আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যুবক বক্তা রফিকুল কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় যুবক বক্তা রফিকুল ইসলাম (২৬)কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন গাজীপুরের একটি আদালত। এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানায় মামলা করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার ( ৮ এপ্রিল) তাঁকে আদালতে তোলা হলে গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক মো. শরিফুল ইসলাম কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে রাষ্ট্রবিরোধী, উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগে বুধবার রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নেত্রকোনা থেকে আটক করে র‍্যাব।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে র‌্যাব-১-এর নায়েক সুবেদার আবদুল খালেক বাদী হয়ে গাছা থানায় বিতর্কিত বক্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলামের আদালতে আজ সকালে তাঁকে হাজির করা হয়। আদালতের রায় অনুযায়ী রফিকুল ইসলাম মাদানীকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল বুধবার বলেছিলেন, ‘বুধবার (গতকাল) নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা থেকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করা হয়।’

গত ২৫ মার্চও রাজধানীর শাপলা চত্বরে মোদিবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থেকে এই বক্তাকে আটক করেছিল মতিঝিল থানা পুলিশ। তবে কয়েক ঘণ্টা পরেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সেদিন মুক্তাঙ্গনে মোদিবিরোধী বিক্ষোভ করে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ। ওই বিক্ষোভে যোগ দেন রফিকুল।

র‌্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে, রফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তার ফোনে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু পর্নো ভিডিও পাওয়া গেছে। আসমা বেগম নামের এক নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন বলে যে দাবি করেছেন তা নিয়েও নানা তথ্য পাওয়া গেছে। ওই নারীর সঙ্গে রফিকুলের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়নি। বিয়ে নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল জানান, প্রতিবার ওয়াজের জন্য তিনি ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। ওয়াজ করেই মাসে ৫-৬ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। মাঝে মাঝে বিমান ও হেলিকপ্টারে গিয়ে ওয়াজ করেন। যারা তাকে নিমন্ত্রণ জানান, তারা এর খরচ বহন করেন।

‘শিশু বক্তা’ হিসেবে হঠাৎ পরিচিত হয়ে ওঠা রফিকুল ইসলাম কিছুটা অস্বাভাবিক খর্বকায়, বালকসুলভ চেহারা ও কোমল কণ্ঠস্বরের অধিকারী। তার নিজের ভাষ্যমতে, ‘১৯৯৫ সালে আমার জন্ম। কে বলছে আমি শিশু? আমার বয়স ২৬ বছর।’

রফিকুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোনায়। স্থানীয় স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হলেও পরে তিনি মাদ্রাসায় ভর্তি হন ও নূরানি, হেফজ পড়েন। এরপর আট বছর কিতাবখানায় পড়েন। মাদ্রাসার ছাত্র থাকার সময় বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করতেন রফিকুল। তিনি দাওরায়ে হাদিস পড়েছেন রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায়।

রফিকুল ইসলাম বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অঙ্গসংগঠন যুব জমিয়তের নেত্রকোনা জেলার সহসভাপতি। নেত্রকোনার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদ্রাসার পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন এই বক্তা’।