নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক গুরু ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাসাধক শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর ১২৮তম তিরোধান উৎসব। এ উপলক্ষ্যে নারায়নগঞ্জে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর আশ্রমে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিরোধান উৎসবে অংশ নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে বিপুল সংখ্যক লোকনাথ ভক্ত নারায়নগঞ্জ লোকনাথ আশ্রমে এসে পৌছেছেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজার হাজার লোকনাথ ভক্তের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে আশ্রম এলাকা। সকাল থেকে আশ্রমে পূজা অর্চনা, গীতা পাঠ, কীর্তন, রাজভোগ, বাল্য ভোগ ও প্রসাদ বিতরনের মধ্য দিয়ে তিরোধান উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের এ মহাপুরুষ ১৭৩০ খিস্ট্রাব্দে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসত মহকুমার অন্তর্গত চুরাশিচাকলা গ্রামে ধর্মীয় সাধক রামনারায়ণ ঘোষাল ও কমলা দেবীর ঘরে জন্মগহন করেন। রাম নারায়ণের চতুর্থ পুত্র শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারী বাল্যকাল থেকেই পুথিগত বিদ্যার প্রতি আগ্রহী ছিলেন না। আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের জন্য ১০ বছর বয়সে লোকনাথের পিতা সর্বশাস্ত্র পারদর্শী সন্ন্যাসী ভগবান গাঙ্গুলীর হাতে তুলে দেন তাকে। পরবর্তীতে তিনি জ্ঞান সাধনা ও সিদ্ধিলাভের জন্য হিমালয়ের দূর্গম পর্বতমালা, পবিত্র মক্কা শরিফ, কাশীধাম ও চন্দ্রনাথ পাহাড়ে দীর্ঘ সময় ধ্যান মগ্ন ছিলেন। শ্রী লোকনাথ স্থানীয় ডেঙ্গু কর্মকারের অনুরোধে বারদী এলাকায় আসেন এবং বারদীর বিখ্যাত নাগ পরিবার সাধনার জন্য তাকে এখানে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে দেন। শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বারদী আশ্রমেই অবস্থান করেছিলেন। ১৬০ বছর বয়সে তার অলৌকিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। তিনি বাংলা ১২৯৭ সালের ১৯শে জৈষ্ঠ দেহ ত্যাগ করেন। লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর তিরেধানের পর থেকেই হিন্দু সম্প্রাদায়ের লোকজন ব্যাপক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে প্রতি বছর পালন করে আসছে তিরোধান উৎসব।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারায়নগঞ্জ লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর তিরোধান উৎসব উদযাপন উপলক্ষ্যে আশ্রম কমিটি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। আশ্রম এলাকাকে সাজানো হয়েছে বর্ণাঢ্য সাজে। রঙ বে-রঙের আলোক সজ্জা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে আশ্রম এলাকা ।