আজ সোমবার, ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাঈদ-কালামের পূর্ণ সমর্থনে আত্মবিশ্বাসী আকরাম

সাঈদ-কালামের

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী এস এম আকরাম আত্মবিশ্বাসী, রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজেও। কেননা এই আসনে ঐক্যফ্রন্ট বিএনপির আরও দুই হেভিওয়েট নেতাকে মনোনয়ন দিয়েছিলো।

যারা হলেন, তিন বারের সাবেক সংসদ সদস্য এড. আবুল কালাম ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ আহমেদ। যদিও কেন্দ্র থেকে অনেক আগেই গ্রীন সিগন্যাল পেয়েছিলেন এস এম আকরাম। সবশেষে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয় তাকে। এতে মোটেও মন খারাপ না মনোনয়ন বঞ্চিত অন্য দুই প্রার্থীর বরং তারা আকরামকে মনোনয়ন দেয়ায় আরও খুশী হয়েছেন। মনোনয়ন পাওয়ার পর আকরাম নিজে কালামের কার্যালয়ে গিয়ে আলোচনা সভা করেন। পরে কালাম পূর্ণ সমর্থন জানান আকরামকে। এরপর কমরেড সাঈদ, আকরাম ও কালামকে সাথে নিয়ে আরেকটি আলোচনা সভা করে বলেন আমরা সবাই ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থীর পক্ষে থেকে কাজ করবো।

জানা যায়, কালাম ও সাঈদের পূর্ণ সমর্থন পাওয়ায় পর অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন এস এম আকরাম। প্রতিক বরাদ্দের পর ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জায়গায় গনসংযোগ করেছেন তিনি। ভোটের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত আকরামের সাথে থাকার কথা জানিয়েছেন কালাম ও সাঈদ। সেই হিসেবে জেলার ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত অন্যান্য আসনের প্রার্থীদের চেয়ে একটু বেশী উৎফুল্ল এস এম আকরাম। কারণ জেলার প্রত্যেকটি আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থী ও মনোনয়ন বঞ্চিতদের এখনও পর্যন্ত একসাথে আলোচনা কিংবা একসাথে নির্বচনী কোন কাজ করতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থী ও মনোনয়ন বঞ্চিতরা একত্রে কাজ করার অঙ্গিকার করেছেন।

এ বিষয়ে এড. আবুল কালাম বলেন, আমাদের রাজপথের আন্দোলন আর নির্বাচনী আন্দোলনে কোন পার্থক্য নেই। আমাদের দল থেকে প্রার্থী নির্বাচন করে দেয়া হয়েছে আকরাম সাহেবকে। উনার প্রতি নেতাকর্মীদের কমবেশী দ্বিধা ছিলো। সবাইকে নিয়ে একত্রে কাজ করার জন্য পাশাপাশি ধানের শীষ রক্ষা ও বিজয় লাভের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার পর আকরাম সাহেব আমার কাছে আসেন।

আকরামকে সমর্থন দিয়ে কালাম আরও বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন রাজনীতি করি না। দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে আমি দলের কর্মী। দল থেকে যখন যাকে নির্বাচিত করেছে আমি তার জন্যই সবসময় কাজ করেছি। এ নির্বাচনে আকরাম ভাইকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সুতরাং আমি তার হয়েই কাজ করবো। আকরাম ভাইয়ের নির্বাচনী কার্যালয়কে এখন থেকে আমরা নিজের কার্যলয় হিসেবে ব্যবহার করবো। বিএনপির যে নেতা-কর্মীরা উনার সাথে সম্পৃক্ত নন, আমার সাথে সম্পৃক্ত। তারা সবাই আকরাম সাহেবের হয়ে কাজ করবে। এবং আমরা দুই থেকে এক হয়ে গেলাম।

ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থীর সাথে একত্রে কাজ করার অঙ্গিকার করে মনোনয়ন বঞ্চিত কমরেড সাঈদ বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। প্রার্থী কে হয়েছে সেটা কোন বড় কথা না। বড় কথা হলো নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থীর পক্ষে থেকে এই আসনটি পুনরুদ্ধার করে গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে চাই। আসন্ন যে নির্বাচন আমরা করতে যাচ্ছি সেটা আমাদের বাচা-মরার লড়াই। এই লড়াইয়ে যদি আমরা জয়লাভ করতে পারি তাহলেই কেবল আমাদের অস্তিত্ব থাকবে। আর যদি এ লড়াইয়ে আমরা জয়লাভ করতে না পারি সেক্ষেত্রে আমদের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যাওয়ার পর্যায়ে চলে যাবে বলে আমি মনে করি। সুতরাং সবকিছুই খেয়াল রাখতে হবে। কারন বিগত দশটি বছর যাবৎ আমরা বিভিন্নভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। সেই আন্দোলনের ফলস্বরুপ আমাদের আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই চেষ্টা করবে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে আবার অনেকেই উস্কানী দেয়ার চেষ্টা করবে। আমাদের অনেক নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আমরা মোটেও ভিত নই। কারাগারে যাওয়ার ভয় আমাদের কারোরই নেই। আগামী ৩০ তারিখ নির্ভয়ে সবাই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করবেন। গণতন্ত্র পুররুদ্ধারের জন্য ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাদের এই আসনের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করার জন্য জনসাধারনের নিকট আহবান জানান তিনি।

এ বিষয়ে দৈনিক সংবাদচর্চাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এস এম আকরাম বলেন, এই নির্বাচন আমাদের সকলের আন্দোলনের একটি অংশ। কেন্দ্র থেকে সবাইকে একত্রে কাজ করার জন্য নির্দেশ করা হয়েছ। সুতরাং পুরোনো দিনের সব কথা ভুলে গিয়ে ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করে বিএনপিকে জিতাতে হবে। প্রার্থী কে হয়েছেন সে প্রশ্ন এখন অবান্তর। প্রার্থী আবুল কালাম সাহেব কিংবা সাঈদ আহমেদ হতে পারতেন। আমার দল কিন্তু বিএনপি না, আমি নাগরিক ঐক্যেজোট থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছি। অংশীদারদের কিছু আসন ছেড়ে দেয়ার কথা ছিলো সে হিসেবেই হয়তো আমি মনোনিত হয়েছি। আমার সৌভাগ্যক্রমে এ আসনে আমি মনোনয়ন পেয়েছি।

সবাইকে একত্রে কাজ করার আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আসুন আমরা সব বিবেদ ভুলে গিয়ে আসন্ন নির্বচনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করি। এবং আমি আশাকরি সুষ্ঠ নির্বাচন হলে অবশ্যই আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো। কারন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশের মানুষ খুব ভালো করেই জানে। তারা আর এই স্বৈরশাসনের পক্ষে থাকবে না। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসবেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর আমার নির্বাচনী এলাকায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসবেন। তিনি এসে আমাদের সময় দিবেন এবং দিক নির্দেশনা মূলক কথা বলবেন। সেসময় জেলা, মহানগর ও বিএনপির অন্যান্য অংশীদার দলের সব নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। জনসাধারনের প্রতি আহবান রেখে তিনি বলেন, দেশে কী চলছে তা আমরা সবাই কমবেশী জানি। যদি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান, বর্তমান স্বৈরশাসকের অবসান করতে চান তাহলে আগামী ৩০ তারিখ অব্যশই ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ