আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন কি বাস্তবায়ন হয়েছে?

মোঃ আব্দুল্লাহ খান মুন্না ( নির্বাহী সম্পাদক ) ঃ সবাই জানি প্রায় নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এিশ লাখ শহীদ দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্টিত হয়েছে । ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা কি উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো?কার ডাকে সারা দিয়ে সমগ্র বাঙালি একএি হয়েছিলো? ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট ভারত পাকিস্তান ভাগ হলে পাকিস্তান আবার দুটি অংশে বিভক্ত হয় একটি পূর্ব পাকিস্তান অপরটি পশ্চিম পাকিস্তান।

পশ্চিম পাকিস্তান পূর্বপাকিস্তানের ভাষার উপর সর্ব প্রথম আঘাত করে।প্রায় ৫৬% বাঙালির মুখের ভাষা বাংলা সে ভাষাকে মাএ ৭%উদ্দু ভাষার সামরিক জান্তারা মেনে নিতে পারে নাই ,যার ফলে আমাদের ভাষা আন্দোলন।সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রোধ করতে বাঙালিরা সব সময় আন্দোলন সংগ্রাম করে আমাদের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্টা করেছেন।

একনজরে বাংলাদেশের আন্দোলনের ঘটনা বহুল সাল সমূহ ,ভাষা ভাষা আন্দোলন ১৯৫২,যুক্তফ্রন্টের বিজয় ১৯৫৪,সামরিক আইন জারি ১৯৫৮,বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ১৯৬৬ ,আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ১৯৬৮,গণঅভ্যুত্থান ১৯৬৯,১৯৭০ সালের নির্বাচনে আ,লীগের বিপুল জয়লাভ,১৯৭১ এর ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ,অতপর স্বাধীনতাযুদ্ধ ।

কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ বিজয়ের ৪৬ বছরে এসে দেখতে পাচ্ছি যে বিদেশে টিভি চ্যালেন এবং তাদের সাংস্কৃতির আগ্রাসনের ফলে বাঙালি সংস্কৃতি বিলুপ্তির পথে। আমাদের মূল্য বোধের পরিবর্তন করতে হবে এবং বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষা করতে হবে।বিদেশী সংস্কৃতির ফলে আমাদের যুব সমাজ আজ ধ্বংসের পথে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছিলো একটি বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা প্রতিষ্টার জন্য। পাকিস্তানের শোষণ বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পাবার জন্যে। তখন সমগ্রজাতি একএিত হয়েছিলো বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটেছিলো। পাকিস্তানের সামরিক জান্তারা এ দেশের ভাষা,সাংস্কৃতি,অর্থনীতি,গণতন্ত্র, প্রশাসন, ধর্মীয় ,এ সকল বিষয়ে শোষণ করেছে। এ থেকে মুক্তি পাবার জন্য বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের সাথে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে এ দেশ স্বাধীন করেছে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় দেশ স্বাধীন হবার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত কিছু উলটপালট করা হয়।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়।হানাদার বাহিনী যেভাবে এদেশের নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য এদেশের বুদ্ধিজীবিদের গুমের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর হত্যা করেছিলো ।

যার কিছুটা সম্প্রতি সময়ে দেখা যাচ্ছে গুম খুনের কিছু চিত্র। বিজ্ঞানমনস্ক লেখকদের হত্যা করা হচ্ছে।মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারছে না।দুনীতি বহুগুনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।চিকিৎসা বাণিজ্য, চাকরি বাণিজ্য,শিক্ষা বাণিজ্য,চাঁদাবাজি,মাদক ব্যবসা,মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট বাণিজ্য ,শিক্ষা বৈষম্য,ধনী গরীবের ব্যাপক বৈষম্য,পুজিপতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে,রাস্তাঘাটে মুক্তিযোদ্ধারা অপমানিত হচ্ছে এতে বাঙালি জাতি ধ্বংসের মুখে।

দেশের গণতন্ত্র কাগজে কলমে বাস্তবে নেই।পরাজিত শক্তির ক্ষমতা দখল, তাদের কে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্টা একজন মুক্তিযোদ্ধা কেন করলেন? জাতির কাছে এটা আমার প্রশ্ন।তার বিচার হওয়া উচিত কি? কেন ঐক্যের অভাব? ৭২এর সংবিধানে ছিলো একটি শিক্ষানীতির কথা কিন্তু আজ দেশে প্রতিষ্টানিক কোন শিক্ষানীতি নেই।বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন ভাবে শিক্ষা নীতির পরির্তন করছে।দেশে চার ধরণের শিক্ষাব্যবস্থা বিরাজমান ।মাদ্রাসায় এক ধরণের শিক্ষা ,ক্যাডেট কলেজে একধরণের, সাধারণ শিক্ষা একধরণের, ।একটি কারখানায় থেকে আজ চার ধরণেন পণ্য উৎপাদন হচ্ছে তাহলে ঐক্য কোথায় থেকে আসবে ,বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায় থেকে বিসিএস পর্যন্ত সকল ধরণের প্রশ্নপত্র ফাস হচ্ছে , আমাদের মেরুদন্ডহীন জাতিতে পরিণত করছে ।

আমাদের রাজনীতি আজ বিদেশ নির্ভরশীলতা হয়ে পড়ছে।নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করি না।অপরাধিরা আজ জনপ্রতিনিধি হচ্ছে, গরীবের বা এতিমের নামে টাকা লুটপাট হচ্ছে। এ দেশের বেশির ভাগ এমপি মন্ত্রীর ছেলে মেয়ে বিদেশে লেখা পড়া করান ফলে দেশীয় শিক্ষার প্রতি তাদের খুব একটা নজর থাকে না। এমপি, মন্ত্রী হলেই তাদের সম্পদের পরিমান বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।

আন্দোলনের নামে রাস্তায় অগ্নিসংযোগ সহ নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন হয়রানী মূলক মামলা দিয়ে নির্বাচন থেকে বিরত রাখছে। বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র প্রতিষ্টার জন্য যে আন্দোলন সংগ্রাম করে স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলো। সেই গণতন্ত্র আজ বাংলাদেশে হুমকির মুখে। দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধানদের অনুরোধ করব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন মাদক ব্যবসায়ী, লুটপাটকারি,দেহ ব্যবসায়ী,যুদ্ধাপরাধীকে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন না দেওয়া হয়।

জাতীয় সংসদ লাখো শহীদের রক্তের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত। নির্বাচন আসলে আমাদের দেশে বিভিন্ন ছোট দলগুলোর জোটের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। নির্বাচনের পরে সে জোটের আর গুরুত্ব থাকে না। প্রশাসনে ব্যাপক অনিয়ম এবং প্রশাসনের কর্মকতাদের হত্যা করা হচ্ছে। শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছে না।বেকার সমস্যা আজ চরমে। এ ভাবে দেশ চলতে থাকলে আমাদের নতুন প্রজন্মের জীবন ধ্বংস অনিবার্য হয়ে দ্বারাবে।

বিজয়ের ৪৬তম দিবসে এমন একটি দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি যে বিশ্বের সৎ ৩য় রাষ্ট্রপ্রধান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ।আবার বিশ্বের ৩য় দুর্নীতিবাজ বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার। তাই আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নবাস্তবায়ন করতে বঙ্গবন্ধুর সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মান করতে হলে সবাইকে ঐক্যবন্ধভাবে দুর্নীতি পরিহার করে বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করলে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নবাস্তবায়ন হবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ