নিজস্ব প্রতিবেদক:
র্যাব ১১ অভিযান চালিয়ে ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক ভূয়া এমএলএম কোম্পানীর সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ২৩ জনকে আটক করেছে। সেই সাথে তাদের প্রতারনার শিকার ৩১ জনকে উদ্ধার ও বিপুল পরিমান অবৈধ মালামাল উদ্ধার করেছে।
রবিবার (৩০ এপ্রিল) র্যাব ১১ এর সহকারি পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
আটককৃতরা হলো- ভূয়া এমএলএম কোম্পানীর পরিচালক মোঃ জিয়াউর রহমান (৪৫), ডিস্ট্রিবিউটর মোঃ গোলাম কিবরিয়া (৩৯) ইনচার্জ মোঃ রাশেদুর রহমান@সুমন (৪০), মোঃ সুমন (১৯), মোঃ রবিন (১৭), আমিনুল ইসলাম@সোহেল (২৪), মোঃ মাহবুবুর রহমান (২৪), মোঃ রুহুল আমিন (২৫), মোহাইমিনুল ইসলাম (২৮), সজীব হোসেন (২৪), মোঃ ইমন মিয়া (১৮), মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৬), মোঃ শরীফুল ইসলাম (২৪), মোঃ আরিফুল ইসলাম (২৫), মোঃ নাঈম (২২), আবুল কালাম (৩২), মোঃ সাকিব (২৫), আমজাদ হোসেন (২০), মোঃ হরমুজ আলী (১৯), মোঃ শাহিন ইসলাম (২৪), দেলোয়ার হোসেন (২৫), নয়ন চন্দ্র রায় (২৫), মোঃ বিটু মিয়া (২৪)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, র্যাব জানায়, অভিযানকালে ভূয়া এমএলএম কোম্পানীর সু-সজ্জিত অফিস থেকে প্রতারণার শিকার ৩১ জন ভূক্তভোগীদের উদ্ধার করা হয়। এছাড়া উক্ত কোম্পানীর অফিস থেকে প্রতারণার কাজে ব্যভবহৃত ৩৭টি মোবাইল, ০৫টি কম্পিউটারের মনিটর, ০২টি সিপিইউ, ০২টি টেলিভিশন, ০১টি প্রিন্টার, ০১টি ল্যাপটপ, ০১টি ওয়াটার ফিল্টার, ০২টি স্পুন সেট, ০১টি ফিরনি সেট, ১০টি স্যূপ পিচ, ০২টি ডিনার সেট, ০৬টি ফুড পট পিচ, ০২টি হটপট সেট, ০৪টি ব্লাংক সাইন ষ্ট্যাম্প পেপার, ০১টি ভূয়া ট্রেড লাইসেন্স, নগদ-৩,৪৫,৭২৫/- টাকা ও বিপুল পরিমাণ ভূয়া ডকুমেন্ট উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, অতীতে বিভিন্ন এমএলএল কোম্পানী প্রতারণার মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগণের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এরই প্রেক্ষিতে সরকার পরবর্তীতে বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানীর কাযক্রম নিষিদ্ধ করেছে। তদুপরি বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানী নানা পন্থায় এখনো প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বেকার যুব সমাজকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারিত ও ভূক্তভোগী কয়েক জনের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং অনুসন্ধানে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতার ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর উত্তরা ১০নং সেক্টরের আবাসিক এলাকায় ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক ভূয়া এমএলএম কোম্পানীতে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারকচক্রের ২৩ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও জব্দকৃত নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, উক্ত ভূয়া এমএলএম কোম্পানী মাসিক ১৬ হাজার ও তদুর্ধ টাকা বেতনের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে ০৩টি ভিন্ন প্যাকেজে চাকুরী প্রত্যাশীদের নিকট থেকে যথাক্রমে ২৭ হাজার ১শত, ৩৭ হাজার ১শত ও ৪৭ হাজার ১শত টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে প্রশিক্ষনের নামে সপ্তাহ খানেক কালক্ষেপন করে প্রত্যেককে নতুন ০২ জন সদস্য সংগ্রহের শর্ত প্রদান করে। নতুন সদস্য সংগ্রহ করে দিলে সংগৃহীত টাকার সামান্য কমিশন প্রদান করে। নতুন সদস্য দিতে না পারলে কুট-কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে খালি ষ্ট্যাম্প ও আপোষনামায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে ভাড়াটিয়া লোকজন দ্বারা আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনও করে থাকে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।