আজ রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কে এই রাম রহিম?

ধর্ষণের অভিযোগে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতের বিতর্কিত ‘ধর্মগুরু’ গুরমিত রাম রহিম সিং ১৯৬৭ সালের ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্মেছিলেন রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর জেলার শ্রীগুরুসর মোদিয়া গ্রামে। ২৩ বছর বয়সে ডেরা সচ সউদার প্রধান হওয়ার পর হঠাৎ করেই যেন বদলে যায় তাঁর জীবন।
১৯৪৮ সালের ২৯ এপ্রিল ডেরা সচ সউদা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রধান কার্যালয় হরিয়ানার সিরসা জেলায়। ভারতজুড়ে এই ডেরার প্রায় অর্ধশত আশ্রম রয়েছে। ডেরাপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর রাম রহিম হয়ে উঠলেন ব্যতিক্রমী এক ‘ধর্মগুরু’। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে ‘আধ্যাত্মিক সাধু’, ‘মানবপ্রেমী’, ‘বহুমুখী গায়ক’, ‘চিত্র পরিচালক’, ‘অভিনেতা’, ‘সংগীত পরিচালক’, ‘লেখক’সহ নানা পরিচিতি রয়েছে। অভিনেতা, পরিচালক ও লেখক হিসেবে জনপ্রিয়তার কারণে ২০১৬ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। বেশ কয়েকটি গানের অ্যালবামও বেরিয়েছে রাম রহিমের। এর মধ্যে হাইওয়ে লাভ চার্জার নামের অ্যালবামটি তিন দিনেই ৩০ লাখ কপি বিক্রি হয়ে যায় বলে খবর রয়েছে। এসব ছাড়াও নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনি। এক দিনে সর্বোচ্চ পরিমাণ রক্তদানের আয়োজন করে গিনেস বুকে নামও লিখিয়েছে তাঁর ডেরা।
এই গুরমিত রাম রহিম সিং ছিলেন তাঁর মা-বাবার একমাত্র সন্তান। সচ্ছল পরিবারেই জন্ম তাঁর। ডেরা সচ সউদার সাবেক প্রধান শাহ সত্যম সিং গুরমিতকে ডেরায় নিয়ে যান। ১৯৯০ সালে সত্যম সিং ২৩ বছর বয়সী রাম রহিমকে তাঁর উত্তরসূরি ঘোষণা করেন। এরপর ক্রমেই বেড়েছে ডেরার ভক্ত আর আশ্রমের সংখ্যা। একটা পর্যায়ে রাম রহিম ভারতের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের তালিকায় চলে আসেন এবং সরকার তাঁকে জেড-প্লাস নিরাপত্তা দেয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনাভিস তাঁকে বছরের সবচেয়ে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ব্যক্তি হিসেবে পুরস্কৃত করেন। তবে খ্যাতি আর ভক্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বিতর্কও যেন পিছু ধাওয়া শুরু করে তাঁর। ২০০২ সাল থেকে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আসতে শুরু করে। তবে ডেরারই এক সাধ্বীর বেনামি চিঠিতেই পতনের সূচনা রাম রহিমের।