আজ বুধবার, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বন্দরে মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খুন

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খুন

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বন্দর উপজেলায় রুবেল (৩০) নামে এক সিএনজি চালককে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ সময় রুবেলকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন রুবেলের স্ত্রী শারমিন ও বড় ভাই আলামিন।

রোববার রাতে নবীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই নিহতের ছোট ভাই সুমন বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামী করে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ মামলার সূত্র ধরে এজাহারে উল্লেখিত ৪ আসামী সনেট (২৬), হৃদয় (২০), তানজিল (২৩), সাজেম (২২) সহ আরো দুইজন আব্দুল হাকিম (২০) ও রোমান (২০) কে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এজাহারভুক্ত অপর এক আসামী নাজমুল (২৮) পলাতক রয়েছে।

নিহত রুবেল মৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন ওরফে আজগরের ছেলে। সে পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিলো। তার হাসান নামে দুই বছরের একটি সন্তান রয়েছে। এদিকে রুবেলের মৃত্যুর সংবাদে পুরো এলাকায় শোকের মাতম ছড়িয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সনেট ওই এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে থাকে। সোমবার (২৭ আগস্ট) রাত ৯ টা দিকে সনেট কদমতলী এলাকার নিহত রুবেলের বাড়ি সংলগ্ন অপর এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ হাজার টাকা আনতে হৃদয়কে পাঠায়।

টাকা আনতে গেলে সেখানে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হৈ চৈ শুনে রুবেল ঘরের বাহিরে আসে এবং এ ঘটনার প্রতিবাদ করে। রুবেলের সাথে যোগ দেয় স্থানীয় পঞ্চায়েতের লোকজন।

তারা বলেন, এখানে কোনো মাদক ব্যবসা করা যাবেনা। যেন কেউ মাদক ব্যবসা না করতে পাওে আমরা এর ব্যবস্থা নিবো। মাদক ব্যবসা করলে প্রতিহত কররো এর বিচার করবো।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সনেট, নাজমুল, তানজিল, সাজেন, রুমান, হৃদয়, হাসিম গংরা সংঘবদ্ধ হয়ে রুবেলকে লোহার রড, লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় রুবেলকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে বড় ভাই আলামিন ও প্রতিবেশি সুমি আক্তার আহত হয়।

পরে রুবেলকে উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাকাতর দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত ধানমন্ডি এলাকায় একটি ক্লিনিকের আইসিসিওতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে রুবেল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর ২টা) লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মন্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় এজাহার ভুক্ত ৪ আসামীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর এক আসামী নাজমুল পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।