সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
সরকারি ভাবে অস্থায়ী হাটের ইজারার আগেই আলীগঞ্জ মাঠের পাশে হাট বসানো হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের উত্তর পাশে ও নদীর পাড়ে প্রায় ২ শতাধিত গরু রাখা হয়েছে। গরু বেপারিরা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করার চেষ্টাও করছে। কেউ কেউ বলছে ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির আগেই হাট জমিয়ে দিবে। তার কাছে বৈধ অবৈধ বলে কিছু নেই।
ইজারার আগেই হাট বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির বলেন, হাট বসেছে তাতে কি হয়েছে। এখানে হাট বসে তাই গরু নিয়ে বেপারিরা চলে এসছে। হাট যেই পাক সবাই আমার লোক। হাটের এখনো ইজারা হয়নি। তবে যে পাবে সে করবে। আমি এতো কথা বলতে চাইতে না এখানে হাট হয় তাই তারা বসেছে।
অপরদিকে আলীগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি কাউসার আহম্মেদ পলাশের কাছে হাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঠের ক্ষতি হলে মামলা করবো। উচ্চ আদালতে নির্দেশে রয়েছে মাঠের পাশের স্থান জণসাধারনের জন্য। সেখানে অবৈধ হাট বসে গেছে দরপত্রের আগেই।
জানা যায়, আলীগঞ্জ মাঠের সাথে পশুর হাটের ইজারা না দেওয়ার দাবি জানিয়ে ১৫ জুলাই আলীগঞ্জ মাঠের পক্ষে আলীগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি কাউসার আহম্মেদ পলাশ স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনের বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে খেলার মাঠ ও মহাসড়কের সন্নিকটসহ তা উল্লেখ করা হয়।
সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৭ টি অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য দরপত্র আহ্বান করে ১ আগস্ট গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ নম্বরে তালতলা এবং ১৬ নম্বরের আলীগঞ্জ খেলার মাঠ সংলগ্ন পিডব্লিউডির খালি জায়গার জন্য পৃথক দুটি অস্থায়ী হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এরমধ্যে আলীগঞ্জের জন্য ৩৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং তাল তলার জন্য ৮৫ হাজার টাকা সম্ভাব্য ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে ইতোপূর্বে ৪৬.০০.০০০০.০৪১.০৩১.০৩৯.১৩-৩৩৪/১ (৮) নং স্মারকে এই মন্ত্রণালয়ে অধিনস্থ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়র/প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বরার নিষেধাজ্ঞা ও সতর্কতা পাঠিয়েছিলেন।
ওই নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছিলো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ, খেলার মাঠ, রেল লাইন, সড়ক ও মহাসড়কের সন্নিকটসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে পশুর হাট যাতে বসানো না হয়। এর ব্যাখ্যা হিসেবে জানানো হয়েছিলো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে পশুর হাট বসানো হলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটে, তেমনি খেলার মাঠে, সড়ক ও মহাসড়ক এবং রেল লাইনের সন্নিকটে ফাঁকা জায়গায় পশুর হাট বসালে পরিবেশ বিনষ্ট ও জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাই এসব স্থানে পশুর হাট না বসানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয় ওই মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব স্বাক্ষরিত স্মারকে।