আজ সোমবার, ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Important Notice: Dear Munna Khan, kindly settle Invoice #CIT-246357 ASAP. For any inquiries, feel free to contact us. Thank you! www.contriverit.com

মৌসুমীতে ধরাশায়ী জাপার রুহুল আমিন হাওলাদার

মৌসুমীতে ধরাশায়ী

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছিলেন হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা ও কেন্দ্রীয় মহিলা পার্টির সাধারন সম্পাদক অনন্যা হোসাইন মৌসুমী। তবে মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের কয়েক দিন পূর্বে পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বানিজ্য ও বিভিন্ন অভিযোগ এনে ফেসবুকে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। তিনি নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হতে নেতাদের বহু টাকা দেয়ারও অভিযোগ আনেন। তিনি তার স্ট্যাটাসে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানকে ইঙ্গিত করেন। মৌসুমীর দেয়া স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় ১ম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেয়া হয়েছিল। মামলা দেয়ার পর তাকে মনোনয়ন না দিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এরই মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে বসানো হয়েছে। সাধারন মানুষ মনে করছেন মহাসচিবের বিরুদ্ধে মৌসুমীর অভিযোগের ১ সপ্তাহের মধ্যেই তাকে সরিয়ে দেয়া হলো।
জানা গেছে, জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা মোতাবেক এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে রাঙ্গাকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে কেন তাকে সরানো হলো এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে পরিস্কার কোন তথ্য দেয়া হয় নি।
এরআগে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা ও জাতীয় মহিলা পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নারায়ণগঞ্জ জেলায় এটিই প্রথম মামলা।
তিনি ফেসবুকের স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার এলাকায় যারা রাজনীতি নিজেদের হাডানে রাজনীতি না করার কারনে খাল কেটে কুমির এনেছে। এখন সেই কুমিরকে খাবার দিতে দিতে নিজেরা খাবার হয়ে গেছে। জাতীয় পার্টির ৪/৫ জন নির্বাচনে বানিজ্য ভালোই করছেন। একজন মোটা হচ্ছে পয়সা পেয়ে। অন্যজন দিয়ে বোকা হচ্ছে। বারবার এই দালালগুলোই কখনও আওয়ামী লীগ, কখনও বিএনপির পা চাটা কুত্তা হয়ে সত্যিকার এরশাদ প্রেমিকদের সরিয়ে দিয়ে জাতীয় পার্টিকে আজকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে গেছে। আসলে জাতীয় পার্টির ত্যাগী আর তৃণমূল নেতারা পয়সার কাছে হেরে যাবে শুধুমাত্র মহাসচিবের ভূল সিলেকশনের কারণে। মহাসচিব যদি তার লোভ আর একক চালাকি বন্ধ না করে তবে আমরাও ওনাকে ক্ষমা করবো না। উনার দালাল গ্রুপ দিয়ে স্যারকে যা বোঝায় স্যার তাই বোঝেন। স্যার ইমোশনাল। এবার একটা কিছু করতে হবে’।
গত মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের বর্তমান জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার অনুগামী উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুল হক মামলাটি দায়ের করেন। ফেসবুকে মৌসুমীর বেশ কয়েকটি স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোনারগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁও থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম মিয়া।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, কিছুদিন যাবত অনন্যা হুসেইন মৌসুমী তার ফেসবুকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রচার করে মানহানি করছেন। তাই তার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। এছাড়াও মামলার বাদী বলেন, এ ধরনের লেখায় জাতীয় পার্টির মানহানি, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে।
এ বিষয়ে মৌসুমী বলেন, মহাসচিবের নির্দেশনায় আমার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। আমাকে ঘায়েল করে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এ মামলা করা হয়।
জানা গেছে, এরশাদের পালিত কন্যা অনন্যা হুসাইন মৌসুমী ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সোনারগাঁ উপজেলায় মনোনয়ন পান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। জাতীয় পার্টি থেকে ওই আসনে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন পান লিয়াকত হোসেন খোকা। মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টিকে আসন ছেড়ে দিলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোশারফ হোসেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা।