সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জাতীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যান বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ।গত ৬ মে বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘এক পলাশেই সর্বনাশ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৭ মে) দুপুরে প্রেসক্লাবের হানিফ খান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন নারায়নগঞ্জ ৪ আসনে আগামী নির্বাচনে নৌকার অন্যতম কান্ডারি কাওছার আহমেদ পলাশ বলেন, গত ৬ মে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শ্রমিক নেতা পলাশ বলেন, আমি যেন মনোনয়ন না পাই সে জন্যই কিছু পত্রিকায় সিন্ডিকেট সংবাদ পরিবেশন করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আমার প্রতিপক্ষের হয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন,ইত্তেফাক,যুগান্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিরা মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ৬ মে ‘এক পলাশেই সর্বনাশ’, নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক লীগের নামে তান্ডব, চাঁদার জন্য ৩৬ শিল্প কারখানা বন্ধ, এলাকা ছাড়ছেন ব্যবসায়ীরা’ শীর্ষক যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা বানোয়াট ।
এ সংবাদে প্রচার করা হয়েছে আমার নেতৃত্বাধীন ৭৪ টি শ্রমিক সংগঠনের অত্যাচারে নাকি ফতুল্লার ৩৬টি শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কী অদ্ভূত নিউজ! আমার নেতৃত্বাধীন শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে লোড আনলোড শ্রমিক, পাথর শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিকরা, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি চালকেরাও রয়েছে। এসব শ্রমিকদের অত্যাচারে কীভাবে কোনো গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় জানি না। সংবাদে ৩৬ টি শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে দাবি করা হলেও রিপোর্টার সেই ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের নাম দিতে পারেনি। ৮টি প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, পাইওনিয়ার ছাড়া আর সকল গার্মেন্টস চালু আছে। মিথ্যার বেসাতি আর কাকে বলে।
সংবাদে বলা হয়েছে, পাগলা থেকে আলীগঞ্জ পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নাকি আমি ভেঙে ফেলেছি। অথচ পাগলার মেরী এন্ডারসন থেকে আলীগঞ্জ ফিশারিজ ঘাট পর্যন্ত বুড়িগঙ্গার তীরে ওয়াকওয়ে বানানোই হয়নি। যেটি বানানো হয়নি সেটি আমি ভাঙবো কীভাবে? এখানে স্থানীয় লোকজন অনেকেই ব্যবসা করে কোনো কোনো জায়গায় তাদের বিরুদ্ধে ওয়াকওয়ে ভাঙ্গার অভিযোগ আছে। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবে এসকল জায়গায় তাদের সাথে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে আমি একনেক অনুমোদিত কাজে বাধা দিচ্ছি। আলীগঞ্জে পুরোনো ঐতিহ্যবাহী একটি খেলার মাঠ রয়েছে। যেটি আলীগঞ্জ মাঠ নামে পরিচিত। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারও তার নিউজে আলীগঞ্জ মাঠ শব্দ দুটি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ আলীগঞ্জ মাঠ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মত্তরের এমনই পরিচিত একটি খেলার জায়গা। এ মাঠ ধ্বংস করে এখানে সরকারি ভবনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী প্রতি উপজেলায় একটি করে স্টেডিয়াম নির্মাণ এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মাঠ রক্ষায় আন্দোলনে নামলে আমি তাদের পাশে দাঁড়াই। বিষয়টি নিয়ে এলাকার ২৫ হাজার লোকের স্বাক্ষর নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্বারকলিপি প্রদাণ করে। দেশের বিখ্যাত ফুটবলাররা এ মাঠ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী আদালতের আশ্রয় নেয়। বিষযটি যখন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে তখন বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা আদালত অবমাননার শামিল।
তিনি বলেন, খবরে চার শ্রমিক নেতাকে আমার চার খলিফা আখ্যায়িত করে তাদের সম্পর্কে ব্যাপক মিথ্যাচার করা হয়েছে। একই ধরনের মিথ্যাচার এর আগে ইত্তেফাক, যুগান্তরে প্রকাশিত সিন্ডিকেট সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ প্রতিবেদনেও লেখা হয়েছে।
পলাশ আরো বলেন, আমি কোনো ধরনের অপরাধী কর্মকান্ড, কোনো ধরণের চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। আমি শ্রমিক রাজনীতি করি। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি। শেখ হাসিনার রাজনীতি করি। আমি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। প্রতিবাদ করেই যাব। অপপ্রচার করে আমাকে থামানো যাবে না। আল্লাহ ছাড়া কেউ আমার কন্ঠ রোধ করতে পারবে না।