আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অতি.জেলা প্রশাসক সেলিম রেজা এবং সহকারী কমিশনার রুমানার বিরুদ্ধে অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল রুমানা আক্তারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন এক ভুক্তভোগী। মোঃ চাঁন মিয়া নামে এক ভূক্তভোগী গত ৭ নভেম্বর তারিখে লিখিত এ অভিযোগ করেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যার অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, ভূমি আপীল বোর্ড, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তার দাদা মোঃ আব্দুল মিয়া ১৯৫৫ সালের ৭ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন জালকুড়ি মৌজাস্থ খতিয়ানভূক্ত আর,এস ৭২১ ও ৭২৫ দাগে সাড়ে ৩৬ শতাংশ জমি ৩৩৩১ নং সাফ কবলা দলিল মূলে খরিদ সূত্রে মালিক হন। তার মৃত্যুতে রেকমত আলী, খাসমত আলী, আজমত আলী ও মিছির আলী অত্র ভূমিসহ অন্যান্য ভূমির মালিক হন। পরবর্তীতে আপোষ বন্টনে তফসিল বর্ণিত ভূমি মিছিল আলী ওরফে খিদির আলী প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালের ৪ ডিসেম্বর রেজিষ্ট্রিকৃত ৩৯৮৩ নং না-দাবী নামা দলিল মূলে মিছির আলীর ১ ষোল আনা মালিকানা ঘোষণা দিয়ে অত্র দাগে মোঃ আজমত আলী মালিক নাই মর্মে স্বীকার করেন। তার বাবা মিছির আলী মৃত্যুকালে আবেদনকারী চাঁন মিয়াসহ তার তিন ভাই ও ও ১ বোন রেখে মারা যান। এদিকে মোঃ আজমত আলীর পূত্র সোহরাব দীর্ঘ ২৩ বছর পর নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ ২য় আদালতে দেঃ ২৭৭/১৪ বন্টনের মোকদ্দমা দায়ের করেন।

 

ভুক্তভোগী তার আবেদনে উল্লেখ করেন, তাদের বঞ্চিত করে অধিগ্রহনের কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য অতিঃ জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নারায়ণগঞ্জ সেলিম রেজা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল রুমানা আক্তার আপীলকারী সোহরাব গংদের নামে অধিগ্রহনের চেক ইস্যু করার পায়তারা করছে। যার মধ্যস্থতা করেছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য পরিচয় দানকারী বিল্লাল হোসেন ও অতিঃ জেলা প্রশাসকের পেশকার আক্কাছ আলী।
আবেদনে তিনি আরো উল্লেখ করেন, তিনি প্রতিদিন মোকদ্দমার আদেশের বিষয়ে পেশকার আক্কাছ আলীর সাথে যোগাযোগ রেখে আসছিলেন। দীর্ঘদিন পর কর্জ লিষ্ট খালি থাকার পর কর্জলিস্টে মোকদ্দমা নথীজাত আদেশে সহি মোহরী কপি সংগ্রহের জন্য তিনি আবেদন (যার এন্ট্রি নং ৭২৫) করেন। পুনরায় কর্জ লিষ্টে দেখেন নথীজাত শব্দটি কাটা। এ বিষয়ে পেশকারকে প্রশ্ন করলে সে কিছু জানেনা বলে ভুক্তভোগীকে জানায়। পরবর্তীতে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সোহরাবগং তার আবেদনের পর সহি মোহরী নকলের জন্য আবেদন করেন। পরে আবেদন করে প্রশাসনের সহায়তায় সহি মোহরী নকল সংগ্রহ করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ অফিসে নামজারীর আবেদন করে। পূর্বের অন্যান্য নামজারীর আবেদন নিষ্পত্তি না করে অবিশ্বাস্বভাবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুমানা আক্তার অসৎভাবে তহশীলদার ইব্রাহিমের সহযোগিতায় মাত্র ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সোহরাব গংদের নামে নামজারী প্রদান করেন বলে উল্লেখ করা হয় ঐ আবেদনে। যার নামজারী নং- ১৫৮৮/১৯-২০। রুমানা আক্তারের নামে ইতোপূর্বে এরুপ আরো আভিযোগ রয়েছে বলে ভুক্তভোগী চাঁন মিয়া তার আবেদনে উল্লেখ করেন। যার অনলাইন ট্রাকিং নং ১০০০০১৭১১। বিতর্কিত নামজারী সংগ্রহ করে অধিগ্রহনের ডাকা সোহরাবের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহন শাখা হতে চেক সংগ্রহের যাবতীয় প্রক্রিয়া প্রায় চুড়ান্ত করেছে। অতি দ্রুত নামজারী করা, নথী গোপন রাখা, সহি মোহরী কপি না দেওয়া, কর্জ লিষ্টে নথিজাত লিখে কেটে ফেলা, ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় বিবিধ মোকদ্দমা চলমান থাকায় এবং তফসিল বর্ণিত ভূমি বিষয়ে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে বিভিন্ন দেওয়ানী মোকদ্দমা চলমান থাকা সত্বেও সোহরাব আলীর বরাবরে মিছ আপীল মোকদ্দমায় তর্কিত আদেশ দিয়ে অধিগ্রহনের টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। যা ন্যায় বিচার ও সাধারণ আইনগত প্রক্রিয়া বিরোধী বলে তিনি উল্লেখ করেন ঐ আবেদনে।
আবেদনে তিনি উল্লেক করেন, উক্ত বিষয়ে অতিঃ জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ‘ক’ অঞ্চল, নারায়ণগঞ্জ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিদ্ধিরগঞ্জ, অতি উৎসাহী হয়ে সোহরাব গংদের সাথে যোগসাজে উপরিউক্ত বেআইনী কাজ করেছেন যা প্রমাণিত হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কার্যালয় ‘ক’ অঞ্চল, নারায়ণগঞ্জ এর মিছ আপীল ১৭৯/১৭ মোকদ্দমা ও কর্জ লিষ্ট এবং সহকার কমিশনার ভূমি সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল এর নামজারী কেস নং ১৫৮৮/১৯-২০, তারিখ ৪/১১/১৯ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, কার্যালয়ের ভূমি অধিগহণ শাখার বিবিধ ৭/১৯-২০ নখী তলব বিদয়ে তদন্ত করলে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করলে যাবতীয় দুর্নীতি প্রমান হবে বলে তিনি তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন।