার বন্ধু নাই, অথবা পরামর্শ দেয়ার মত কেউ নাই, টাকার নেশায় এমন ডাক্তার ও হাসপাতালগুলো মানুষের জীবন ধংস করে দিচ্ছে অবলীলায়।