পিরোজপুরে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ
পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে বেড়িঁবাধের সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বালিপাড়া পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন ফকিরের বিরুদ্ধে। এভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির ধূয়া তুলে এবং ডাব্লুউ এমসির অন্যান্য সদস্যদের না জানিয়ে গোপনে একের পর এক সরকারি গাছ বিক্রি করার অভিযোগ তুলেছেন কমিটির অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বালিপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব চরবলেশ^র ছোরের খালের উপর নির্মিত স্লুইচ গেটের দুপাশে এবং কচা নদী সংলগ্ন পাশর্^বর্তী বেঁড়িবাধের পাশে রেইন্ট্রি, চম্বল, মেহেগনি সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১৭ থেকে ১৮টি গাছ রয়েছে। গত ৩ মাস আগে এখানে বেঁড়িবাধের রাস্তা নির্মান করার সময় ২টি চম্বল ও মেহেগনি গাছ বিক্রি করে। এর আগে তিনি স্লইচগেটের উত্তর পাশের্^ রেইন্ট্রি, চম্বল ও একটি গুলব গাছ বিক্রি করে। যার বাজার মূল্য ছিল প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা। আর এ পুরো টাকাই তিনি কমিটির অন্যান্য সদস্যদের না জানিয়ে একা নিজেই হজম করেছেন। এই গাছ গুলো বিক্রির সময় স্থানীয়দের প্রশ্নের সম্মুখিন হলে তিনি কখনো পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির ধূয়া তুলে আবার কখনো মসজিদ মাদ্রাসায় দান করার কথা বলে এড়িয়ে গেছেন।
এদিকে, ৬ মার্চ সকালে (মঙ্গলবার) স্লুইচ গেটের উত্তর পাশ থেকে দুটি চম্বল গাছ কাটতে দেখে স্থানীয়রা প্রশ্ন করলে গাছ কাটা শ্রমিকরা জানান, গাছ দুটি ৫ হাজার ৫’শ টাকায় চরবশে^র গ্রামের বাবুল নামে এক ব্যক্তি দেলোয়ার হোসেন ফকিরের কাছ থেকে কিনেছেন। যদিও গাছ দুটির বর্তমান বাজার মূল্য ছিল প্রায় ১০ হাজার টাকা। এদিকে গোপনে সরকারি গাছ বিক্রির কথা আশপাশ জানাজানি হলে ৭ মার্চ (বুধবার সকালে) গাছ কাটা শ্রমিকদের দ্রুত ওখান থেকে গাছ কেটে সরিয়ে নেয়ার কথা বলে দেলোয়ার হোসেন ফকির।
ডাব্লুউ এমসির সদস্য আব্দুল বারেক হাওলাদার বুধবার সকালে অভিযোগে জানান, দেলোয়ার হোসেন ফকির যে কমিটির সেক্রেটারি ঐ কমিটির আমি একজন সদস্য। অথচ আমাদের কোন সদস্যকে না জানিয়ে এবং সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে তিনি গোপনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২টি গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও তিনি চরবলেশ^র ছোরের খালের স্লুইচ গেট এলাকা থেকে এক এক করে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের আরো ৫টি সরকারি গাছ বিক্রি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ ভক্তের স্ত্রী জানান, স্ল্ইচ গেট করার জন্য আমরাই ওখানে জমি দিয়েছি। আর এ গাছ গুলোর অধিকাংশই আমাদের রোপন করা। দেলোয়ার ফকির কখনো আমাদের নাম ভাঙ্গিয়ে আবার কখনো কর্তৃক্ষের নাম বলে গাছ গুলো বিক্রি করছেন। আমরা হিন্দু মানুষ তাই ভয়ে এদের সামনে মুখ খুলে কথা বলতে পারিনা।
৪ নং চরবলেশ^র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, গাছ বিক্রির বিষয়ে আমাদের আগে তিনি কিছুই জানাননি।
এ ব্যাপারে বালিপাড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, গাছ বিক্রি করার ব্যাপারে আমাদের পরিষদকে কোন অবহিত করা হয়নি।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন ফকির বলেন,গাছ বিক্রয় করেছে কৃষ্ণ ভক্ত নামের এক লোক এজায়গা তার নিজের আমি কোন গাছ বিক্রয় করিনি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে দেলোয়ার হোসেন ফকির বলেন আমি সমিতির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি, এ্যাড এম মতিউর রহমান এর অনুমতি নিয়ে গাছ বিক্রয় করেছি । অভিযুক্ত দেলোয়ার ফকির জানান ভেড়ীবাধের গাছ আমাদের এখানে সরকারের কোন অংশ নাই।
পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইদ আহম্মদ বুধবার দুপুরে জানান, এই গাছ বিক্রির ব্যাপারে আমরা আগে এবং এখন কোন অনুমতি দেয়নি তাকে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে এভাবে সরকারি গাছ বিক্রির প্রমান পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।