আজ বুধবার, ১৩ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সোনারগাঁয়ে মুরগী পালনে স্বাবলম্বী সাইফুল ইসলাম

সোনারগাঁ প্রতিনিধি: আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে ও বেকারত্ব দুরীকরনের পাশাপাশি উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সামিল নিজের যোগ্যতায় পোল্ট্রি ব্যবসা করে স্বাবলম্বী যুবক সাইফুল ইসলাম মোল্লা। শিক্ষা সততা ধর্য্য ও কঠোর পরিশ্রমে নিজ কর্ম দক্ষতায় স্বাবলম্বী হওয়া যায় এরকম একটি উদাহরন সৃষ্টি করেছেন শিক্ষিত যুবক সোনারগাঁ উপজেলার কোরবানপুর গ্রামের মৃত হাসেম মোল্লার ছেলে সাইফুল ইসলাম মোল্লা।

তিনি মোল্লা পোল্ট্রি ফার্ম নামে পাশাপাশি দুটি মুরগী খামারে মুরগী পালন করে সংসার জীবনে ব্যাপক সফলতা এনেছেন।

তিনি যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে তার নিজের বাড়ির পাশের ২৫ শতাংশ এক খন্ড জমিতে ২০০৭ সালে একই সঙ্গে দুটি মুরগী খামারে ৪ হাজার মুরগী নিয়ে প্রথম অগ্রযাত্রা শুরু করেন। সেই থেকে পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। বর্তমানে তার দুটি খামারে প্রায় ২৫ লাখ টাকার লেয়ার মুরগী রয়েছে।

বিগত কয়েক বছরে তিনি মুরগী পালন করে লাখ লাখ টাকা আয় করে এখন স্বাবলম্বী ও এলাকায় একজন সফল যুবক সাইফুল ইসলাম মোল্লা।

তিনি জানান, ২০০৫ সালে এইচএসসি পাশ করার পর সরকারী চাকুরীর আশায় দৌড়ঝাঁপ না করে চলে যান যুবউন্নয়ন অধিদপ্তরে মুরগী পালনের প্রশিক্ষন নেওয়ার জন্য। প্রশিক্ষন শেষে বাড়ী ফিরে প্রবাসে অবস্থানরত বড় ভাইদের কাছ থেকে প্রথমে ৫ লাখ টাকা পুঁজি সংগ্রহ করে নিজ বাড়ির পাশে ২৫ শতাংশ জমিতে দুটি টিনসেট ঘরে আলাদা ভাবে পাঁচ হাজার সেট মুরগী পালন শুরু করেন।

বর্তমানে মোল্লা পোল্ট্রি ফার্ম নামে তার খামার দুটিতে পাঁচ হাজার লেয়ার মুরগী রয়েছে। তিনি বলেন কোন এনজিও সংস্থা ও সরকারী ভাবে ঋণ সহায়তা পেলে দীর্ঘ প্রজেক্ট নিয়ে আরো ব্যাপক আকারে খামার গড়ে তুলতে পারব। তিনি অভিযোগের সূরে বলেন উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মুরগির বাজার দর অনেকটা কমে যাওয়ার ফলে পোল্ট্রি শিল্পের খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এশিল্পে ব্যবহৃত ভুট্টার দাম বিগত বছরগুলোর তুলনায় কয়েক গুন বেশি বেড়ে যাওয়া। বেড়ে গেছে খাবারসহ অন্যান্য জরুরি ঔষদসহ সংশ্লিষ্ট সব কিছুর দাম। খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার তুলনায় মুরগি ও ডিমের দাম বাড়েনি।

প্রতিদিন আমার খামার দুটিতে মুরগীর খাদ্য বাবদ দুই হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন পোল্ট্রি ফার্মে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় খাবারের দাম বাবদ। একটি খামার পরিচালনায় যেই পরিমান ব্যয় হয় তার শতকরা ৭০ ভাগ ব্যয় হয় খাবারের পেছনে। এই অবস্থায় খাবারের দাম বেড়ে গেলে একই হারে মুরগি ও ডিমের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। একই হারে মুরগি ও ডিমের দাম না বাড়লে লাভের পরিবর্তে লোকসান গুনতে হয় খামারীদের।

দুটি খামার পরিচালনায় নিজ শ্রমের পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা করে মাসিক বেতনে স্থানীয় কোরবানপুর এলাকার যুবক সাকিন মিয়া (২২) আনোয়ার হোসেন (৪২) আল আমিন (২৩) ও ইয়াকুব আলী (২৪) নামের চারজনকে শ্রমিক হিসেবে তার খামারে কাজ দিয়েছেন তিনি।

তাকে দেখে এখন উৎসাহিত হয়ে কাজিরগাঁও, মঙ্গলেরগাঁও, দুর্গাপ্রসাদ, দুধঘাটা, নয়াগাঁও, পাঁচানীসহ আশপাশের এলাকায় এখন মুরগী পালনে উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক।

সোনারগাঁ উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, তার মত অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক চাকুরীর পেছনে না ঘুরে মুরগী পালন করে যে সাবলম্বী হওয়া যায় তা প্রমাণ করেছেন সফল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম মোল্লা। তার সফলতা দেখে স্থানীয় এলাকার অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক মুরগী খামার করে নিজেদেরকে সাবলস্বী করার চেষ্টা করছে।