আজ শুক্রবার, ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

করোনা লড়াইয়ে দৃষ্টান্ত তৈরী করলেন খোরশেদ

বিশেষ প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংঠন প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে মরনব্যাধী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে। সে তালিকায় সরকারি নির্দেশনাভুক্ত এবং নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করে চলছে। পিছিয়ে নেই বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্ত এর মাঝেই একাই প্রায় ৫০ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরী ও বিনামূল্যে বিতরন সহ নানা স্বেচ্ছাসেবী কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরী করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।

দেশে করোনা ভাইরাসে প্রথম রোগী শনাক্তের পরপরেই নিজ কার্যক্রম শুরু করেন কাউন্সিলর খোরশেদ।  ১০ মার্চ করোনা প্রতিরোধে নিজ উদ্যোগে বিতরন করেন ২০ হাজার লিফলেট। ১৩ই মার্চ স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন এবং নিজ ওয়ার্ডের সকল মসজিদে করোনা ও ডেংগু নিয়ে খুতবায় সচেতন করার আহবান জানিয়ে ইমাম সাহেব দের চিঠি প্রদান করেন।

দৈনিক সংবাদচর্চার সাথে আলাপকালে কাউন্সিলর খোরশেদ জানান, আমি প্রথম ১৬ মার্চ বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন থেকে ফর্মুলাটি সংগ্রহ করি। ১৭ মার্চ বিকেল থেকে স্যানিটাইজার তৈরীর কাজ শুরু করি যা ব্যক্তি পর্যায়ে দেশে প্রথম।এতে করে অনেকেই আমার দ্বারা উদ্ভুদ্ধ হয়ে স্যানিটাইজার তৈরীর কাজ শুরু করে যাতে আমি অত্যান্ত আনন্দিত। আমার নিকট হতে ফর্মুলা নিয়ে বিদ্যানিকেতন স্কুল, বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশন, পোলস্টার ক্লাব, সৃষ্টি গার্মেন্টস লিঃ, মডেল ডি ক্যাপিটাল, শহীদ বাপ্পী স্মৃতি সংসদ, আলোর তরী যুব সংসদ-কাচপুর, দনিয়া ইয়ুথ ফোরাম, সোনারগাঁও থানা যুবদল, এফ টুয়েন্টি,  ফতুল্লা ব্লাড ডোনার ক্লাব, ১৯,২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার, জেলা জাকের পার্টি, হেফাজত ইসলামের নেতৃবৃন্দ, আড়াইহাজার থানা বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন সহ ব্যক্তি পর্যায়ে প্রায় ২০ জন হ্যান্ডস্যানিটাইজার তৈরী করেছে। এছাড়া ফেসবুক থেক ও টেলিফোনে আরো ৫০ জন আমার কাছ থেকে ফর্মুলা নিয়ে কয়েক লক্ষ বোতল স্যানিটাইজার তৈরী ও বিতরণ করে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগতদের প্রায় ১০ হাজার স্যানিটাইজার দেয়া হয়েছে। আমি নিজ উদ্যোগে যা তৈরী করেছি তার তুলনায় আমার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরী করেছি। ইচ্ছে আছে ৬০ হাজার তৈরী করবো। ওয়ার্ডের সকল মসজিদ মন্দিরে ২৫ লিটার জীবাণুনাশক বিতরন করা হয়েছে। এছাড়াও ২০ মন লিকুইড সোপ তৈরী করেছি যা বিতরনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে খাদ্য সহায়তার কাজও শুরু করবো। সর্বোপরি আমি সকলকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। একা একা বেঁচে থাকার মধ্যে স্বার্থকতা নেই। আমার যা সাধ্য ছিলো তা নিয়েই আমি চেষ্টা করেছি। অনেকের প্রচুর অর্থবিত্ত থাকলেও তারা খরচ করেনা। আমি আমার ওয়ার্ডবাসীকে বলেছি যাদের স্যানিটাইজার প্রয়োজন তারা আমার কার্যালয় থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করবে। আমরা দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছি। আশা করি আমারা ওয়ার্ডের ৮০% শ্রমজীবি মানুষের ঘরে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা পৌছেছে। বিত্তবানরা যদি মার্কেটে হ্যান্ডস্যানিটাইজার না পান তাহলে আমার অফিস থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করুন। এছাড়া জরুরী প্রয়োজনে আমার সার্বক্ষণিক হটলাইন নাম্বার তো রয়েছেই। 01717178242

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাউন্সিলর খোরশেদের এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। তিনি একজন জনপ্রতিনিধী হয়ে মানুষের কল্যানে যেভাবে কাজ করেছেন তা অন্যদের জন্য শিক্ষনীয়। জেলার অনেক এমপিও এই দুর্যোগকালীন সময়ে তার মত সেবায় নামতে পারেননি কোন অংশে। তার এমন মানবিকতার উদ্যোগ তাকে দীর্ঘদিন মানুষের কাছে স্বরনীয় করে রাখবে।

এসএএইচ/এসএএইচ