নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিন মল্লিকের পাড়া গ্রামের নারায়ণদিয়া বায়তুল জালাল জামে মসজিদের ইমাম দিদারুল ইসলামকে মাত্র ৪০ হাজার টাকার জন্য গত ২২ আগস্ট গলা কেটে হত্যা করেছে তারই বন্ধু।
তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ইতোমধ্যে আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত ইমাম খুলনা তেরখাদা থানার রাজাপুর গ্রামের আফতাব ফরাজির ছেলে।
সূত্রে জানা গেছে, মূলত আর্থিক লেনদেনের কারনেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত ইমামের সাথে তার চতুর বন্ধু ওহিদুর জামান (২৮) এর সাথে ব্যবসায়ীক লেনদেন ছিল। পরবর্তীতে নিহত দিদারুল জানতে পারে, তার বন্ধু যে ধরনের ব্যবসা করতে চায় এসব ব্যবসা বৈধ নয়। পরে সেই ব্যবসা থেকে সরে আসতে এবং বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে দেওয়া টাকা ফেরত চায় দিদারুল। এর পর থেকেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা সাজায় ওহিদুর জামান। হত্যার আগের দিন ২১ আগস্ট বিকলে দিদারুলের সাথে দেখা হয় ওই খুনির। হত্যার পরিকল্পনা সাজিয়ে পরের দিন ২২ আগস্ট রাতে এশার নামাজের পর রাতের খাবারের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খাওয়ানো হয় দিদারকে। পরে দিদারুল অচেতন হয়ে পড়েন। পরে চাপাতি দিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করে একটি চিরকুট লিখে ফেলে রেখে দরজায় তালা দিয়ে ঘাতক পালিয়ে যায়।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এই টাকা থেকেই ঐশর্ঘকে বিনিয়োগের জন্য টাকা দেয় দিদারুল। পরে অবৈধ ব্যবসা করবে জেনে সেখান থেকে সরে আসতে চাওয়ার পাশাপাশি নিজের টাকাও ফেরত চায় দিদারুল। আর এতেই পরিকল্পনা করে তাকে হত্যা করা হয়।
আরেকটি সূত্র জানায়, হত্যাকান্ডে পর ফরিদপুরের দিকে গাঁ ঢাকা দেয় ঐশর্ঘ। হত্যকান্ডে পর থেকে নিজের পরিচয়ও একের পর এক গোপন করে সে। শেষ পর্যন্ত নিজের পরিচয় ঐশর্ঘ হিসেবে জাহির করলেও পুলিশ তার সঠিক পরিচয় খুঁজে বের করে।
স্থানীয় লোকজন ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানান, নারায়ণদিয়া বায়তুল জালাল মসজিদের আগের ইমাম চলে যাওয়ায় ২৬ জুলাই পাশের ছোট কাজিরগাঁও মসজিদের ইমাম দিদারুল এখানে নিয়োগ পান। এই মসজিদে জুমার নামাজ পড়িয়ে তিনি প্রশিক্ষণের কথা বলে ছুটি নেন।
গত ২১ আগস্ট বিকেলে ছুটি থেকে ফিরে আবার নামাজ পড়ান তিনি। এরপর ২২ আগস্ট ভোরে মুসল্লিরা ফজরের নামাজ আদায় করতে এসে ইমাম না আসায় তার রুমে গিয়ে ইমামের মরদেহ দেখতে পান। তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে মাদারীপুর থেকে নিহত ইমামের খুনি ওহিদুর জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে ঘটনা স্থল থেকে ২ টি কোকের বোতল ও রক্ত মাখা লুঙ্গি উদ্ধার করা হয়।