আজ সোমবার, ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দল নিবন্ধন আবেদন পুনঃনিরীক্ষার দাবিতে না’গঞ্জে গণসংহতির সংবাদ সম্মেলন

দল নিবন্ধন আবেদন

দল নিবন্ধন আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন পুনঃনিরীক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে গণসংহতি আন্দোলন এর নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। সংবাদ সম্মেলনে দলটির জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন অভিযোগ করেন, সকল শর্ত পূরণ করেও গণসংহতির আবেদনকে মাঠ পর্যায়ে যাচাই বাছাইয়ের জন্য প্রেরন করা হয়নি। ৭৫টি দল আবেদন করে নিবন্ধনের জন্য সেখানে কমিশন দুইটি দলকে নিবন্ধন দেয়। কোন কোন যোগ্যতা বলে দল দুইটিকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে তা জানানোর জন্য তিনি আহবান জানান।
শনিবার (৭ জুলাই) বিকেলে দলটির জেলা কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দলটির জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, মহানগরের সাধারন সম্পাদক পপি রানী সরকার, ফতুল্লা থানার যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা বেগম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাধারণ সম্পাদক হারুন কলি মাহমুদ, বন্দর থানার আহ্বায়ক কাওসার হামিদ প্রমুখ।
সাংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস। লিখিত বক্তব্যে অঞ্জন দাস জানান, নির্বাচন কমিশনের গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সকল শর্ত পূরণ সাপেক্ষে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে গণসংহতি আন্দোলন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করে। পরবর্তীতে গত ৮ এপ্রিল পত্র মারফত নির্বাচন কমিশন তার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী যে সম্পূরক শর্তাদি পালনের শর্ত দেয় তাও গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে যথার্থভাবে পূরণ করা হয়। উল্লেখ্য, ইসির এই চিঠি ছিল দলিলপত্রে কোন ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ১৫ দিন সময় দেবার বিধান অনুযায়ী। সেখানে ইসির চিঠিতে দলের গঠনতন্ত্রের অঙ্গ সংগঠন না রাখার বিধান যুক্ত করা হয় এবং বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া বিস্তারিত করার কথা বলা হয়। যার অর্থ নির্বাচন কমিশন উক্ত দুই ক্ষেত্র ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে কোনো ঘাটতি নেই বলে স্বীকৃতি দেয়। তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী গণসংহতি আন্দোলন এই দুইটি বিষয়ই গঠনতন্ত্রে পরিষ্কারভাবে যুক্ত করে তার অনুলিপি নির্বাচনে জমা দেয়। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী দলিলাদি বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলন সকল শর্ত পূরন করে।
নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, দরখাস্তকারী দলকে অনুর্ধ্ব পনের দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় দলিলাদি সরবরাহসহ অন্যান্য ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ প্রদান করিয়া পত্র প্রদান করিবে। কিন্তু পত্র প্রাপ্তির পর দরখাস্তকারী দল প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করিলে কমিশন উপ-বিধি (২), (৩), (৪) এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া দরখাস্তটি মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর করিতে পারিবেন। উক্ত দল বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি থাকিলে দুইটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি মারফত ব্যবস্থা করবেন এবং আপত্তি না পাওয়া গেলে তার আবেদন গ্রহণ করবেন। এখন প্রশ্ন হলো দরখাস্তকারী চাহিদা পূরণ করলে এবং কোন আপত্তি বিষয়ক শুনানি না হলে নির্বাচন কমিশন দরখাস্তকারীর দরখাস্তটি না মঞ্জুর করে কিভাবে? এখতিয়ার কি তার আছে বা থাকা উচিত? এটা কি গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায়নীতি ও আইনের লঙ্ঘন এবং স্বেচ্ছাচার নয়? আমরা দেখতে পেলাম নির্বাচন কমিশন মাঠ জরিপের আগেই ৭৫টি আবেদনকারী দলের ৭৩টি শর্ত পূরণ করেনি বলে তাদের আবেদন জরিপের জন্য বিবেচনায় নেয়া হয়নি এমন ঘোষণা দিয়েছে। যা আমাদের জনতে হয়েছে গণমাধ্যম সূত্র। আবেদনকারী দলসমূহকে এর কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি। তেমনিভাবে যে দলগুলোকে তারা জরিপের জন্য বিবেচনা করেছেন তাদের কিসের ভিত্তিতে যোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে সেটাও অজানা। এটা একটা অগণতান্ত্রিক, অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
অঞ্জন দাস আরো বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় গণসংহতি আন্দোলনের ভূমিকা রাজনৈতিক সচেতন মহলে জ্ঞাত ও পরিচিত। শুধু সক্রিয়তার বিবেচনাতেই নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাজের বিস্তারের বিবেচনাতেও আমরা নিবন্ধনের দাবিদার। গণসংহতি আন্দোলন নির্বাচন কমিশন যে কাগজপত্র দাখিল করে তাতে ১০৯টিরও অধিক থানায় কার্যালয় ও কমিটি থাকা, ২০০ এর অধিক ভোটার সদস্য থাকা, ২৮টি জেলায় জেলা কমিটি ও কার্যালয় থাকার প্রমানপত্র দাখিল করা হয়। অর্থ্যাৎ নতুন দল নিবন্ধন বিধি-৬ এর (ঞ), উপবিধি (ই) ধারা অনুযায় নির্বাচন কমিশনের সকল শর্ত গণসংহতি আন্দোলন যথার্থভাবে পূরণ করেছে।
আমাদের জেলায় গণসংহতি আন্দোলনের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি ও ৪টি থানা কমিটি আছে। নারায়ণগঞ্জ সদর থানা, ফতুল্লা থানা, বন্দর থানা এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আমাদের কেবল ২০০জনের উপরে সদস্যই নয় প্রতিটি থানায় রয়েছে কাজের বিস্তার। ৪টি থানার সদস্যের তালিকা আমরা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি। এর বাইরে অনেকে আমাদের সদস্য আছেন যারা নির্বাচন রমিশনের উক্ত এলাকার ভোটার সদস্য হবার শর্ত পূরণ করেন না বলে আমরা নির্বাচন কমিশনে জমা দেই নি। কাজেই সমস্ত বিচারেই আমরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের প্রকৃত দাবিদার বলে মনে করি। আমরা আশা করি নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত পূণঃবিবেচনা করে গণসংহতি আন্দোলন সহ অন্যায্যভাবে বাদ দেয়া সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদন মাঠ পর্যায়ে জরিপের জন্য প্রেরণ করবে এবং নিবন্ধন বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তে উপনীত হবে।