আজ বুধবার, ১৩ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রূপগঞ্জে হেভিওয়েট নীলা ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া চম্পা, ছাড় দিতে নারাজ লাকী-রুমা

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

আসন্ন রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কে সামনে রেখে রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাপ শুরু হয়ে গেছে। এবার প্রথম দলীয় প্রতীকে প্রথম উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে রূপগঞ্জের প্রত্যেকটা পাড়া মহল্লায় প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখে গেছে উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে রূপগঞ্জে একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশ রয়েছে নবীন।

জানা গেছে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের ৪ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হেভিওয়েট প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা ১৯৯৩ সালে রূপগঞ্জ ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে প্রথম বারের মত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা। ২০১৪ সালে দ্বিতীয় বারের মত তিনি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নীলা ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন এলাকায়। তার নামে নেই কোন অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ ।

এদিকে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জি .শেখ সাইফুল ইসলামের স্ত্রী নাসরিন আক্তার চম্পা। তিনি বিরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ইঞ্জি .শেখ সাইফুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর আস্থাভাজন। তিনি গত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত নির্বাচনে ইঞ্জি.শেখ সাইফুল ইসলাম তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। জানা গেছে এবার তিনি প্রার্থী হবেন না । প্রার্থী হয়েছেন শেখ সাইফুল ইসলামের স্ত্রী । এবার শেখ সাইফুল ইসলাম তার স্ত্রী কে নিয়ে ঘুরে দাড়াতে মরিয়া।

অন্য দিকে নীলা- চম্পা কে ছাড় দিতে নারাজ কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা মেম্বার ও ৩৪নং পশ্চিম গাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি লাকী মনির। তিনি রূপসীর মেয়ে । লাকী মনির তার স্বামীর বাড়ি কায়েতপাড়া এবং বাবার বাড়ি রূপসী এলাকা থেকে ব্যাপক সমর্থন পেতে পারেন। আর মন্ত্রী সাহেবের গ্রামের মেয়ে হিসেবে নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন।

অপর দিকে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের শক্তিশালী সহযোগী সংগঠন মহিলা লীগ । সদ্য জাতীয় সংসদনির্বাচনে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক কে বিজয়ী করতে মহিলা লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি হাছিনা গাজী তারাব পৌর সভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক শীলা রানী পাল নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সে দিক বিবেচনায় দাউদপুর ইউনিয়ন মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী জান্নাত রুমা এগিয়ে থাকবেন। তিনি বর্তমানে দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে রূপগঞ্জ মহিলা লীগের সভাপতি মেয়র হাছিনা গাজী ও সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদের সদস্য শীলা রানী পালের একক সমর্থন পেলে বেকায়দায় পড়তে পারে বাকী তিন জন।

এবারের উপজেলা নির্বাচনে রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রত্যাশী প্রত্যেক প্রার্থীই অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং কর্মীবান্ধব। তাদের মধ্যে নেই কোন দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ। প্রত্যেক প্রার্থীই কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। সবাই দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে, রূপগঞ্জে নারী নেতৃত্বের বিপ্লব ঘটেছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী চূড়ান্ত করতে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে।