আজ শুক্রবার, ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফতুল্লায় বন্যায় ভাঙ্গলো আরসিসি সড়ক

বন্যার প্রভাবে নারায়ণগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীর তীব্র চাপ ও স্রোতে ভেঙ্গে গেছে আরসিসি সড়ক। এতে নদীর পানি ঢুকে পড়ছে বসতি এলাকায়। গতকাল সকালে ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের চর বক্তাবলী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এ দৃশ্য।

স্থানীয়রা বলছেন, নদীর পানির তীব্র চাপ ও স্রোতে গত ৪দিন আগেই ভেঙ্গে যায় আরসিসি ঢালাইয়ের ওই সড়কটি। এতে এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে বন্যা আতঙ্ক।

এদিকে, সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ভেঙ্গে যাওয়া সড়কের দুই দিকের মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে। যদিও চলাচলের সুবিধার্থে বর্তমানে তা বাঁশ দিয়ে মেরামতের কাজ চলছে।

গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শওকত আলী দৈনিক সংবাদচর্চাকে জানিয়েছেন, ‘জনগণের সুবিধার্থে ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তাটি জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের কাজ চলছে। আশাকরি আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে জনগণ এই রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারবে। তবে গাড়ি চলাচল আগামী নভেম্বর ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেটসহ উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার প্রভাবে প্রতিনিয়তই বাড়ছে প্রতিটি নদ-নদীর পানি। চর বক্তাবলি এলাকার যেই অংশে রাস্তাটি ভেঙ্গেছে, তার প্রায় ১০০ ফুট দূর দিয়ে বয়ে গেছে ধলেশ্বরী নদী। বন্যার প্রভাবে বক্তাবলীর কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া ধলেশ্বরী নদীও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পানির উচ্চতা বেড়ে আশপাশের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকছে। ভেঙ্গে যাওয়া আরসিসি ঢালাইয়ের সড়ক দিয়ে বর্তমানে তীব্র স্রোতে ঢুকছে নদীর বানের পানি। যদিও তা শাখা খাল হয়ে বেড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৪ দিন আগে মধ্য রাতে হঠাৎ নদীর পানির তীব্র চাপে সড়কের ওই অংশটি ভেঙ্গে যায়। সড়কটি যেই স্থানে ভেঙ্গেছে তার নীচেই ড্রেন নির্মান করা হয়েছিল নদীর পানি স্বাচ্ছন্দে আসা যাওয়ার জন্য। তবে, ওই ড্রেনটি বেশ কিছুদিন ধরে আটকে ছিল। তাই নদীর পানি বেড়ে তীব্র চাপ ও স্রোতে আরসিসি রাস্তাটাই ভেঙ্গে গেছে।

এই বিষয়ে বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শওকত আলী দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষায় নদীর বাড়লে এই এলাকার চারিদিক দিয়ে বিভিন্ন ভাবে বর্ষার পানি আসে। বেশ কয়েক বছর আগে এই এলাকায় মানুষ চারিদিকে বসত গড়ে এবং তাদের সুবিধার্থে এখানে উঁচু রাস্তা নির্মান করা হয়। যেই স্থানে সড়কটি ভেঙ্গেছে, সেখানে পানি আসা যাওয়ার জন্য একটি ড্রেন লাইন করে দেয়া হয়েছিল। যাতে বর্ষার পানি এদিক দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারে। তবে, ড্রেনটি হয়তো কোন ভাবে আটকে গিয়েছিল। তাই এবারের বন্যার পানি হঠাৎ এতটাই বেড়েছে যে, পানির তীব্র চাপ এবং স্রোতে এইদিকের রাস্তাটাই ভেঙ্গে পানি ঢুকে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই রাস্তা টিকিয়ে রাখতে হলে এখানে কয়েকটি কালভার্ট তৈরী করা প্রয়োজন। কালভার্ট তৈরী করা হলে নির্বিঘ্নে পানি আসা যাওয়া করতে পারবে। তখন রাস্তা ভাংবে না। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো, বক্তাবলী এলাকার স্বার্থে এই রাস্তায় যেন একাধিক কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।’

ধলেশ্বরী নদীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, পানির উচ্চতা ও স্রোত ক্রমশই বাড়ছে। নদীর পশ্চিম পাড়ের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙ্গন দেখা যাচ্ছে। এতে যেকোন সময়ে নদীর পাড় ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে; এমন শঙ্কায় আছেন স্থানীয়রা।