নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ: শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, যাতায়াত ব্যবস্থাসহ নানা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে পিছিয়ে আছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বসবাস করা সোয়া ৩ লাখ মানুষ। নারায়ণগঞ্জ শহরের লাগোয়া হওয়া সত্ত্বেও এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এখানকার বাসিন্দারা। তবে এলাকাবাসীর দাবি, একটি সেতুতে আটকে আছে তাদের নাগরিক সুবিধাগুলো। যত দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হবে, তত দ্রুত পাল্টে যাবে এখানকার মানুষের জীবনমান। এলাকাবাসী মনে করেন, যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে এখানকার মানুষের ভাগ্যের চাকা বদলে যাবে। কারণ, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব কিছুর উন্নয়ন হবে। নাগরিক সুবিধা পেলে নগরীর অনেক মানুষ কাউন্দিয়া ইউনিয়নে বসবাসের আগ্রহ দেখাবেন।
জানা গেছে, বন্দর উপজেলায় ৫৪.৩৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় গ্রাম রয়েছে ১৭২ টি। গ্রামগুলোতে প্রায় ৩ লাখ ১৩ হাজার মানুষের বসবাস। অথচ, এমন একটি ঘনত্ববসতি উপজেলার মানুষকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ দৈনন্দিন কাজের জন্য প্রতিদিন খেয়ানৌকায় পারাপার হতে হয়। কখন ঝুঁকি নিয়ে বিশেষত স্কুলের শিক্ষার্থী, প্রবীণ ব্যক্তি, নারী ও শিশুদের পারাপার হতে হয়। মাঝে মাঝে নৌকা কিংবা টলারে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠে। তখন ডুবে যাওয়ার ভয় থাকে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকির পাশাপাশি নৌকা পারাপারে সময়ও লাগে অনেক। আবার রাতে খেয়া পারাপার বন্ধ থাকে। তাই রাতের বেলা অসুস্থতার কারণে কেউকে খানপুর বা জেনারেল হসাপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পোঁছায়।
এই দূর্ভোগের অবসানের জন্য এলাকার লোকজন স্বাধীনতার ৪৬ বছর যাবত শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের জোর দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাঁদের সেই দাবি পূরণ করতে পারেনি সাবেক থেকে শুরু করে বর্তমান জনপ্রতিনিধিরাও। উল্ট গত সোয়া ৩ লাখ মানুষের স্বপ্নের এই ব্রীজকে মূলো বানিয়ে নির্বাচনী বৈতরণীতে পার পেয়েছে অনেক জনপ্রতিনিধি। সবশেষ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছে!
যদিও আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয়পার্টির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা বন্দর ও নবীগঞ্জ খেয়াঘাটে ব্রীজ নির্মাণের বহুবার ঘোষণা দিয়েছে। অনেকবার স্থানিয় সাংসদ সেলিম ওসমানও নিজ অর্থায়নে ব্রীজ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থানিয় এক নেতা বলেন, গত ৪৬ বছরে অনেকেই সাংসদ ও মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকার উন্নয়ন ও লোকজনের চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তো তাঁদেরই ছিলো। কিন্তু তাঁরা কি করেছেন? কেউ দায় এরাতে পারবে না।
অন্যদিকে খেয়ানৌকায় পারাপারের সময় আসলাম হাজী নামের এক লোক বলেন, ৪৬ বছর যাবত শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হবে সেই আশায় তো ছিলেম। যানি না ব্রীজ হয়েছে দেখে যেতে পারবো কি না।