নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের হাতে মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের সোর্স চাঁদাবাজ ধর্ষনসহ একাধিক মামলার আসামী রনিকুমার দাস (৩২) কে গ্রেপ্তার হয়েছে। সে ফতুল্লার এনায়েত নগর ধর্মগঞ্জ শীষমহল এলাকার মনোরঞ্জন দাসের ছেলে।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লার শীষ মহল এলাকার মাছ বিক্রেতা মনোরঞ্জন দাসের ছেলে রনি কুমার দাস। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগের পাহাড়। সে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে। সে এলাকার নিরীহ মানুষকে হয়রানি আসছে এমনটাই জানায় ভুক্তভুগিরা। ফতুল্লার লালপুর, পৌষার পুকুর পাড়, শীষ মহল, হরিহরপাড়া, আমতলা, মুসলিম নগর, বিসিক, ভোলাইল, কাশীপুর, ধর্মগঞ্জ ফতুল্লার লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই মাদক বিক্রি ও মাদক সেবনসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সে নিজেকে কখন পুলিশ কখন সাংবাদিক কখন বা রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ে বিভিন্ন মহলে ঘুরে বেড়ায়। তার হাতে প্রায় সময়ই হ্যান্ডকাপ দেখেন সাধারন মানুষ। সে ফতুল্লার এলাকায় নিজেকে ডিবি‘র লোক পরিচয়ে দাবড়িয়ে বেড়ায়। তার সাথে রয়েছে ফতুল্লার কিছু অসাধু পুলিশ। যিনি রনি দাস কে বেশি বেশি আদর দিয়ে মাথায় উঠিয়েছে তিনি হলেন এএসআই মো. জুলফিকার আলী। এএসআই মো. জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি পার্টনারে বাসা নিয়ে রনিকে দিয়ে লোকজন ধরে এনে নিযার্তন করেন। জুলফিকার আলীর হাল হকিকত জেনে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আলহাজ্ব শাহ মো. মঞ্জুর কাদের পিপিএম. তাকে বদলী করিয়ে দেয়। এরপরও পেয়ারের রনির টানে জুলফিকার ফতুল্লা এলাকায় আসেন। এছাড়া অরো কয়েকজন এএসআই রয়েছে যারা রনিকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই পুলিশের সহায়তায় রনি আজ বেপরোয়া ও মাদক সেবী হয়েছে বলে জানান এলাকার সুধী মহল।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত ৮ জুন রাতে তাকে ২শ’ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে আরো তথ্য উদঘাটন করার জন্যে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
পুলিশ জানায়, ধর্মগঞ্জ শীষ মহল এলাকায় মন্দিরে আগুন এবং একটি গোডাউনে আগুন দিয়ে মুসলমান ও হিন্দুর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে আইন শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার লক্ষে সে আগুন লাগায়। এই মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাসদাইর এলাকার মো. শামীম মিয়া বাদী হয়ে ২০১৬ সালে ২৬ আগষ্ট একটি চাঁদাবাজির মামলা করেছে। এই মামলায় ৩নং আসামী রনি। মামলানং ৯১(৮)১৬। ধারা৩৪২/ ৩২৩/ ৩০৭/৩৮৫/ ৫০৬/৩৪ দ:বি: ।
আরো জানা যায়, শীষমহল ধর্মগঞ্জ এলাকায় তার নিজ বাসার পাশে একই ধর্মের তার ভাগ্নি কে জোর পূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করেছে রনি। গত ১৩ মে ২০১৭ইং ভোর ৫টায় পারবতী রানী দাসের মেয়ের জামাতা ফতুল্লা বাজারে মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে যায়। এসময় মনোরঞ্জন দাসের ছেলে লম্পট রনি কুমার দাস পারবতী রানী দাসের মেয়ের ঘরে গিয়ে তার মেয়েকে জোর পূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করে। এ সময় পারবতীর ভাই ভাগ্নির চিৎকার শুনে ঐ ঘরে গেলে রনি দাস পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানায় পারবতী রানী দাস বাদী হয়ে গত ২০১৭ ই্ং সালের ১৩ মে দুপুর ১২টায় মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং- ৪৬(৫) ১৭ । ধারা নারী ওশিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/২০০৩)এর ৯(৪)(খ)।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শীষ মহল এলাকায় অভিযান চালিয়ে রনি কুমার দাস কে ২শ’ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে গ্রেপ্তার হওয়ায় ফতুল্লার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন মহলের লোকজন এসে পুলিশের কাছে রনির বিরুদ্ধে একাধিক মৌখিক অভিযোগ করে। শীষ মহল এলাকার পঞ্চায়েত কমিটি ও পূজা উদযাপন কমিটির লোকজন জানায়, রনি সারা রাত ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন বাড়ির গলিতে দাড়িয়ে থাকে। তার জন্য যুবতী মেয়েরা বাহিরে বেড়াতে পারে না। বাসায় বাসায় উঁকি দেয়। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ফতুল্লা শীষ মহল এলাকার হিন্দু পরিবার। তার মায়ের জন্য রনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে রনির মা জানায় তার ছেলে রনি নির্দোষ তাকে পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হয়েছে।
ফতুল্লার সাংবাদিক মহল জানান রনিকে যে শেল্টার দেয় তার বিরুদ্ধের পুলিশের ব্যবস্থা নেয়া উচিত যেন আরেকটি রনি সৃষ্টি হতে না পারে।