আজ বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হুঙ্কার, অনুরোধ কাজে আসেনি

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :

বন্দর উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে আসার জন্য একজনকে হুঙ্কার অন্যজনকে অনুরোধ করেছিলেন সাংসদ সেলিম ওসমান। তবে, তার হুঙ্কার ও অনুরোধ গায়ে মাখেননি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আতাউর রহমান মুকুল ও মাকসুদ হোসেন। উল্টো তারা দু’জনই এখন এই সাংসদের জন্য পাল্টা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে সামনের দিনে ইমেজ সঙ্কটে ভুগতে পারেন সাংসদ সেলিম ওসমান। এমন অভিমত স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিকদের।

জানা গেছে, সাংসদ সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির রাজনীতি করলেও তিনি এবারের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সমর্থন দিয়েছেন বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশীদ। তিনি উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তার বিপরীতে চিংড়ি প্রতীক নিয়ে আছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আতাউর রহমান মুকুল এবং আনারস প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টি নেতা মাকসুদ হোসেন। যিনি বন্দর উপজেলাজুড়ে রাজাকারপুত্র হিসেবে ব্যাপক পরিচিত।

সূত্র বলছে, সাংসদ সেলিম ওসমান যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন মাকসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে। তিনি এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, মাকসুদ হোসেনকে রাজাকাপুত্র হিসেবে অখ্যায়িত করতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। এই সাংসদ গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাকসুদকে নৌকা প্রতীক পাইয়ে দিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। তার নির্দেশনার বাইরে গিয়ে বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় মাকসুদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেও বক্তব্য রেখেছিলেন সেলিম ওসমান। তাকে ঘরের ছেলে হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাচন থেকে সরে আসারও আহ্বান করেছিলেন তিনি। তবে তার সেই হুঙ্কার বা হুঁশিয়ারি এবং আহ্বান পোকা ঝারার মতো করে কাঁধ থেকে ঝেরে ফেলে নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মাকসুদ হোসেন। অথচ সেলিম ওসমানেরই অনুসারি ছিলেন মাকসুদ হোসেন। তার ছত্রচ্ছায়াতেই গত পনের বছর মুছাপুর অঞ্চলে ব্যাপক প্রভাবশালী আর প্রতিপত্তির মালিক বনেছেন মাকসুদ হোসেন।

অন্যদিকে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আতাউর রহমান মুকুলকেও অনুরোধ জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে আসার আহ্বান করেছিলেন সেলিম ওসমান। কিন্তু তার সেই অনুরোধ আমলে নেননি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। বরং তিনি সেলিম ওসমানের সেই অনুরোধকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, সাংসদ সেলিম ওসমানের ছত্রচ্ছায়াতেই ছিলেন মুকুল ও মাকসুদ। এখন সেই তারাই তাকে পাত্তা দেয়নি। এতে করে সাধারণ মানুষের মাঝে ইমেজ সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছেন এই সাংসদ। নির্বাচনে যদি সাংসদের প্রার্থী এম এ রশীদ জয়ী হতে না পারেন তাহলে পুরোপুরিভাবেই ইমেজ হারাবেন সেলিম ওসমান। ফলে নিজের ইমেজ ধরে রাখার জন্য এম এ রশীদকে জয়ী করাটাই এখন এই সাংসদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যদিও ভোটের মাঠে মুকুল ও মাকসুদ অপেক্ষায় এম এ রশীদের অবস্থান খুব একটা ভালো নয়। কারো কারো মতে, এবারের উপজেলা নির্বাচনে মূল লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মুকুল ও মাকসুদের মধ্যে। তবে, উপজেলা নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মতে, সব থেকে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। আগামী ৮ মে এই উপজেলা পরিষদের নির্বাচন।