আজ বুধবার, ১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যারা ঢাকায় আসতে চায় তাদের সরকারি চাকরি করার কোনো প্রয়োজন নেই।

শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা

সংবাদচর্চা ডেস্ক : বৃহস্পতিবার  প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে  স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বাজেটের অর্থ দ্বারা সংগৃহীত সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বিতরণ কার্যক্রমের  উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।এ সময় মফস্বলের সরকারি হাসপাতালে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেখানে না থেকে যদি তারা শুধু ঢাকায় আসতে চায় তবে সরকারি চাকরি করার কোনো প্রয়োজন নেই। চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঢাকায় এসে ব্যক্তিগতভাবে রোগী দেখতেও তাঁদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেডিকেল কলেজগুলো আমরা করে দিচ্ছি কিন্তু তার মানটা বজায় রাখতে হবে। যে কী চিকিৎসা হচ্ছে। রোগী মারা ডাক্তার হচ্ছে না রোগী বাঁচানোর ডাক্তার হচ্ছে এটা একটু ভালো করে দেখতে হবে।’

নিজের বক্তব্যে দ্বীপ ও হাওড় অঞ্চলের জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করাকে দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোড়গোড়ায় পৌছে দেওয়াই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।

আগের সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে চিকিৎসা পেলে সবাই নৌকায় ভোট দেবে, আমাদের (বিএনপি-জামায়াত) কেউ ভোট দেবে না- এই কথাটা বলে (কমিউনিটি ক্লিনিক) বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, এ রকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেউ, এটা চিন্তাও করা যায় না। কেবল এই একটা ব্যাপারে না, আরও বহু ব্যাপারে এই রকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বিএনপি-জামায়াত নিয়ে গেছে, যার জন্য আমাদের অনেক খেসারতও দিতে হয়েছে। এ কারণে পারমানেন্ট একটা সলিউশন মনে হয় এমনভাবে করে দেয়া, যাতে আর কেউ এটা বন্ধ করতে না পারে, সেভাবে এটা করা ভালো।

রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মতো সব বিভাগীয় শহরেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও জানান শেখ হাসিনা। মেডিকেল কলেজগুলোর পড়াশুনার মান কঠোরভাবে তদারকি করতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন তিনি।

সরকারি টাকা বরাদ্দের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়েও সচেতন প্রধানমন্ত্রী। এ কারণে অ্যাম্বুলেন্সের কোনো যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারে- এমন একটি উদ্যোগ চান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের একটা চাকা যদি নষ্ট হয়, সে চাকার জন্য সরকারি টাকার আবেদন করে আনতে আনতে চার চাকাই নষ্ট হয়ে যায়, অথবা অ্যাম্বুলেন্সটাই বসে যায়।

এই সমস্যার সমাধানটাও বাতলে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স তো কিছু কামাইও করে। অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগী আনলে তো সে কিছু ভাড়াও পায়। সেখানে আমার মনে হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কোনো একটা উদ্যোগ নেয়া দরকার, অথবা একটা ফান্ড করা দরকার যেখান থেকে যদি কখনও কিছু একটা নষ্ট হলে অথবা সামান্য একটু খারাপ হলে দ্রুত মেরামত করা যেতে পারে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে খরচ করবে, তারপর বিল দেবে, তারপর টাকাটা পাবে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে চিন্তা করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

দেশের চিকিৎসা সেবা উন্নত করতে বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেশে কাজ করার সুযোগ তৈরির পক্ষে প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদেরকে যদি সুযোগ দেয়া যায় বা তারা যদি এখানে এসে কিছুদিন কাজ করে যায় তাহলে আমাদের চিকিৎসকরা তাদের সঙ্গে কাজ করলে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবেন। তাহলে আমাদের রোগীদের আর বিদেশ যেতে হয় না, বিদেশের চিকিৎসাটা তারা এখানে বসেই পেতে পারে। সে জন্য অনেক ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

পরে বক্তব্য শেষে সাতটি অ্যাম্বুলেন্সের প্রতীকী চাবি আজ হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। জাপান থেকে আনা চিকিৎসা সেবার আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন ৫০০টি অ্যাম্বুলেন্স সরকারি হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করবে সরকার। এরই মধ্যে ৪৩৩ টি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে।

 

 

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ