আজ মঙ্গলবার, ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হাতুড়ে কানের চিকিৎসক!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া, কোর্টপাড়া, বিভিন্ন মার্কেট এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা কখনো রাতের বেলায় দেখা যায় কানের হাতুড়ি চিকিৎসক বিভিন্ন স্তরের লোকজন সড়কের পাশে বসে বা দাঁড়িয়ে কানের চিকিৎসা দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার সকালে শহরের চাষাড়া এলাকায় কানের একজন হাতুড়ে চিকিৎসক আলেপ আলী কানের চিকিৎসা দিচ্ছেন রহমত আলী নামের এক ব্যক্তিকে। লোহার চিকন চিকন কাঠি, কিছু ছোট ছোট বোতল তাতে রয়েছে তরল একাধিক কালারের কথিত ঔষধ। এমন যন্ত্রপাতি দিয়ে আলেপ আলী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারীদের চোখের সামনে নারায়ণগঞ্জ জেলা কোর্টপাড়ায় ও শহরের আশপাশ এলাকায় কানের হাতুড়ি চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে গেলেও তা প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা নিচ্ছেন না এমন অভিযোগ সচেতন মহলের অনেকের।

অনেকেই বলছেন, অল্প টাকায় কানের চিকিৎসা নেয়ার জন্য অনকেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে কথিত কানের হাতুড়ি এমন চিকিৎসকদের কাছে। আলেপ আলী কানের চিকিৎসক। তার সাথে কথা হয়। আলেপ আলী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তিনি তার ওস্তাদের কাছে কানের চিকিৎসা শিখেছেন। তিনি বলতে পারেন বোতলে রাখা ঔষধের নাম। কোন ঔষধের কতটুকু কার্যকারিতা তা ভাল বলতে না পারলেও চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। আলেপ আলী এ কাজের সাথে জড়িত প্রায় ১৯ বছর ধরে। তার ছেলে মেয়ে ৪ জন। তার সংসারের লোকজনের আহার খরচ সব এ চিকিৎসার আয় দিয়ে চলে। আলেপ আলী চলে যান। যাওয়ার আগে বলেন, আমি আর কিছু বলতে পারব না। চিকিৎসা নেয়া রহমত আলী বলেন, আমাদের তো ৫শ, হাজার, ২ হাজার টাকা ভিজিট দিয়ে নাক-কান গলার চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নেয়া সম্ভব হয় না। তাদের কাছে গেলে ঔষধ ছাড়াও ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা ভিজিট দিতে হয়। তাই ২০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে আলেপ আলীর মতো চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেয়া যায়। নাক-কান গলা বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নাক-কান গলা দেহের নরমস্থান।

নাকের সাথে কানের ও গলার সম্পর্ক রয়েছে। তাই নাক-কানের ও গলার সমস্যা দেখা দিলে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেয়া দরকার। তবে রাস্তার পাশে বসে যারা নাক কান গলার চিকিৎসা করেন তা মানুষের জীবন নিয়ে খেলা। এতে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কোর্টপাড়ায় ম্যাজিস্ট্রেটগন থাকেন। আদালতে প্রবেশ করতে ও বেরিয়ে যেতে প্রতিদিন তাদের চোখের সামনে হাতুড়ে ডাক্তারগণ তাদের অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। যাদের দায়িত্ব তারা ব্যবস্থা না নিলে আমরা কি ব্যবস্থা নেব। দু’এক জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে এ কোর্ট পাড়াসহ শহরের অশপাশ এলাকায় এমন হাতুড়ে চিকিৎসক থাকবে না।