আজ মঙ্গলবার, ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আদমজী ইপিজেডে সংঘর্ষের ঘটনায় আরেক মামলা

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আরো একটি মামলা হয়েছে। সংঘর্ষে আহত হেলালের মা বিলকিস বেগম বাদী হয়ে শনিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। নাসিক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির ভাই, ভাগীনা ও সহযোগীসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২০-২৫ জন অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

মামলাটি দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানায়, আসামীদের গ্রেফতার চেষ্টা চলছে।

আদমজী ইপিজেডের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে গত ২৮ জানুয়ারি আদমজী ইপিজেডের নতুন বাজার পকেট গেইট এলাকায় নাসিকের বর্তমান কাউন্সিলর মাতিউর রহমান মতি ও সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৯ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির সহোযোগী এবং কিশোর গ্যাং লিডার হিসাবে পরিচিত আক্তার ওরফে পানি আক্তার বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০-৩০ জনকে আসামী করে মামলা (মামলা নং-৩৭) দায়ের করেন।

অপরদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হেলালের মা বিলকিস বেগম বাদী হয়ে ৩০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বাদী হয়ে আরো একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মতিউর রহমান মতির ভাই মাহবুব, ভাগীনা মামুন ওরফে ভাইগ্না মামুন, সহযোগী মানিক মাষ্টার ওরফে পেট কাটা মানিক, আশরাফ ওরফে তেল আশরাফসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আসামী করা হয়। এদিকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও দুই মামলার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মামলায় বিলকিস বেগম উল্লেখ করেন, তার ছেলে হেলাল ও তার কয়েকজন বন্ধু আদমজী ইপিজেডে মারুহিশা প্যাসিফিক ফ্যাক্টরিতে ব্যবসা করে আসছিলেন। উক্ত ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিবাদীরা গত ২৮ জানয়ারি দুপুরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ছেলে ও ছেলের বন্ধুদের উপর হামলা করে। এতে তার ছেলেসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। হামলার সময় নগদ ৫২ হাজার টাকা ও ছেলের গলায় থাকা স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয় বলেও মামালায় উল্লেখ করেন তিনি।

সংঘর্ষের ঘটনার পর নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডল জানান, আমার সমর্থকদের কুপিয়ে জখম করেছে বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমানের সমর্থকরা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার কর্মী-সমর্থকরা মার খাওয়া সত্বেও এবং ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থক হওয়া সত্বেও পুলিশ আমার কর্মী সমর্থকদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে। বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, তার আত্মীয়-স্বজন ও সহযোগীরা আদমজী ইপিজেডের ২৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসা করে আসছে। এতে করে বঞ্চিত আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীসহ সরকার দলীয় সমর্থক ও নেতাকর্মীরা তার উপর দিন দিন ফুসে উঠছে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মশিউর রহমান জানান, আদমজী ইপিজেডের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রথমে গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় মোঃ আক্তার হোসেন ও গত শনিবার রাতে বিলকিস বেগম বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার আদমজী ইপিজেডে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দেখে এলাকার জনাসাধারনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।