# সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদের না- বাদল
# কার আওতায় তা এই মূহুর্তে বলতে পারছি না- সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী
# আমি নতুন এসেছি- ইঞ্জিনিয়ার আনিসুজ্জামান
সংবাদচর্চা রিপোর্ট
এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কেউ খালি মুখ যায় না। বুঝলাম না চাচাঁ! যে যায় গালি দিয়ে যায়। কথোপকথন হচ্ছিল দৈনিক সংবাদচর্চার প্রতিবেদক ও কাশীপুর এলাকার এক মুরব্বীর সাথে। নাম না প্রকাশ করা শর্তে ঠিক এভাবেই দুঃখ ভরাক্রান্ত মনে ক্ষোভ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়া বাটা কোম্পানির মাঠ থেকে শুরু করে হাটখোলা তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কের কথা বলছিলেন ওই মুরব্বী। জানা যায়, প্রায় দুই বৎসর যাবৎ ওই রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয় না। কিছুদিন আগে রাস্তার কাজ শুরু হলেও মাঝ পর্যন্ত এসে শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কী কারণে তা এখনো জানা যায়নি।
নাম না প্রকাশ করা শর্তে ওই মুরব্বী আরও বলেন, রাস্তাটির দিকে তাকানোঁ যায় না। কারণ পুরো রাস্তাটিই ভাঙ্গা। বৃষ্টি ছাড়াই এই রাস্তায় হাটুঁ পানি জমে থাকে। আমরা সাধারণ মানুষেরা কেউ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারি না। চলাচল করতে অটোরিক্সা ব্যবহার করতে হয়। সেই গাড়ীতেও বসে থাকা যায়না। বসলে কোমড় ঠিক থাকে না। কোন গর্ভবতী মহিলাকে যদি এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে এখানেই বাচ্চা প্রসব করে ফেলবে। এই এলাকার চেয়ারম্যান এম. সাইফুল্লাহ বাদল। উনি বেশী দিন মনে হয় বাচঁবো না। তাইলে অন্য কারোরে দায়িত্ব দিয়া যাক। আমাদের এই রাস্তার কাজ দরকার। এই রাস্তা দিয়া যাওয়ার সময় কোন মানুষ খালি মুখে যায় না। সবাই যাওয়ার আর আসার সময় একটা করে গালি দিয়া যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাটা কোম্পানির মাঠ থেকে শুরু করে হাটখোলা তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কটির খুবই নাজেহাল অবস্থা। রাস্তাটির সংস্কার কাজ অর্ধেক হওয়ার কারণ জানতে ওই এলাকায় গেলে বেরিয়ে আসে ভিন্ন তথ্য। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ওই সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদের। অথচ কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান এম. সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, বাটা কোম্পানির মাঠের সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদের না। হাটখোলা তিন রাস্তার মোড়ের সড়কটির কাজ চলছে, খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে।
সাইফুল্লাহ বাদলের এমন বক্তব্যের পর শুরু হয় জটলা। তাহলে রাস্তাটি কার আওতায়? সেই জটলার সমাধান বের করতেই সরেজমিনে আবারও যাওয়া হয় ওই এলকায়। কিন্তু রাস্তার আশেপাশে কোন জায়গায় রাস্তা সংস্কারের যন্ত্রপাতি কিংবা রাস্তা সংস্কার করতে দেখা যায়নি। তাছাড়া এলকাবাসীর কাছে সাইফুল্লাহ বাদলের বক্তব্য অনুযায়ী রাস্তার কাজ নাকি করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, কীসের রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। আজকে দুই বছর ধরে এই রাস্তা এমনিভাবেই পরে আছে! দুই-তিন বছর যাবৎ এই রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয় না।
রাস্তাটি কার আওতায় তা বের করতে দৈনিক সংবাদচর্চা অফিস থেকে ফোন করা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিসের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলমের কাছে। তিনি বলেন, রাস্তাটি ঠিক কার আওতায় তা এই মূহুর্তে বলতে পারছি না। তবে এ বিষয়ে সদর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আনিসুজ্জামান বলতে পারবে।
তার কথা মতো ফোন করা হয় সদর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আনিসুজ্জামানকে। তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি এইখানে অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জে। যার ফলে জায়গাটির স্থান বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। আমি তদন্ত করে জানিয়ে দিবো।
এলাকাবাসী জানায়, ওই রাস্তা যদি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন তথা মেয়র আইভীর আওতায় থাকতো তাহলে অনেক আগেই এই রাস্তার কাজ শেষ হয়ে যেতো। কারণ মেয়র আইভী নগরীর চেহারাই পাল্টে দিয়েছে। তার আওতায় থাকা প্রায় সব জায়গার কাজ তিনি করেছেন। আর যেগুলো বাকী আছে তাও খুব শীঘ্রই শেষ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় থাকার কারণেই এই রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ হচ্ছে না। নাসিকের আওতায় হলে তো ভালোই হতো।
উল্লেখ্য, বাটা কোম্পানির মাঠ থেকে শুরু করে হাটখোলা তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কটির সংবাদ আপাতত এই পর্যন্তই। রাস্তাটির কাজ কেনো করা হচ্ছে না সেই সাথে সড়কটি কার আওতায়? তা বের করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। আর তাই পরবর্তী সংবাদ জানতে ও পড়তে চোখ রাখুন নারায়ণগঞ্জে বহুল প্রচারিত দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকায়।