স্টাফ রিপোর্টার :
নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে শ্রমিকদের বেতনসহ অন্যান্য বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সোয়াদ নামে একটি রপ্তানীমূখী পোষাক কারখান বন্ধ করার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল সড়ক ৪ ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শ্রমিকরা এ সড়কের আদমজী ইপিজেড গেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্নভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এসময় এ সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হওয়ার ফলে যাত্রী সাধারন চরম ভোগান্তির শিকার হয়। পরে বেপজা কর্তৃপক্ষ এবং শিল্প পুলিশ-৪ এর কর্মকর্তারা ঐ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে আগামী ২২ আক্টোবর শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করার আশ্বাস প্রদান করলে শ্রমিকরা রাস্তা ছেড়ে চলে যায়। তবে এসময় বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং বেপজার নিরাপত্তা রক্ষীদের শান্তিপূর্ন অবস্থানের কারনে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানায়, বৃহস্পতিবার কারখানার কর্মঘন্টা শেষ হওয়ার পর শ্রমিকরা সবাই চলে গেলে রাতে কোন ঘোষণা ছাড়াই কারখানা কর্তৃকপক্ষ একটি নোটিশ টানিয়ে বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। যথারীতি শ্রমিকরা শনিবার সকালে কর্মক্ষেত্রে আসলে দেখতে পায় কারখানাটি বন্ধ করে একটি নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে করে শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে শ্রমিকরা নিজেদের পাওনা আদায়ে নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল-আদমজী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে করে শিমরাইল-আদমজী-চাষাড়া সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শ্রমিকদের এই বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বেলা দেড়টায় অক্টোবর মাসের ২২ তারিখে সকল পাওনা পরিশোধ করা হবে শর্তে শ্রমিরা অবরোধ উঠিয়ে নেয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে সোয়াদ কারখানার শ্রমিকদের সাথে কথা বলে যানা যায়, কারখানাটি কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৃহস্পতিবার রাতে কাজ শেষে শ্রমিকরা চলে যাওয়ার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারখানার শ্রমিক মেহেদী হাসান, সানি এবং রাশেদসহ অন্যান্য শ্রমিকরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে, কারখানার কর্তৃপক্ষ কোন কিছু না জানিয়েই কারখানায় তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আমাদের চলতি মাসের বেতন, প্রভিডেন্ড ফান্ড, ছুটির টাকাসহ সকল পাওনা পরিশোধ ছাড়াই হঠাৎ কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে।
এসময় বেপজার ব্যবস্থাপক (কমার্শিয়াল) মো: শরিফুল ইসলাম, শিল্প পুলিশ-৪’র পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব ও সোয়াদ সোয়াদ গার্মেন্টসের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া শ্রমিকদের সাথে দীর্ঘ আলোচনার পর শ্রমিকদের দাবীগুলো শুনে সোয়াদ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আগামী ২২ অক্টোবর সকল পাওনা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিলে শ্রমিকরা রাস্তা ছেড়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে বেপজার জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক নাজমা বিনতে আলমগীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানায়, শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সর্বদা বেপজা কাজ করছে। সোয়াদ কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু শ্রমকিদের পাওনা দেওয়া হবে না এটা ঠিক না। শ্রমিকদের চলতি মাসের বেতনসহ সকল পাওনা অক্টোবর মাসের ২২ তারিখের মধে দিয়ে দেওয়া হবে। তাদের কোন পাওনাই বকেয়া রাখা হবে না। এই শর্তে তারা রাজিও হয়েছে। তারা এখন অবরোধ তুলে নিয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।