আজ বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মা হওয়ার তিন মাস পরই নামতে চান অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে

অন্য কেউ বললে হয়তো কথাটা অবিশ্বাস্য মনে হতো। কিন্তু তিনি যে সেরেনা উইলিয়ামস! টেনিস কোর্টে বিস্ময় কম উপহার দেননি, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় বোধ হয় গর্ভে সন্তান নিয়ে গ্র্যান্ড স্লাম জয়! এটা যিনি করতে পারেন, তাঁর পক্ষে সন্তান জন্ম দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে আবার সেই গ্র্যান্ড স্লাম ধরে রাখার লড়াইয়ে নামা অসম্ভব কী! শুধু বলার জন্য বলা নয়, টেনিসের রানি এখন থেকেই রীতিমতো পরিকল্পনা করছেন, আগামী জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলার।

৩৬ ছুঁই-ছুঁই সেরেনার সঙ্গে গত ডিসেম্বরে বাগদান হয় রেডিটের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্সিস ওহানিয়ানের। এ বছর জানুয়ারিতে বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সপ্তম শিরোপা জেতেন সেরেনা। নিজের করে নেন জার্মান কিংবদন্তি স্টেফি গ্রাফকে পেছনে ফেলে টেনিসের উন্মুক্ত যুগে সর্বোচ্চ ২৩টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ডটিও। তারপর গত এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ন্যাপচ্যাটে নিজের একটি ছবি দিয়ে জানান দেন, তিনি ২০ সপ্তাহের সন্তানসম্ভবা! তার মানে ওই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনটা গর্ভে সন্তান নিয়েই জিতেছেন সেরেনা! পরে তাঁর ম্যানেজার কেলি বাস নোভাকও নিশ্চিত করেন, ‘সেরেনা মা হতে চলেছেন। এ কারণে চলতি বছর তাঁকে আর কোর্টে দেখা যাবে না। ২০১৮ সালে তিনি আবার টেনিসে ফিরবেন।’

কিন্তু সেই ফেরার পরিকল্পনাটা যে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতেই, তা ভাবা একটু অবিশ্বাস্যই ছিল। আগামী মাসেই সন্তানের জন্ম দেবেন সেরেনা। তারপর মাস তিনেকের মধ্যে এত বড় একটা টুর্নামেন্টে নামা সম্ভব? প্রস্তুতির ব্যাপারও তো আছে। কিন্তু সেরেনা যে সম্ভব-অসম্ভবের সীমাটাকে আগেই অনেক দূর নিয়ে গেছেন! নইলে কি আর ভোগ সাময়িকীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার মাথায় এ রকম একটা ভাবনা আছে। এটা (অস্ট্রেলিয়ান ওপেন) আমি সন্তান জন্ম দেওয়ার তিন মাস পরেই। এটাই আমার সবচেয়ে দুঃসাহসী পরিকল্পনা।’

কেন এ রকম একটা পরিকল্পনা করছেন, সেটাও বলেছেন সেরেনা। উন্মুক্ত যুগে সবচেয়ে বেশি একক গ্র্যান্ড স্লাম জেতার রেকর্ডটা তাঁর। তবে সব মিলিয়ে মার্গারেট কোর্ট এখনো রয়ে গেছেন তাঁর সামনে। অ্যামেচার ও উন্মুক্ত দুই যুগেই খেলা অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি কোর্টের নামের পাশে ২৪টি গ্র্যান্ড স্লাম। সেরেনার লক্ষ্য সব মিলিয়েই সেরা হওয়া, ‘যেহেতু আমার সামনে সুযোগ আছে মার্গারেটকে ধরার, আমি সেটা হারাতে চাই না। গর্ভ ধারণ করে যদি আমি কিছু পেয়ে থাকি, সেটা হচ্ছে নতুন শক্তি।’

সেই শক্তিই সেরেনার স্বপ্নের দিগন্তটা আগামী অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে আরও অনেক দূর। তবে এটাও জানেন, তিনি যে উচ্চতায় আছেন, সেখান থেকে সব সময় প্রত্যাশা পূরণ করে যাওয়া খুবই কঠিন। ক্যারিয়ারের বাকি সময়টার পরিকল্পনাও সেই বাস্তবতা মাথায় রেখেই করছেন সেরেনা, ‘এই খেলায় আপনি খুব সহজেই হারিয়ে যেতে পারেন। আমি যদি একবার হারি, তারপর আবার হারি, তাহলেই আমি শেষ। কারণ আমি তো আর এখন আর ২০ বছর বয়সী নই। তবে আমি আপনাদের এটুকু বলতে পারি, আমি কম জিতব না। হয় আমি জিতব, নয় খেলবই না।