আজ বুধবার, ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

করোনা আছে, সচেতনতা কমেছে

বিশেষ প্রতিবেদক

দীর্ঘ ২ মাস লকডাউন শেষে ৩১ মে সারাদেশের অধিকাংশ কর্মস্থল উন্মুক্ত হওয়ায় ধীরে ধীরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অফিস খুললেও রাস্তায় চলাচল এবং অফিসের ডিউটি পালনে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সাধারন মানুষ স্বাভাবিক ভাবে আবারও নেমে এসেছে সড়কে। অনেকের চলাফেরার চিত্র দেখলে বুঝার উপায় নেই দেশে করোনা ভাইরাসের মতো মহামারী চলছে। করোনার প্রকোপ না কমলেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা লকডাউন শিথিলের সাথে সাথেই পালটে গেছে।

অথচ সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩৯৮ জনে এসে পৌঁছেছে। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রান হারিয়েছেন ৮৫ জন। এছাড়া মোট সুস্থ হয়েছেন ৯১০ জন। করোনার এমন আশংকাজনক চিত্র বারংবার গণমাধ্যমে উঠে এলেও সতর্কতা উলটো কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে বাধ্য হলেও রাস্তায় চলাফেরা এবং কেনাকাটায় নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই।

শনিবার সরজমিনে দেখা যায়, শহরের স্বাভাবিক ভাবে ফিরে এসেছে প্রান চাঞ্চল্য। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকলেও বিকেলের দিকে অন্যান্য দিনের মত স্বাভাবিক শহরের চিত্র ফুটে উঠে। সড়কে চলাচলরত গাড়িগুলোকে নিয়ন্ত্রন করতে বেশ হিমশিম খেতে হয় ট্র্যাফিকে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের। ফুটপাতে দেখা মিলে চিরচেনা হকারদের পসরা নিয়ে বসে থাকার চিত্র। মার্কেটগুলোতে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপস্থিতিও বেশ স্বাভাবিক। অথচ ২ মাস ধরে পুরো শহরটাই ছিল ফাঁকা সুনসান এক ভুতুড়ে পরিবেশে। বর্তমান চিত্র দেখলে মনেই হবে না নারায়ণগঞ্জ এখনও ঝুঁকিপূর্ন পরিস্থিতির ভেতরে ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন হতে জানা যায়, দেশের বর্তমানে সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে। তবে নারায়ণগঞ্জ প্রথম থেকে ২য় স্থান ধরে রেখেছে পূর্বের মতই। ৩য় স্থানে রয়েছে ঢাকা জেলার নাম। ৩টি জেলায় ব্যবসা বাণিজ্য এবং অফিস আদালতের কার্যক্রম থাকায় এইসব জেলা স্বাভাবিক ভাবেই আক্রান্ত হবার পরিমান ছড়িয়েছে সকল জেলাকে ছাড়িয়ে। বিশেষ করে ছুটিতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাড়ি ফেরা এবং পুনরায় প্রবেশ জেলায় করোনা ভাইরাসের বিস্তার বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত কারখানা খোলার পর থেকেই আশংকাজনক ভাবে করোনা রোগী বেড়েই চলছে। ৩১ তারিখ থেকে সকল কর্মস্থল খুলে দেয়ায় আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যেই সেই প্রভাব জেলার বাসিন্দারা উপলব্ধি করতে পারবেন। নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তা নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব। নতুন করে লকডাউনের মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে এর থেকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকবে করোনার ভয়াবহতা।