আজ সোমবার, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রিক্সা আর হকারের প্রতিবন্ধকতায় ফুটপাতের পথচারীদের ভোগান্তি চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক

একজন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবি তার নাম আফরোজা বেগম। তিনি সপ্তাহের ছয় দিন অফিস করেন শহরের চাষাড়া এলাকায়। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে আসেন। তখন রাস্তা ও ফুটপাত ফাঁকা থাকে। সন্ধ্যায় কাজ শেষে ক্লান্ত মনে যখন বাড়ি ফেরার উদ্দেশে অফিস থেকে বের হন তখন শহরের চার পাশের রাস্তাগুলোসহ প্রধান সড়কের উপর বিভিন্ন ধরনের যানবাহনসহ রিক্সার যন্ত্রণায় ও ফুটপাতের উপর দোকানগুলো থাকায় মানুষের ভিড়ে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে বড় কষ্ট হয়। তিনি বলেন, ইজ্জত সম্মান নিয়ে চাষাড়া এলাকার ফুটপাত দিয়ে চলাচল করা বড় দায়। কারন হিসেবে বলছেন আফরোজা বেগম, সড়কের উভয়পাশে রিক্সা, লেগুনা, অটোরিক্সা, ব্যাটারিচালিত রিক্সা, সিএনজি গাড়িগুলো সড়কের উপর ষ্টপিজ করে রাখায় ও ফুটপাতের উভয় পাশে ফলের দোকান, চা’য়ের দোকান, কাপড়ের দোকান, পান সিগারেটের দোকানগুলো থাকার কারনে ফুটপাত দিয়ে ইজ্জত বাঁচিয়ে চলাচল করা বড় কষ্টসাধ্য। তিনি অভিযোগ তোলেন, জেলা শহরটাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিচরন থাকলেও ফুটপাতে সাধারনের নির্বিঘেœ চলাচলের ব্যবস্থা নিয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না রহস্যজনক কারনে। তিনি থাকেন নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ পাড়ার জামতলায়। সারাদিন অফিস শেষে সন্ধ্যা হলে ঘরে ফেরেন সবাই। শহর এলাকার যতগুলো সড়ক ও হাঁটাচলার ফুটপাত রয়েছে তা দিয়ে পথচারীদের হাঁটাচলার নিরাপত্তা নেই বললেই চলে! আফরোজা বেগমের সাথে এসব কথা বলতে বলতে যাওয়ার সময় পিছন থেকে একজন কলেজ পড়–য়া ছেলে বলছেন, ভাই কি হবে এসব জেনে ও লিখে? যারা এর সমাধান করবেন তারাই তো এসব ফুটপাত ও সড়কের উপর দখলদারদের দিয়ে দখল করিয়ে রেখেছেন। প্রশাসনের লোকজন যদি রিক্সা, লেগুণা, সিএনজি ষ্টেশন থেকে টাকা না নিত তা হলে তারাই সবার চলাচলের সমস্যার কথা চিন্তা করে এসব যন্ত্রণা থেকে সর্বসাধারণকে মুক্ত করতেন। গতকাল রোববার এ প্রতিবেদক চাষাড়ার শহীদ মিনারের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার পর সাধারণ মানুষের র্দূভোগ দেখছিলেন। ঠিক এমন সময় চাষাড়া শহীদ মিনার এলাকার ফুটপাত দিয়ে হাঁটছেন ষাটোর্ধ আলেয়া বেগম তার নাতি শফিকুলের হাত ধরে দেখে তাদের পিছনে পিছনে হাঁটছেন। হাঁটতে হাঁটতে তাদের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। আলেয়া বেগমের হাত নাতির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে লোকজনের চাপে। প্রতিবেদক এ দৃশ্য দেখে এগিয়ে গিয়ে তাদের সাথে ২/৪ মিনিট কথা বলেন।

তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, তারা মুন্সিগঞ্জ থেকে এসেছেন। সিএনজি দিয়ে। শহীদ মিনারের পূর্ব পাশে নেমেছেন। যাবেন মেয়ের বাড়িতে জালকুড়ি। ফুটপাত দিয়ে কোন রকম পার হলেও সড়ক পার হতে একবার সামনে আবার পিছনের দিকে যাচ্ছেন। রিক্সাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চার দিক থেকে আসছে। ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও নিয়ন্ত্রণ করার দৃশ্য নিয়ে তেমন প্রদক্ষেপ দেখা যায় নি।

বঙ্গবন্ধু সড়কের পুরান কোর্ট এলাকা থেকে টানবাজার, ২নং রেলগেট, সনাতন পাল লেন হতে লঞ্চ ঘাট, চাষাড়া হতে নিতাইগঞ্জ, চাষাড়া হতে গলাচিপা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের ফুটপাত ও সড়কগুলোতে এমনভাবে গাড়ি রাখা হয়ে থাকে পথচারিরা চলাচল করতে অসহনীয় যন্ত্রণাসহ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিত্য চলাচল করলেও জনপ্রতিনিধিরা ও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পথচারীদের। একাধিক পথচারীরা অভিযোগ তোলেন, স্থানীয় লোকজনের চাঁদাবাজির কারনে ফুটপাত দখল হয়েছে। আর পুলিশের চাঁদাবাজির কারণে গাড়িগুলো সড়কের উভয় পাশে দখল করে ষ্টপিজ করে রেখেছে। তবে স্থানীয়রা এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় না পেয়ে এমন পরিস্থিতি মেনে চলছেন। কলেজ পড়–য়া আমেনা ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরার সময় ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারছেন না এমন অভিযোগ তুলেছেন প্রতিবেদকের কাছে। তবে তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন জানান প্রতিবেদকের মাধ্যমে। সংশ্লিষ্টদের কাছে, শহর এলাকায় কতগুলো রিক্সা, অটোরিক্সা, লেগুণাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন কতগুলো রয়েছে তার হিসাব নেই। না থাকলেও তার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিবেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। স্থানীয়রাসহ পথচারীরা দাবি করেন, প্রশাসনের ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সর্বসাধারণের সুবিধার্থে ফুটপাত ও সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী করে তোলা হোক। আমাদের চলাচলের নিরাপত্তা দেন ? আহবান করেন অনেকেই।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ