বিপ্লব হাসান : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের পাশে আব্দুল রশিদ চেয়ারম্যানের বাড়িতে তৈরি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতিকর ভেজাল জুস। খাদ্য নীতিমালা তোয়াক্কা না করে বিএসটিআই এর অনুমতি ছাড়াই আলম নামে এক লোক মর্ডান ফ্রুটিকা নামক ওই জুস কারখানা গড়ে তুলেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও একটি মহলকে ম্যানেজ করেই এই কারখানায় তৈরি জুস নিশ্চিন্তে বাজারজাত করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের পাশে রশিদ চেয়ারম্যানের বাড়ির পশ্চিম কোণায় মর্ডান ফ্রুটিকা জুস কারখানার অবস্থান। রশিদ চেয়ারম্যানের বাড়ি ভাড়া নিয়ে আলম এই কারখানা গড়ে তুলেছে। অভিযোগ জানা গেছে, এই কারখানায় তৈরি জুস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সরকারি খাদ্যনীতিমালা অমান্য করে বিএসটিআই এর অনুমতি ছাড়াই এই কারখানায় তৈরি হচ্ছে ভেজাল জুস। কারখানাটির সরকারি অনুমোদন না থাকায় কর ফাঁকি দিয়েই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নোংরা পরিবেশে তৈরি ভেজাল জুস বাজারজাত করে মানুষের জীবন বিপন্ন করছে কারখানা মালিক আলম।
বিশেষ করে এ জুস শিশুদের জন্য বেশি ক্ষতিকর বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় একটি মহলের প্রচেষ্টায় এই জুস কারখানা গড়ে তুলা হয়েছিল। লিটন নামের এক ব্যক্তি বেশ কিছু দিন এই জুস কারখানাটি চালিয়ে ছিলো। তবে প্রশাসনের বাঁধায় বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটি। পরবর্তীতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আলম নামের এক লোক পুনরায় কারখানাটি চালু করেন। জনস্বাস্থ্যের ক্ষতিকর এই ভেজাল জুস তৈরি করে কিভাবে বাজারজাত করা হচ্ছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সচেতন মহল। স্থানীয় প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার আইন ফাঁকি দিয়ে এই কারখানায় তৈরি ভেজাল জুস বাজারজাত করে মানুষের জীবন বিপন্নকারী কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশিষ্ট সরকারি দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক জানায়, আমরা কারখানায় গোপন গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করি। মেইন গেটে সবসময় তালা লাগিয়ে রাখা হয় যাতে কেউ জানতে না পারে কারখানাটি চালু আছে। তিনি আরো জানান, কারখানায় যে রঙ ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি খাবারের নয়। কাপড়ে ব্যবহার করা হয় এই রঙ। ম্যাংগো জুস নামে বিক্রি করলেও তাতে আমের কোনো পাল্প নেই। পানির সঙ্গে গন্ধের জন্য দেয়া হয় ম্যাংগো ফ্লেভার। আর মিষ্টি করতে দেয়া হয় স্যাকারিন। এই জুসগুলো সাধারণত শিশুরাই পান করে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। এ বিষয়ে কারখানা মালিক আলমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। কারখানায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও সংযোগ প্রদান করা যায় নি। মর্ডান জুস কারখানার ম্যানেজার বলেন, আমাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে কিন্তু বিএসটিআই এর অনুমোদন নাই। এই জায়গার পানি ভালো না বলে আমরা আরো অনেক কিছু তৈরি করতে পারি না।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, ভেজাল ও অনুমোদনহীন জুস তৈরি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।