আজ শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। শহর সংলগ্ন খোলাহাটী ইউনিয়নের গোদারহাট এলাকায় সোনাইল বাঁধের প্রায় ৩শ’ ফুট এলাকা ধসে যাওয়ায় শহরে পানি ঢুকেছে।
এদিকে শহরের ভেতর পানি প্রবেশ করায় জেলা প্রশাসক ও জজের বাসভবন, পিকে বিশ্বাস রোড, স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ, সান্তার পট্টি রোড, টেনিস কমপ্লেক্স ডেভিড কোম্পানীপাড়া, ভিএইড রোড, মুন্সিপাড়া, ব্রীজ রোড কালিবাড়িপাড়া, কুটিপাড়া, পূর্বপাড়া, সবুজপাড়া, পুরাতন বাজার, বানিয়ারজান, পুলিশ লাইন, নশরৎপুর, বোয়ালীসহ আশেপাশের এলাকায়  বিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ত্রিমোহিনী স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেললাইনের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুরের সাথে ঢাকাগামি রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন জানান, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বন্যার্তদের জন্য ১২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, বুধবার ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৪৬ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ৯০ সে.মি. বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে তিস্তার পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।
ঘাঘট নদীর পানির তোড়ে সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সুন্দরগঞ্জ-গাইবান্ধা সড়কে হাঁটুর উপরে উঠায় যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এদিকে শহরের ভেতর পানি প্রবেশ করায় আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে মূল শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মীরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।

এদিকে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের ২৩০টি গ্রামের ৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৯ হাজার ২৩০টি। বন্যা কবলিত মানুষের আশ্রয়ের জন্য ১১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে আশ্রয় নিয়েছে ৪২ হাজার ১০২ জন। বন্যা কবলিত এলাকার রাস্তাঘাট সব ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে কাঁচা রাস্তা ৯২ কি.মি., ৬টি কালভার্ট এবং ৪ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১ হাজার ২৪৬ হেক্টর। বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হযেছে ৪কি.মি.। এছাড়া ৩৩২টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ওই ৪ উপজেলায় জেলা ত্রাণ ভান্ডার থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ হাজার মে. চাল ও ১০ লাখ টাকা এবং ১০ হাজার কার্টুন শুকনা খাবার। ওইসব সামগ্রী ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের কাজ চলছে। তবে ক্ষতির তুলনায় বরাদ্দ খুবই কম।