নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের আশপাশে বিভিন্ন বাজার ও দোকান নকল সিগারেট বিক্রি করছে বিক্রেতারা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হুবহু এসব নকল সিগারেট পান করার সময় বুঝতে পারেন অনেক ধুমপায়ী। নকল সিগারেট পানে আরও বেশী ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। নকল সিগারেট বাজারজাত করে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী লাভবান হলেও রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এ ব্যবসায়ীরা কৌশল অবলম্বন করে মহল্লার দোকানে দোকানে এ নকল সিগারেট বিক্রি করে বলে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে সম্পূর্ণ তামাক মুক্ত করার লক্ষ্য প্রতি বছর সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকারে। তবে প্রশাসনের নজরদারি কম থাকায় বাজারে নকল সিগারেট বিক্রি হয় বলে ধুমপায়ীদের দাবি। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত নকল সিগারেট বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যায়।
ধুমপায়ীদের অভিযোগ,দোকান থেকে সিগারেট কেনার পর তা পান করার সময় তারা বুঝতে পারেন নকল সিগারেট। এর আগে বোঝা সম্ভব নয়। কারণ অবিকল একই রকম সব কিছু। দোকানীরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট যেমন বেনসন, গোল্ডলিফ, স্টার, নেভি, হলিউড, ডারবিসহ বেশ কিছু বিদেশী নকল সিগারেট বিক্রি করেন লাভের জন্য। এসব দোকানীরা অতিরিক্ত লাভের জন্য জেনে শুনে নকল সিগারেট কিনেন বলে জানা গেছে। ধুমপায়ীরা বলেন, দোকানীদের নকল সিগারেট সম্বন্ধে বললে তারা নানা অজুহাত দেখায়। বলে, অনেক দিন আগের সিগারেট। তাই হয়তো ফ্লেভার একটু অন্যরকম লাগছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, আসল সিগারেটের থেকে বেশি ক্ষতি হয় নকল সিগারেটে। এই সিগারেট খেলে মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাধে। হতে পারে মস্তিস্কের রোগ। গর্ভবতী নারীদের অকালে গর্ভপাত হয়ে যায় বা বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেয়। এসব নকল সিগারেট পান করার কারণে মুখ, দাঁত, জিভ ও ঠোঁটের ক্ষতি করে। ধূমপান থেকে ফুসফুসে, গলার নালিতে কর্কট রোগ হবার আশঙ্কা অত্যন্ত প্রবল থাকে। শুধু নকল নয় আসল সিগারেটেও ক্ষতির উপাদান অনেক। মোদ্দা কথায়, ধুমপান মানেই বিষপান। আর তা যদি হয় নকল তবে বিষের পরিমাণ বেড়ে যায়।
বাংলা উইকিপিডিয়ার সূত্র মতে, সিগারেটের ধূমপানে নিকোটিনসহ ৫৬টি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বিরাজমান। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার সহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগও দেখা দেয়। গবেষণায় এসেছে যে, শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ে। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপান পুরুষের তুলনায় নারীর উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ৪০% শিশু, ৩৩% অধূমপায়ী পুরুষ এবং ৩৫% অধূমপায়ী নারী রয়েছেন।
আইনে বলা হয়েছে, নকল বা জাল ব্র্যান্ডরোল/ স্ট্যাম্প ব্যবহারের ক্ষেত্রে মূসক আইনে এবং অন্য কোন আইনের আওতায় কিরূপ শাস্তির বিধান আছে। মূসক আইনে নির্ধারিত পণ্যের গায়ে/সাথে যথানিয়মে ব্যান্ডরোল লাগানা না থাকলে, বা ব্র্যান্ডরোলের ব্যবহার সম্পর্কে যে বিধিবিধান রয়েছে, তা লংঘিত হলে, উক্ত পণ্য বাজেয়াপ্তসহ অর্থদ- আরোপের বিধান রয়েছে। এছাড়া স্পেশাল জজ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ দুই বৎসর পর্যন্ত কারাদ- প্রদানের বিধান রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ দন্ডবিধির ধারা ২৫৫ থেকে ২৬৩ এর আওতায় সরকারী স্ট্যাম্প (ব্যান্ডরোলসহ) জাল করা, জাল স্ট্যাম্প, স্ট্যাম্প খাঁটি মর্মে চালানোর চেষ্টা করা, পূর্বে ব্যবহৃত স্ট্যাম্পকে পুনরায় ব্যবহারের চেষ্টা করা- ইত্যাদি অপরাধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- ও অর্থদ- আরোপের বিধান রয়েছে বলে জানা গেছে।