আজ শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

র‌্যাবের অভিযানে ফতুল্লায় এক জঙ্গি আটক

র‌্যাবের অভিযানে ফতুল্লা

র‌্যাবের অভিযানে ফতুল্লা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশব্যাপি সিরিজ বোমা হামলা মামলার পলাতক আসামী মোঃ কেফায়েতুর রহমান ওরফে নোমান (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১। জঙ্গিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০ টায় ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‌্যাব।
সে ফতুল্লার সস্তাপুরের কোতায়ালের বাগ এলাকার মাওলানা মাহবুবুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে সে রাজশাহীর কাটাখালি বাখরাবাজ জামিয়া উসমানীয়া হোসাইনাবাদ মাদ্রাসায় হোসাইন আহমেদ আজমী (ছদ্মনাম) নামে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র‌্যাব-১১ এর সিনিয়র এ এসপি আলেপ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত নোমান ১৯৯৩ সালে কুতুব আইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ হতে ৫ম শ্রেণী , ২০০২-২০০৩ সালে জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম, দেওভোগ নারায়ণগঞ্জ হতে দাওরায়ে হাদিস পাশ করে এবং তার পাশাপাশি শাহ ফতুল্লা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা হতে দাখিল পাশ করে। ২০০৭ সাল হতে অদ্যাবদি পর্যন্ত রাজশাহীর কাটাখালি বাখরাবাজ জামিয়া উসমানীয়া হোসাইনাবাদ মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
র‌্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নোমান ২০০৫ সালে সিরিজ বোমা হামলা মামলার অন্যতম আসামী। সে ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বোমা-বিষ্ফোরনের ঘটনার সহিত জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে স্বীকার করেছে। ওই ঘটনায় সারা বাংলাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের আহ্বান শিরোনামে ২২টি ছাপানো লিফলেট বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়ে জেএমবির আত্মপ্রকাশ করে। ফতুল্লা থানার উল্লেখিত মামলা দায়েরের পর পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমানের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারকৃত ১১ জন ও পলাতক ৫ জন জেএমবি আসামীদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা থানার অভিযোগপত্র নং-৮৫০, তারিখ-২২/১০/০৬ইং ধারা-বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩, ৫ ও ৬ বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন।
উল্লেখিত গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের মধ্যে শায়েখ মাওলানা আঃ রহমান-জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা আমির ও প্রধান, আতাউর রহমান সানি-জেএমবির সামরিক কমান্ডার ও শুরা সদস্য, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই-জেএমবির আঞ্চলিক প্রধান ও অন্যতম শুরা সদস্য, যাদের অন্য মামলায় বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিচারে মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করা হয় এবং উক্ত মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে।
জিজ্ঞসাবাদে সে আরো জানায় তৎকালীন জেএমবির প্রধান শায়েখ মাওলানা আঃ রহমানের নির্দেশে তার অন্যান্য সহযোগীদের সাথে নিয়ে উক্ত বোমা হামলায় অংশগ্রহন করে। জেএমবির প্রধান শায়েখ মাওলানা আঃ রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি সহ গ্রেফতারকৃত ও পলাতক জেএমবির অন্যান্যদের সাথে কেফায়েতুর রহমান এর সরাসরি যোগাযোগ ছিল বলে জানা যায়। কেফায়েতুর রহমান এর জন্ম চট্টগ্রামের সন্দীপে হলেও মাত্র ৭ বছর বয়সে তার বাবার সাথে নারায়ণগঞ্জে আসে এবং ফতুল্লা থানার বর্ণিত ঠিকানায় বসবাস শুরু করে। তার বাবা নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদের ঈমাম ছিলেন। সারা দেশে এই সিরিজ বোমা হামলার পর ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা শুরু হলে কেফায়েতুর রহমান এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে ছদ্মবেশে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। অতঃপর ২০০৭ সালে নাম পরিবর্তন করে হোসাইন আহমেদ আজমী পরিচয়ে রাজশাহীর কাটাখালী থানা এলাকায় তার খালাত ভাইয়ের মাদ্রাসা জামিয়া উসমানিয়া হোসাইনাবাদ, বাখরাবাজে শিক্ষকতা শুরু করে। কেফায়েতুর রহমান আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়া নিজেকে আড়াল করার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করে ওই এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে বগুড়া এলাকায় বিবাহ করে স্ত্রীসহ উক্ত মাদ্রাসার পাশে একটি বাসায় বসবাস করতে থাকে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবস্থান নির্ণয় করে তাকে ফতুল্লা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানার বর্ণিত মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি রয়েছে। যার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-২১/০৬।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ