আজ বুধবার, ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ঘুমিয়ে জেগে আছে নগরবাসী!

 মশক নিধনের জন্য সার্ভে করা হবে : প্রধান নির্বাহী
 ২৭ টি ওয়ার্ডে আলাদা ভাবে কর্মসূচি চলবে : পরিকল্পনাবিদ
 নাসিকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হবে : নাগরিক কমিটির

অপরাধ প্রতিবেদক
বাবারে গরিব মানুষ প্রতিদিন মশার কয়েল কেনার টাকা নাই। বড় লোকের বড় কারবার শীত, গরম, মশা কি আর হেরা টের পায়। রাতের মশা এখন দিনে কামরায় গতকাল রাতে এ কথা গুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জ রেল ষ্টেশনের বাসিন্দা জোসনা বেগম।

জানা যায়, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পড়ার টেবিল পর্যন্ত মশার কামড় থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা কেউ। সিটি করপোরেশনের চাহিদা অনুযায়ী মশার শূককীট, মূককীট সংগ্রহ ও পরীক্ষার জন্য পূর্ণাঙ্গ মশা সংগ্রহ করে একটি দপ্তর। তবে মশার প্রজননস্থল ডোবা, নালা, ঝিল ও নর্দমায় নিয়মিত মশা মারার ওষুধ ছিটানো ও পরিষ্কার করার কাজ করে সিটি করপোরেশন। তবে বাস্তব চিত্র যেখানের মশা সেখানেই আছে মশার ওষধ কি করছে? অ্যামেরিকান মসকিউটো কন্টোল এসোসিয়েশনের (এএমসিএ)’র এক তথ্যে দেখা যায় যে, মশার কারনে প্রতি বছর সারা বিশ্বে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০ লাক্ষের অধিক মানুষ মারা যায়।

মশার কামড়ে ১২ ধরনের ভয়ংকর রোগ সৃষ্টি হয়। জিকা, চিকুন গুনিয়া, ডেঙ্গু, ভেনিজুয়েলা ইকুয়িন এনসেফালাইটিস ,ইস্টার্ন ইকুয়িন এনসেফালাইটিস, লা ক্রস এনসেফালাইটিস, জাপানি এনসেফালাইটিস, ইয়োলো ফিভার, লিম ফেটিকফাই লেরিয়াসিস, সূত্র, প্রথম আলো ও দৈনিক সংগ্রাম।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভূক্ত প্রতিটি ওয়ার্ডে মশার উপদ্রব দিন দিন বেড়ে চলছে। নগরীর মশার উপদ্রব বৃদ্ধির একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও এখনো ঘুমিয়ে আছে কর্তৃপক্ষ। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ওয়ার্ড ভিক্তিক মাত্র ২০ জন কর্মী দিয়ে নারায়ণগঞ্জ, সিদ্বিরগঞ্জ ও বন্দরসহ ২৭ টি ওয়ার্ডে মশার ওষুধ বন্টন করতে পাঠায় এলাকা গুলোতে। প্রতিটি উপজেলায় ৬ জন করে টিম করে কাজ করে মাসে ২৭ দিন। ৬ জন কর্মী দিয়ে উপজেলার মশা নিধণ করা সম্ভব? সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত ৪ ঘন্টা কি করে সেই কর্মীরা?

সরেজমিনে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন অস্থায়ী ভাবে নগরীর রেলী বাগান এলাকার কিছু লোক দিয়ে মশার ওষুধ বিতরন করতে পাঠায় এ সকল কর্মীদের কাঁেদ মশার ওষুধের মেশিন নিয়ে ও একটি রেজিষ্টার খাতা নিয়ে এক সাথে বেড় হয় সিটি কর্পোরেশন থেকে।

কর্মীরা সিদ্বিরগঞ্জে মশার ওষুধ বিতরণ করতে গেলে যাতায়াত করতে কতক্ষন লাগে? অথবা বন্দরে যেতে কতক্ষন লাগে? তারা তো ৪ ঘন্টাই কাজ করে। দেখা গেছে রেজিষ্টার খাতায় লোকজনের স্বাক্ষর নিয়ে ব্যস্ত থাকে কর্মীরা আর কখন ১টা বাজবে হাজিরা শেষ করবে।

নারায়ণগঞ্জের ১৩ ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো.রাবিক বলেন, চায়ের দোকান থেকে পড়ার টেবিল পর্যন্ত যে খানে যাই মশার কামর খাই। এছাড়া মশার উপদ্রবে রক্ষা পাচ্ছেনা অফিস আদালত। যে সকল প্রতিষ্ঠান মশার উপদ্রব লাগাম টেনে ধরবে তারা আজ নিশ্চুপ । মশার উপদ্রব কমাতে তারা দায়িত্ব অবহেলা করছেন এত কোন সন্দেহ নেই। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মনে করি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অবশ্যই ভূমিকা রাখবে।
নিতাইগঞ্জের বাসিন্দা কাজী রাব্বি বলেন, জন্ম সদন অথবা মৃত্যু সনদ করতে গেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের লোকজন বলেন আগে বাড়ির খাজনা রশিদ দেখান তার পর কাজ হবে। যদি ৩ মাসের ও খাজনা বাকি থাকে তাহলে তা পরিষদ করে সনদ করতে হবে। নাসিক কৌশল অবলম্ভন করে খাজনা নেয় কিন্তু সেবা দেয়ার বেলায় কিছুই করে না। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, যেখানে আমরা নগরবাসী চরম দূর্ভোগ আর নিদ্রাহীনতয় আছি সেখানে সিটি কর্পোরেশন নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে।

উত্তর চাষাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. হৃদয় বলেন, পরিকল্পনাবিদ কি পরিকল্পনা করতে করতে ঘুমিয়ে গেছেন ভাই মশা পরিকল্পনাবিদ কে কামর দিয়ে উঠাও তাহলে যদি কাজ হয়।

সিদ্বিরগঞ্জের বাসিন্দা সপ্না আক্তার বলেন, যারা সিটি কর্পোরেশনে কাজ করে তারা তো লোহার মানব তাদের কি মশায় কামরায়। আমরা বিপদে পরেছি সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা হয়ে। অপরদিকে বন্দর এলাকার বাসিন্দা ডিইক বলেন, পুকুর নালা বেশী থাকায় বন্দর এলাকাতে মশার উপতাব অনেক বেশী। মশার যন্তনায় নিজের বাড়ি ভাড়া দিয়ে এখন অনের বাড়িতে ভাড়া থাকি। কিন্ত মশার কামর থেকে এখানেও রক্ষা পাচ্ছিনা। মনে হয় সিটি কর্পোরেশন ট্রাক্্র বাড়াতে পারেনা বলে মানুষকে মশার কামড় খায়িয়ে প্রতিশোধ নেয়। আমরা আশা করবো তাদের জ্ঞান পরিবর্তন হোক।

নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মশা নিধক কর্মী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি জানান, সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে ২০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করে। এই ২০ জন কর্মী নারায়ণগঞ্জ, সিদ্বিরগঞ্জ ও বন্দরসহ ২৭ টি ওয়ার্ডে পর্যাক্রমে কাজ করে। আগে প্রতিটি ওয়ার্ডে ১৬ জন করে একসাথে টিম হয়ে কাজ করতো তবে এখন নারায়ণগঞ্জে ৬ জন ,সিদ্বিরঞ্জে ৬ জন ও বন্দরে ৬ জন করে টিম করে কাজ করে মাসে ২৭ দিন। কর্মীদের কে কাউন্সিলরের নিদিষ্ট এলাকা অনুযায়ী ও তাদের তালিকায় কাজ করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, এ সকল কর্মীরা সকাল নয়টা থেকে ১ টা পর্যন্ত টিম হয়ে কাউন্সিলরের তালিকা অনুযায়ী কাজ করে থাকে। আর কর্মীদের মাসিক বেতন ৬ হাজার টাকা প্রদান করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। নিলামে মাধ্যমে
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক বলেন, এখন মশারির বেতরেও মশা থাকে। সিটি কর্পোরেশন যে সকল কাজ করে তা অনেক ভাল আমরা দাবি জানায় অতি দ্রত সময়ের মধ্যে মশা নিধনের ব্যবস্থা করার জন্য। অন্যথায় নাগরিক কমিটির পরবর্তী সভায় মশা নিধনের বিষয় আলোচনা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনে বিরুদ্ধে আন্দেলন করবে।

মশক নিধন কর্মীদের দায়িত্বে থাকা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আলমগীর হিরনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চা জানায়, ২৫ জন মশক নিধন কর্মী রুটিন অনুসারে কাজ করে নাসিকে। বর্তমানে মশার উপদ্রব অনেক বেশী তাই আমরা সোমবার থেকে তিনটি অঞ্চলকে আলাদা করে অঞ্চল ভিক্তিক লোকের মাধ্যমে ১৫ জন করে প্রতিটি ওয়ার্ডে মশার উপদ্রব কমাতে কাজ করাবো।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, মশার নিধনের জন্য আগের চেয়ে আরো জনবল বারানো হয়েছে। এছাড়া আলাদা ভাবে একটি কমিটির মাধ্যমে মশার ওষুধ ক্রয় করা হচ্ছে ঢাকা থেকে। এখন ৩টি অঞ্চলের ২৭ টি ওয়ার্ডে আলাদা ভাবে জনবল দ্বারা মশা নিধন করা হবে।
মশা নিধক অবস্থার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এহেতেসামুল হক দৈনিক সংবাদচর্চা জানান, অবশ্যই আমরা মশক নিধনের জন্য র্সাভে করা হবে। আমরা যে র্কাক্রম করছি তাতে কি অগ্রগতি হচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পাশে একটি ইউনিয়ন আর এ ইউনিয়নও বড় একটি কারন তাদের সাথে আমদের সমন্য় হলে আমাদের এরিয়ার বাহিরে যদি উদ্যাগ নেয়া যায় তাহলে ভাল ফলাফল আসবে। এবার আমরা সার্ভে প্রতিবেদন নিয়ে সামনে আরো ভাল কাজ করার পরিকল্পনা করবো। আমরা কিটনাশক ওষুধের মাধ্যমে মশা নিধন করে থাকি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ